বঙ্গবন্ধুর ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলের উপরের অংশ ছিল না

হাওর বার্তা ডেস্কঃ  ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবার হত্যা করা হয়। ভয়াবহ সেই দিনটির কথা উঠে এসেছে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় সাক্ষীদের জবানবন্দিতে। জবানবন্দি থেকে পাওয়া যায় সেদিনের ভয়াবহতার চিত্র। জানা যায় ঠিক কী ঘটেছিল সেদিন ৩২ নম্বরের বাড়িটির ভেতরে-বাইরে। সাক্ষীদের জবানবন্দির ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন।

প্রসিকিউশনের ৩০ নং সাক্ষী এএসপি শেখ আবদুর রহমান আদালতকে জানান, সাক্ষ্য দেওয়ার সময় সিনিয়র এএসপি হিসেবে ঢাকায় সিআইডিতে ছিলেন তিনি। ঘটনার সময় গোপালগঞ্জের সিআই পদে কর্মরত ছিলেন। ১৫ই আগস্ট সকালে রেডিওতে মেজর ডালিমের কণ্ঠে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করার খবরটি শোনেন তিনি।

পরদিন ১৬ই আগস্ট সকাল ৮টার দিকে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার টেলিফোনে জানান যে, বঙ্গবন্ধুর লাশ গোপালগঞ্জে আসছে। টুঙ্গিপাড়ায় লাশ দাফনের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেন। নির্দেশ অনুসারে বঙ্গবন্ধুর বাবা-মায়ের কবরের পাশে তার লাশ দাফনের ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়ে এসডিপি ও নুরুল আলম, তিনি এবং ল’ইয়ার ম্যাজিস্ট্রেট আবুল কাদের বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছে হেলিফোর্ড ঠিকঠাক করে। এমন সময় চারদিক থেকে লোকজন এসে হেলিফোর্ড ঘিরে ফেলে। বেলা ২টার দিকে হেলিকপ্টার আসে। সঙ্গে সঙ্গে সশস্ত্র অবস্থায় ১৫/১৬ জন আর্মি হেলিকপ্টার থেকে নেমে চারদিকে অবস্থান নেয়।

আবদুল হাই শেখ, সোহরাব মাস্টার, আকবর গাজী, নূরুল হক, আবদুল মান্নানসহ সিপাহীরা মিলে হেলিক্টার থেকে কফিন নামিয়ে বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে দাফনের জায়গায় নিয়ে যায়। তারা কফিনের উপরের ডালা খুলে বঙ্গবন্ধুর বুকসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গুলির চিহ্ন দেখে। ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলীর উপরের অংশ ছিল না। দুই পায়ের গোড়ালির উপরে রগ কাটা ছিল।

শেখ আবদুর রহমান এরপর জানান, এই অবস্থাতেই মেজররা লাশ দাফন করার নির্দেশ দিলে তিনি বলেন, মুসলমানের লাশ গোসল, জানাজা, কাফন ইত্যাদি ছাড়া দাফন করা ঠিক হবে না। একথা শুনে তারা কিছুটা নমনীয় হয়ে এসব কাজ করার জন্য ১০ মিনিট সময় দেয়। রজব শেখ ও আবদুল হাই শেখসহ তারা দৌড়ে রেডক্রস হাসপাতাল থেকে তিনটা সাদা শাড়ি, ২টা সাবান নিয়ে এসে মসজিদের ইমাম হালিমকে ডেকে আনে। তারপর নূরুল হক, ইমামউদ্দিন গাজী, আবদুল মান্নান, আরো অনেকে ইমাম সাহেবের পরামর্শ মতো বঙ্গবন্ধুকে গোসল করিয়ে কাফন পরায়।

জানাজায় দাঁড়ালে চারদিক থেকে লোকজন আসার চেষ্টা করে। কিন্তু আর্মিদের নির্দেশে ঐ সব লোককে আসতে দেওয়া হয় না। গোসল করার আগে তিনি সুরতহাল করানোরও চেষ্টা করেন। কিন্তু আর্মির ঐ দুইজন অফিসার বাধা দেওয়ার কারণে তা আর করতে পারেননি।

তারপর তারা ২০/২৫ জন লোক জানাজা পড়ে বঙ্গবন্ধুকে দাফন করেন। তার পরনে একটি সাদা পাঞ্জাবী, একটি চেক লুঙ্গি ছিল। কফিনে চশমা, একটি পাইপ, এক জোড়া স্যান্ডেল ছিল। ঐ দুজন আর্মি অফিসার একটি চিঠি দেখায় যার নিচে খন্দকার মোস্তাক আহাম্মদ প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশ লেখা ছিল। তারপর আর্মিদের দেয়া একটি প্যাডে বঙ্গবন্ধুর লাশ বুঝে পেয়ে দাফন করার সার্টিফিকেট দেই। সার্টিফিকেটে তিনি এবং ল’ইয়ার ম্যাজিস্ট্রেট স্বাক্ষর করেন।

