হাওর বার্তা ডেস্কঃ দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ফসলের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। রোপা আমন ধানসহ মৌসুমি বিভিন্ন সবজির পানির নিচে এখনো তলিয়ে আছে। এ নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা।
ইতোমধ্যে বন্যা কবলিত এলাকার বিনষ্ট ফসলি জমি সরজমিনে পরিদর্শন এবং এ সময় করণীয় বিষয় নিয়ে কৃষকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ বারির প্রতিনিধি দল।
বন্যার পানি উঁচু জায়গা আর ঘর-বাড়ি থেকে সরে গেলেও এখনো চিরিরবন্দরে অনেক ফসলি জমি বন্যার পানিতে তলিয়ে আছে। এবাররের স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার চিরিরবন্দরে অন্তত সাড়ে ৯ হাজার হেক্টর ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এর মধ্যে কয়েক’শ একর জমি বন্যায় বিলীন হয়ে গেছে। এ তথ্য উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের। বন্যায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে চিরিরবন্দরের কৃষকরা।
তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের কৃষক জিয়াউর রহমান জানান, ‘এবারের বন্যা হামাক পাগল করি দিছে। নষ্ট করি ফেলাইছে, তামান ফসল। আমার এখন কি হবি আল্লাহ জানে।
সাইতাড়া এলাকার কৃষক তমিজ তিনি বলেন, ‘হামরা ৪ বিঘা জমিত ধান লাগাইছোনো তামান এখন শেষ। এদিকে চিরিরবন্দর উপজেলার বন্যা কবলিত এলাকায় বিনষ্ট ফসলি জমি পরিদর্শন করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ বারি’র প্রতিনিধি দল।
এ সময় ফসল নিয়ে করণীয় বিষয় নিয়ে তারা কৃষকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দেন। প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. গোলাম মারুফ, দিনাজপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক মো. জুলফিকার হায়দার এবং জেলার উপপরিচালক মো. গোলাম মোস্তাফা। প্রতিনিধি দল বলেন, ভেসে ওঠা ধানগুলো পানি দিয়ে ধুয়ে দিয়ে ভালো ভাবে পরিচর্যা করলে তা বেঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এছাড়া যে সব ধান বিনষ্ট হয়েছে তা এখনো ৩০ ভাদ্র পর্যন্ত ধান লাগানোর সময় আছে। এ সময় ব্রি-ধান-২২, ব্রি-ধান-৩৪, কাঠারি ভোগ এবং স্থানীয় জাতের ধান এ মুহূর্তে লাগানো সম্ভব। বীজতলা তৈরি করে ১৫/২০ দিনের মধ্যে তা লাগাতে হবে। এতে কৃষক তার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন। উপজেলা কৃষি অফিসার ও কৃষিবিদ মো. মাহমুদুল হাসান জানান, বন্যার পানিতে উপজেলার অন্তত ৭ হাজার ১২১ হেক্টর জমির আমনক্ষেত এবং ২০০ হেক্টর জমির বীজতলা এবং ৫ হেক্টর জমির সবজিক্ষেত ক্ষতির শিকার হয়েছে।