হাওর বার্তা ডেস্কঃ গত কয়েক দিনের টানা ভারী বর্ষণ ও স্থায়ী জলাবদ্ধতায় সিরাজগঞ্জে রোপা-আমন ধান চাষ হুমকির মুখে রয়েছে। যমুনা নদী থেকে প্রবল বেগে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করার কারণে চাষযোগ্য ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। ফলে বিভিন্ন ইউনিয়নের অধিকাংশ জমিতে কৃষকরা ধান লাগাতে পারেননি।
অধিক বৃষ্টিপাত ও বন্যায় জমিতে জলাবদ্ধতার কারণে চলতি ভরা মৌসুমে কৃষকরা ধান লাগাতে না পারায় সিরাজগঞ্জের কাজীপুরে প্রায় ৩’শত হেক্টর জমি অনাবাদি রয়ে গেছে।
এই জমিগুলোতে ইরি-বোরো মৌসুম ছাড়াও রোপা আমনসহ তিন ফসলি আবাদ করা যেত। এখন জলাবদ্ধতার কারণে জমিগুলোতে ইরি বোরো মৌসুম ছাড়া আর কোনো আবাদ করা যাচ্ছে না বলে জানালেন ওই এলাকার কৃষকরা। এর ফলে খাদ্যে উদ্বৃত্ত কাজীপুর উপজেলা এখন খাদ্যসঙ্কটে পরিণত হতে পারে।
এদিকে যমুনা নদীর পূর্ব-পশ্চিমে বিভক্ত উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের ৬টি যমুনার পূর্বে অবস্থিত।
প্রতি বছরই বন্যার ফলে নতুন নতুন এলাকা জলাবদ্ধতা হয়ে পড়ছে। আর পশ্চিমের ৬টি ইউনিয়নের বৃষ্টির পানি নিষ্কাশিত হতে না পারায় দুই অঞ্চলই সমান তালে চাষাবাদে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
জানা যায়, ১৯৮৮ সালের ভয়াবহ বন্যায় কাজীপুর এলাকার মেঘাই ও শুভগাছা ইউনিয়নে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে যায়। পরে পার্শ্ববর্তী রতনকান্দি ইউনিয়নের রতনকান্দি হাটের সামনে দিয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মিত হয়।
এতে ওই এলাকার পানি নিষ্কাশনের অন্যতম বানিয়াজান খালটির মুখ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে উজান থেকে নেমে আসা বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে ১৯৯৪ সালে আবারো বন্যায় গান্ধাইল ইউনিয়নের কাচিহারা হয়ে একই ইউনিয়নের পশ্চিম বেতগাড়ী দিয়ে প্রাকৃতিকভাবে আরেকটি খালের সৃষ্টি হয়।
যার প্রবাহ ইছামতি নদীতে পড়েছে। কয়েক বছরে সেই খালটির মেরারপাড়া নামক স্থানে মাটি ভরাট করে বসতবাড়ি নির্মিত হওয়ায় এই এলাকার পানি নিষ্কাশনের পথ স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যায়।
মাথাইলচাপর গ্রামের কৃষক লাল চাঁন মিয়া জানান, আমার পাঁচ বিঘা জমির মধ্যে এখনো দুই বিঘা জমিতে পানি আছে। পানি বাড়ানোর কোনো রাস্তা না থাকায় সেখানে কোনো চাষ করতে পারছি না।
কাজীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মামুনুর রহমান বলেন, চলতি বছর বন্যায় ৩ হাজার ৭৭২ হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে। যা টাকার অংকে প্রায় ১২ কোটি।