এই মামলার সাক্ষী আবদুল হাই শেখ আদালতকে বলেন, ঘটনার দিন অর্থাৎ ১৫ই আগস্ট সকাল ৮টার সময় রেডিওতে শুনতে পাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করা হয়েছে। পরের দিন ১৬ই আগস্ট পুলিশের কাছ থেকে খবর পাই বঙ্গবন্ধুর লাশ টুঙ্গিপাড়া আনা হচ্ছে। বেলা প্রায় ২টার দিকে টুঙ্গিপাড়া থানার সামনে একটি হেলিকপ্টার আসে। ওই হেলিকপ্টার থেকে লাশের বাক্স নামাতে বলে। তারা ও আর্মির লোকজন বঙ্গবন্ধুর লাশের বাক্স নামিয়ে বঙ্গবন্ধুর বাড়ির গোরস্থানে নিয়ে রাখে। বাক্স খুলে দেখেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লাশ।

আর্মির লোকজন লাশ যে অবস্থাতে আছে সেই অবস্থাতেই মাটি দিতে বলে। তারা মুসলমানের লাশ বিনা গোসলে, বিনা জানাজায় দাফন করা যায় না বললে আর্মির লোকেরা গোসল এবং জানাজার জন্য ১০ মিনিট সময় দেয়। তখন তারা রেডক্রস হাসপাতালে গিয়ে তিনটা সাদা শাড়ি ও কাছের দোকান থেকে দুইটা ৫৭০ সাবান নিয়ে আসে। আবদুল মান্নাফ, ইমানুদ্দিন গাজী, নূরুল হক, শেখ কেরামত হাজী এরা বঙ্গবন্ধুকে গোসল করান। তিনি এবং মৌলভী আবদুল হালিম কাপড় বানিয়ে গোসল শেষে বঙ্গবন্ধুকে কাফন পরান।

আবদুল হাই শেখ আদালতে আরো স্মৃতিচারণ করেন, তখন বঙ্গবন্ধুর বুকে গায়ে হাতেসহ বিভিন্ন জায়গায় অনেক গুলির চিহ্ন ছিল এবং ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুল গুলিতে ছিঁড়ে যায়। পরনে রক্তমাখা লুঙ্গি, পাঞ্জাবী, গেঞ্জি ছিল। কফিনে একটি কালো ফ্রেমের চশমা ও সিগারেটের পাইপ ছিল। মৌলভী আবদুল হালিম শেখ বঙ্গবন্ধুর জানাজা পড়ান। বঙ্গবন্ধুর মা-বাবার কবরের পশ্চিম পাশে তাকে দাফন করা হয়। প্রসিডিকউশনের ৫৪ নং সাক্ষীও বঙ্গবন্ধুর দাফনের সাক্ষী। তাকে টেন্ডার করা হয়।

বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার আরেকজন সাক্ষী মোস্তাফিজুর রহমান আদালতকে জানান, ঘটনার সময় তার বাবা মো. সিদ্দিকুর রহমান পুলিশ বিভাগের এসআই হিসাবে স্পেশাল ব্রাঞ্চে কর্মরত ছিলেন। ঘটনার রাতে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ধানমন্ডির ৩২নং রোডের ৬৭৭নং বাড়িতে ডিউটিতে থাকার সময় সেনা বাহিনীর কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল সদস্য বঙ্গবন্ধুকে তার পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে হত্যা করার সময় তার বাবাকেও গুলি করে হত্যা করে। তখন তার বয়স ছিল ৭ বছর। রাজারবাগ পুলিশ লাইনে তার বাবার জানাজা হয়। তাদেরকে নিয়ে গিয়ে বাবার লাশ দেখানো হয়। পুলিশের তত্বাবধানে মিরপুর ১নং শহীদ বুদ্ধিজীবীদের গোরস্থানে তার বাবার লাশ দাফন করা হয়। সেনাবাহিনীর লোকেরা তার বাবার লাশ রাজারবাগ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।

