হাওর বার্তা ডেস্কঃ পদ্মার উপর ক্রমশ সেতুর ভিত মাথা উঁচু করতে শুরু করেছে। ৩৭ নম্বর পিলারের খুঁটি উঠেছে। খুঁটির তিন ধাপের কংক্রিটিংয়ের এক ধাপ সম্পন্ন হয়ে গেছে। আর ৩৮ নম্বর পিলারের খুঁটি প্রথম ধাপের কংক্রিটিং শুরু হয়েছে শনিবার। ৩৯ নম্বর পিলারে খুঁটি ওঠার জন্য বেইজ ঢালাইয়ের কাজ চলছে। এই পিলারের বেইজের এক লেয়ারের কংক্রিটিং হয়েছে।
আরেক লেয়ারের কংক্রিটিং হবে এক সপ্তাহের মধ্যে। এভাবেই দৃশ্যমান হতে যাচ্ছে পদ্মা সেতুর পিলারগুলো। এই পিলারের উপর সুপার স্ট্রাকচার (স্প্যান) বসানোর জন্য সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। খুঁটি উঠে গেলেই বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ক্ষমতার ভাসমান ক্রেন (৩৬শ’ টন ক্ষমতার) স্প্যান এনে বসিয়ে দেবে পিলারের ওপরে।
এ দিকে মূল সেতুর ৮৩টি পাইল এ পর্যন্ত স্থাপন হয়েছে। ২৪শ’ কিলোজুলের প্রথম হ্যামারটিই এখনো একাই পাইল ড্রাইভ করে চলেছে। মাওয়া প্রান্তের ১৪ নম্বর পিলারের পাইল বসিয়ে আবার এখন এসেছে ৪১ নম্বরে। এই পিলারের একটি নতুন পাইল বসানো এবং আগে বসিয়ে রাখা ৪টি পাইলে বাকী অংশের কাজ করছে। এই হ্যামারটির সাথে আরো দুটি হ্যামার (২ হাজার কিলোজুল এবং ৩ হাজার কিলোজুল ক্ষমতা) আসলেও সঙ্গ দিতে পারেনি। পড়ে আছে অচল হয়ে। তাই পাইল স্থাপনে যথাযথ গতি আসছে না। তাই অচল হ্যামারগুলো সচলের চেষ্টার পাশাপাশি নতুন করে হ্যামার আনা হচ্ছে।
সাড়ে ১৯শ’ কিলোজুল ক্ষমতার জার্মান হ্যামারটি ইতোমধ্যেই বাংলাদেশে পৌঁছে গেছে। এটি ৭ আগস্ট মংলায় পৌঁছায়। পরে মংলা থেকে মাওয়ায় আসছে বার্জে করে। শনিবার এই রিপোর্ট লেখার সময় হ্যামার বহনকারী বার্জটি চাঁদপুরের কাছাকাছি ছিল। বুধবার সকালে মংলা থেকে রওনা হওয়া হ্যামারবাহী এই বার্জ ১৩ আগস্ট মাওয়ায় পৌঁছবে। এরপর ২০ আগস্ট থেকে কাজ শুরু করার কথা রয়েছে।
এ দিকে মাওয়া প্রান্তে ভায়াডাক্টের (সংযোগ সেতু) কাজ শুরু হয়নি। ১ আগস্ট সিডিউল চূড়ান্ত করা হলেও যন্ত্রপাতি না পৌঁছানোর কারণে তা পিছিয়ে দিতে হয়েছে ১৫ আগস্ট। কিন্তু এই দিনও শুরু করা যাচ্ছে না। কাস্টমস্ জটিলতার কারণে এই কাজের ডিলিং রিলিং রিগের কিছু পার্স এখনো মংলায় রয়ে গেছে। এই কাজে যন্ত্রপাতি ছিল ৬টি কন্টেনারে। এর মধ্যে ৪টি কন্টেইনার খালাস হয়েছে। বাকী ২টি কন্টেনার এখনো মাওয়ায় পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। তাই সেতু কর্তৃপক্ষ মংলা পরিস্থিতি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। বাকী দুটি কন্টেনার দ্রুত মাওয়ায় পৌঁছাতে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বলে দায়িত্বশীল প্রকৌশলী ও কর্মকর্তাগণ জানিয়েছেন। তবে জাজিরা প্রান্তের সংযোগ সেতুর কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। এই ভয়াডাক্টের ১৯৬টি পাইলের মধ্যে এ পর্যন্ত ১৫০টি পাইলই বসে গেছে।
চীন থেকে সমুদ্রপথে রওনা হওয়া ১০ নম্বর স্প্যান শিগগিরই মাওয়ায় পৌঁছবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। এ দিকে আগামী সেপ্টেম্বর মাস পদ্মা সেতুর জন্য নানা কারণেই গুরুত্বপূর্ণ। এই মাসে স্প্যান বসানোর সম্ভাবনা ছাড়াও আরো কিছু সফলতা আসছে বলে দায়িত্বশীলরা জানান। এই মাসেই প্রবল চ্যালেঞ্জে থাকা বাকী ১৪টি পিলারের ডিজাইন চূড়ান্ত করা হচ্ছে। ১৪ ও ১৫ সেপ্টেম্বর বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সভা রয়েছে।