প্রসিকিউশনের ৫৩নং সাক্ষী সৈয়দ সিদ্দিকুর রহমান আদালতকে জানান, সাক্ষী দেওয়ার সময় তিনি বঙ্গবন্ধু স্মৃতি যাদুঘরের কিউরেটর ছিলেন। আগে ঢাকা বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার ছিলেন। ১৪-৮-৯৪ তারিখে কিউরেটর হিসেবে নিয়োগ পান তিনি। জব্দ তালিকা একজিবিট-৬ এবং এতে তার স্বাক্ষর একজিবিট-৬/১ এবং সাক্ষী আবদুল আলীম খান চৌধুরী ও মোকাব্বেল, মো. মুকুল এর স্বাক্ষর একজিবিট-৬/২, ৬/৩ প্রমাণ করে বলেন যে, এই জব্দ তালিকা মূলে বঙ্গবন্ধু যাদুঘর থেকে তদন্তকারি অফিসার রক্তমাখা ও গুলির ছিদ্রযুক্ত বিভিন্ন রকমের জামা-কাপড়, বেডশিট, তোয়ালে, টুপি, চশমা, বুলেট, পিলেট, গুলির খোসা, ভাঙ্গা গ্লাসের টুকরা, ভাঙ্গা কাঁচের চুড়ি, বই-পুস্তক বাঁধানো ছবি ইত্যাদি উদ্ধার করেন। যেগুলো মেটেরিয়াল একজিবিট-I-XXXII হিসেবে চিহ্নিত হয়।

প্রসিকিউশনের ৭নং সাক্ষী লে. কর্নেল বাসার জানান, ঘটনার আগে কুমিল্লা ১ ফিল্ড আর্টিলারিতে ছিলেন তিনি। ১৯৭৫ সালের জুলাই মাসের শেষের দিকে ঢাকা গণভবনে এবং তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে নিরাপত্তা ডিউটির জন্য তার নেতৃত্বে ১০৫ জন সৈনিকের একটি কোম্পানি পাঠায়। ১/২ আগস্ট তারা ১ম বেঙ্গল ল্যান্সার থেকে দায়িত্ব বুঝে নেয়। তার সৈনিকদের মধ্যে ২৫ জনের একটি প্লাটুন বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে ডিউটি করার জন্য এসে ৩১নং রোডের একটি বাড়িতে থাকে। হাবিলদার গণি ও হাবিলদার কুদ্দুস গার্ড কমান্ডার ছিল।

গণভবনে তার থাকার জায়গা না থাকায় তিনি রাষ্ট্রপতির মিলিটারি সেক্রেটারি ব্রিগ্রেডিয়ার মাশরারুল হকের অনুমতি নিয়ে আজিমপুর চায়না বিল্ডিংয়ে থাকতেন। ১৯৭৫ সালের ১৪ই আগস্ট দুপুরে তার রেজিমেন্টের সুবেদার মেজর আবদুল ওহাব জোয়ারদার তাদের রেজিমেন্টের সৈনিকদের বেতন নিয়ে আসে। সুবেদার মেজর কবির বেতন বিতরণ করেন। ১৫ই আগস্ট সকালে তার বাসায় কাজের ছেলে আবদুল দোকান থেকে ফেরত এসে জানায় রুটি পাওয়া যাবে না। দেশে মার্শাল ল হয়েছে। তখন রেডিও অন করে শোনেন, আমি মেজর ডালিম বলছি শেখ মুজিবকে হত্যা করা হয়েছে এবং সরকার উৎখাত করা হয়েছে। দেশে মার্শাল ল জারি করা হয়েছে।

সঙ্গে সঙ্গে গাড়ি পাঠানোর জন্য গণভবনে টেলিফোন করার কথা জানিয়ে লে. কর্নেল বাসার আদালতকে বলেন, গাড়ি আসে না। এনএসপি ব্রি: মাশরারুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও পান না। পরে শুনেছিলেন তিনি বন্দি ছিলেন। সকাল ১০/১০.৩০টার দিকে সুবেদার মেজর আবদুল ওহাব জোয়ারদার জিপে তার বাসায় এসে জানায় যে, ল্যান্সারের সৈনিকরা সকাল বেলা বঙ্গবন্ধুর বাড়ি ঘেরাও করে। সাথে ক্যাপ্টেন হুদা ছিল। তারা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে। আরো জানায় এই ঘটনায় তাদের ল্যান্সনায়েক সামসু নিহত হয়। আর একজন সৈনিক আহত হয়। যার নাম মনে নাই।

জোয়ারদার বলেন, স্যার, যা হবার হয়ে গেছে বাতাসের উল্টা দিকে যাওয়া ঠিক হবে না। তিনি বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে যেতে চাইলে জোয়ারদার বলেন, স্যার আপনার এখন যাওয়ার দরকার নেই। গাড়ি পাঠাচ্ছি তখন আপনি আসবেন। বেলা ১২/১২-৩০ টার দিকে গাড়ি আসলে তিনি বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে যাবার পথে রাস্তায় ল্যান্সারের আর্টিলারির সৈনিকদের দেখে। বঙ্গবন্ধুর বাড়ির লেকের পাশে ক্যাপ্টেন হুদার সহিত দেখা হলে হুদা বলেন- Sorry Bashar, I could not inform you earlier for obvious reason, it was not possible. তখন ক্যাপ্টেন হুদা মেজরের ব্যাজ পরা ছিল। ওহাব জোয়ারদারকেও লে. এর র‌্যাংকের ব্যাজ পরা দেখে মেজর হুদা বললেন সুবেদার মেজর ওহাব জোয়ারদারকে তার কাজের জন্য পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে।

কিছুক্ষণ পর ওহাব জোয়ারদার ও একজন এনসিও সম্ভবত হালিদার কুদ্দুস আসে। বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে ঢুকে রিসিপশন রুমে শেখ কামাল ও সাদা পোশাক পরা একজন পুলিশ অফিসারের গুলিবিদ্ধ মৃতদেহ দেখেন। পাশে একটি বাথরুমে শেখ নাসেরের গুলিবিদ্ধ মৃতদেহ এবং দোতলায় একটি বেডরুমের সামনে বেগম মুজিবের গুলিবিদ্ধ মরদেহ, ওই বেডরুমে শেখ জামাল, শেখ রাসেল, মিসেস কামাল, মিসেস জামালের গুলিবিদ্ধ লাশ দেখেন।

ওহাব জোয়ারদার বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বেগম মুজিব কান্নাকাটি করছিলেন। তখনই ল্যান্সারের কিছু সৈনিক বেগম মুজিবকে গুলি করেন। পরে রুমে ঢুকে বাকিদের গুলি করে হত্যা করেন।

সাক্ষ্য দেওয়ার সময় বিচলিত হয়ে এই সাক্ষী আদালতকে বলেন, এসএম(সুবেদার মেজর) সাহেব করছেনটা কি? জবাবে জোয়ারদার বলেন, স্যার যা হবার হয়েছে। করেছি। তারপর তিনি নিচে এসে বাড়ির উত্তর-পশ্চিম পাশে গ্যারেজে একটি গাড়িতে কর্নেল জামিলের মৃতদেহ দেখেন। তখন এনসিও সম্ভবত: কুদ্দুস বলেন, মেজর হুদা, মেজর নূর, মেজর মুহিউদ্দিন(ল্যান্সার) বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারকে হত্যা করার ঘটনা দেখে। ঐ দিন বিকেল ৪/৪:৩০ টার দিকে একটি সশস্ত্র জিপে মেজর ডালিমকে বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে এসে ঘোরাফেরা করতে দেখেন।

১৯৭৫ সালের ১৬ই আগস্ট সকাল বেলা তিনি পেট্রোল নেবার জন্য মোহাম্মদপুর পেট্রোল পাম্পে যান। পেট্রোল পাম্প বন্ধ দেখে কারণ জানতে পারেন যে, ১৫ই আগস্ট ভোর ৪টার দিকে এ পাম্পের একজন কর্মচারি একটি গোলার আঘাতে তার বাসায় নিহত হয়। পরে জানতে পারেন বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডে ২ ফিল্ড আর্টিলারির একটি ব্যাটারি অংশগ্রহণ করে বঙ্গবন্ধুর বাড়ির দক্ষিণে লেকের পাশে অবস্থান নেয়। তাদের নিক্ষিপ্ত গোলার আঘাতেই ওই পাম্প কর্মচারি নিহত হয়।

আরো জানা যায় যে, ঐ ব্যাটারি কমান্ডার ছিলেন আর্টিলারির মেজর মুহিউদ্দিন। ১৬ই আগস্ট সকালে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টে ফেরত গিয়ে রেজিমেন্টের কমান্ডার আলী আনসারকে ঘটনার বিবরণ দেন এবং ঢাকায় ফেরত আসেন। ১৭ই আগস্ট সন্ধ্যার পরে তার পুরো কোম্পানিসহ কুমিল্লায় ফেরত যায়। পরবর্তীকালে বিভিন্ন সময়ে জেসিও/এনসিও-দের সহিত আলোচনা করতে করতে জানতে পারেন যে, মেজর ফারুক, মেজর রশিদ, মেজর শাহরিয়ার, মেজর আজিজ পাশা, রিসালদার মোসলেম উদ্দিন ও অন্যান্য বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল।

সেই দিনের পরিস্থিতিতে কমান্ড ও কন্ট্রোল ভেঙ্গে পড়ে এবং বিপথগামী অফিসার দ্বারা তার সৈনিকরা প্রভাবিত হয়েছিল বলেই মনে করেন কর্নেল বাসার।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর