ঢাকা ০৮:০৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বন্ধুত্বের রং

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:১৭:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ অগাস্ট ২০১৫
  • ৩২০ বার

বন্ধুহীন জীবন নাবিকবিহীন জাহাজের মতো। তাই মানুষ জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে একজন ভালো বন্ধুর প্রয়োজন অনুভব করে। কারণ একজন প্রকৃত বন্ধু জীবনের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্নার অংশীদার হয়। প্রকৃত বন্ধুই পারে আত্মার আত্মীয় হয়ে কিছুক্ষণের জন্য হলেও দুঃখ-কষ্টকে ভুলিয়ে রাখতে। এই বন্ধুত্বের নানা রং নিয়ে লিখেছেন রিয়াদ খন্দকার।

মানুষকে বাড়ি কল্পনা করলে বন্ধুত্বকে মনে হয় সাঁকো। সে সাঁকো বেয়ে দুই বাড়িতে উত্সবে-পার্বণে মিষ্টি আদান-প্রদান হয়। এক বাড়ির আনন্দ অন্য বাড়িকে উদ্ভাসিত করে। ওপারের মেয়েটা তার কষ্টের চিঠিটা এপারের সইকে এসে পড়ে শুনিয়ে যায়। একজনের ঘরে চাল না থাকলে অন্য বাড়ির কাছে ধার নেয়। এভাবে গড়ে উঠে দ্বীপের মতো বিচ্ছিন্ন মানব আত্মার গড়ে তোলা ভালোবাসার অজস্র অদৃশ্য সাঁকো।

তবে বন্ধুত্বের সাঁকোর সঙ্গে বাঁশের তৈরি সাঁকোর বেশ খানিকটা গরমিল আছে। পুরোনো হলে সাঁকো নড়বড়ে হয়ে যায়। ভেঙে যায়। বন্ধুত্বটা পুরোনো হলে মজবুত হয়, মধুরতর হয়। অ্যাকাউন্টিংয়ের অবসায়ন তত্ত্বকে মিথ্যে করে দিয়ে দিনে দিনে তার মূল্য বাড়তে থাকে। বন্ধুত্বের স্থায়িত্ব বা প্রকাশ স্থান-কাল-পাত্রভেদে ভিন্ন। কোনো কোনোটি মিনিট থেকে কয়েক বছর স্থায়ী হয়, কোনোটি আমৃত্যু বেঁচে থাকে। অফিসের উল্টোদিকের ডেস্কের গোমড়ামুখো মানুষটি একদিন বন্ধু হয়ে যায়। অনেক কথা বলে। চা খায় এক ক্যান্টিনে। তার স্ত্রীর সুস্বাদু রান্নার উপভোগের জন্য পীড়াপীড়ি করে। কর্মস্থল বদলের সঙ্গে সঙ্গে সেই সখ্যতা জীবনের শ্লেট থেকে মুছে যায়। তবে স্কুলে, কাজে, আত্মীয়তায়, যাত্রাপথের অনেক সাময়িক বন্ধুত্ব সময়ের কষ্টি পাথরে টিকে থাকে আজীবন।

শৈশবের বন্ধুগুলো হয় সবচেয়ে মজার। বড় হলেও এরা শিশু রয়ে যায়। আড্ডায় সুযোগ পেলেই স্মৃতি রোমন্থন করে, কাদা মাঠে দল বেঁধে খেলতে নামে, এক সঙ্গে সবাই মেলার প্লাস্টিকের রঙিন চশমা পরে ঘুরে বেড়াতে থাকে। শিশুদের বন্ধুত্ব কাচের মতো নির্মল। শিশুরা প্রতিযোগিতা ভালোবাসে, ঈদের জামাটা বন্ধুদের থেকে লুকিয়ে রাখে, হইচই করে, আবার মুহূর্তে কনিষ্ঠ আঙুলে বিচ্ছেদ নিয়ে ফেলে। কথা বন্ধ করে দেয়। বাবা-মায়েরা প্রায়ই শিশুদের ঝগড়া নিয়ে ঝগড়া করতে থাকে, ততক্ষণে হয়তো তারা ভাব করে ফেলেছে।

বন্ধুত্ব প্রয়োজন ও পরিস্থিতিতে বিবর্তিত হয়। বয়সে পরিণত হয়। অর্থের আগমনে বন্ধুরা বেড়ে যায় পঙ্গপালের মতো। আবার অভাব উঁকি দিলে মৌসুমি বন্ধুরা অদৃশ্য হয়ে যায়। বলা হয় বিপদের চালুনিতে আসল বন্ধুরা পরিশ্রুত হয়ে যায়। কলেজে যে বখাটে ছেলেটা দু’চোখের বিষ সেও হতে পারে বন্ধু। যেমন অর্থাভাবে কলেজের বেতন দিতে দেরি হয়েছিল। বাড়ি থেকে টাকা আসেনি। কেউ বোঝেনি। ধার দিতে ইতস্তত করছিল। বখাটে ছেলেটা তখন বলেছিল, ‘আর ধুর নে। এই টাকা কয়টা রাখ। পরে দিস যখন সুবিধা হয়।’ সে একদিন বন্ধু হয়েছিল।

বন্ধু তুমি কত রঙে রঙিন

বন্ধুর বৃত্ত অনেক প্রসারিত। সময়ের তালে তালে এই বৃত্ত আরও প্রসারিত হচ্ছে। এখন অনেক ক্ষেত্রে বন্ধুই আমাদের সবকিছু। এই বন্ধুর কাছেই নিজের সবকিছু শেয়ার করা। কোনো গোপনীয়তা না রাখা। এসব যেন বন্ধুত্বের সংবিধান হয়ে গেছে আজ। আমাদের বন্ধুর অভাব নেই। কত বন্ধু আমাদের!! তারপরও আমরা অসহায়, একাকিত্বে ভুগি অনেকেই। কারণ, এত বন্ধুর ভিড়ে প্রকৃত বন্ধুটাকেই তো খুঁজে পাই না। বন্ধুত্বের বৃত্ত কয়েকটিই আছে। আমরা যারা ছাত্র তারা দিনের বেশিরভাগ সময়ই স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে কাটিয়ে থাকি। এ হচ্ছে একধরনের বন্ধু বৃত্ত। এই বৃত্তটা একটু বড় বটে। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু বন্ধু থাকে, যাদের বলা হয় বেস্ট/ক্লোজেস্ট ফ্রেন্ডস। এরা এক বৃত্তের বন্ধুরা আম গাছের আঠার মতো সবসময় একসাথে থাকে। কিছু বন্ধু আছে যাদের সাথে শুধু ক্লাসে আর কোথাও দেখা হলে কথা হয়, এ ছাড়া কোনো প্রয়োজন ছাড়া খুব একটা কথাবার্তা হয় না। আবার কিছু বন্ধু যাদের সাথে ক্লাসে খুব কথাবার্তা হয় কিন্তু বাইরে শুধু ‘হাই-হ্যালো’। এরা এককথায় সহপাঠী নামে পরিচিত হয়। তবে একটা কথা আছে, সবাই কিন্তু কারও বেস্ট ফ্রেন্ড, কারও ক্লাস ফ্রেন্ড আবার কারও সহপাঠী।

এরপর দ্বিতীয় বৃত্ত একজন যেই এলাকায় থাকে সেখানকার ও তার আশপাশের বন্ধুরা। এখানে বেস্ট ফ্রেন্ডও থাকে আবার ‘হাই-হ্যালো’ ফ্রেন্ডও থাকে। আবার স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ফ্রেন্ড একই এলাকার হয়েছে থাকে তাহলে সে এক গ্রুপের। আবার স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে কোনো বেস্ট ফ্রেন্ড থাকলে তো কোনো কথাই নেই। তবে সবার ক্ষেত্রে এবং সব জায়গায় যে এমনটা হবে তা একদমই ঠিক না। এই বন্ধু এমন একটা সম্পর্ক যেটা কিনা সবার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট করে কিছু বলা যায়ই না। আর আজকাল তো আমাদের নেট ফ্রেন্ডের অভাব নেই! এ ক্ষেত্রে মার্ক জাকারবার্গকে কী বলা যায় বা আমাদেরকেই বা কী বলা যায়?

অবশ্য চালের কাঁকরের মতো প্রায়ই বন্ধুত্বে বিশ্বাসঘাতকেরা মিশে থাকে। হন্তারক বন্ধু সেজে পিঠে ছুরি বসায়, নরনারীর বন্ধুত্ব প্রেমে বদলে গিয়ে জটিলতার মরুভূমিতে পথ হারায়। তারপরও দুর্গম জীবনের পথে বন্ধুত্ব যেন দেবদারু গাছের ছায়া, তৃষ্ণার জল, প্যান্ডোরার বাক্সের সেই শেষ আশা, যা আমাদের বাঁচিয়ে রাখে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

বন্ধুত্বের রং

আপডেট টাইম : ১১:১৭:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ অগাস্ট ২০১৫

বন্ধুহীন জীবন নাবিকবিহীন জাহাজের মতো। তাই মানুষ জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে একজন ভালো বন্ধুর প্রয়োজন অনুভব করে। কারণ একজন প্রকৃত বন্ধু জীবনের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্নার অংশীদার হয়। প্রকৃত বন্ধুই পারে আত্মার আত্মীয় হয়ে কিছুক্ষণের জন্য হলেও দুঃখ-কষ্টকে ভুলিয়ে রাখতে। এই বন্ধুত্বের নানা রং নিয়ে লিখেছেন রিয়াদ খন্দকার।

মানুষকে বাড়ি কল্পনা করলে বন্ধুত্বকে মনে হয় সাঁকো। সে সাঁকো বেয়ে দুই বাড়িতে উত্সবে-পার্বণে মিষ্টি আদান-প্রদান হয়। এক বাড়ির আনন্দ অন্য বাড়িকে উদ্ভাসিত করে। ওপারের মেয়েটা তার কষ্টের চিঠিটা এপারের সইকে এসে পড়ে শুনিয়ে যায়। একজনের ঘরে চাল না থাকলে অন্য বাড়ির কাছে ধার নেয়। এভাবে গড়ে উঠে দ্বীপের মতো বিচ্ছিন্ন মানব আত্মার গড়ে তোলা ভালোবাসার অজস্র অদৃশ্য সাঁকো।

তবে বন্ধুত্বের সাঁকোর সঙ্গে বাঁশের তৈরি সাঁকোর বেশ খানিকটা গরমিল আছে। পুরোনো হলে সাঁকো নড়বড়ে হয়ে যায়। ভেঙে যায়। বন্ধুত্বটা পুরোনো হলে মজবুত হয়, মধুরতর হয়। অ্যাকাউন্টিংয়ের অবসায়ন তত্ত্বকে মিথ্যে করে দিয়ে দিনে দিনে তার মূল্য বাড়তে থাকে। বন্ধুত্বের স্থায়িত্ব বা প্রকাশ স্থান-কাল-পাত্রভেদে ভিন্ন। কোনো কোনোটি মিনিট থেকে কয়েক বছর স্থায়ী হয়, কোনোটি আমৃত্যু বেঁচে থাকে। অফিসের উল্টোদিকের ডেস্কের গোমড়ামুখো মানুষটি একদিন বন্ধু হয়ে যায়। অনেক কথা বলে। চা খায় এক ক্যান্টিনে। তার স্ত্রীর সুস্বাদু রান্নার উপভোগের জন্য পীড়াপীড়ি করে। কর্মস্থল বদলের সঙ্গে সঙ্গে সেই সখ্যতা জীবনের শ্লেট থেকে মুছে যায়। তবে স্কুলে, কাজে, আত্মীয়তায়, যাত্রাপথের অনেক সাময়িক বন্ধুত্ব সময়ের কষ্টি পাথরে টিকে থাকে আজীবন।

শৈশবের বন্ধুগুলো হয় সবচেয়ে মজার। বড় হলেও এরা শিশু রয়ে যায়। আড্ডায় সুযোগ পেলেই স্মৃতি রোমন্থন করে, কাদা মাঠে দল বেঁধে খেলতে নামে, এক সঙ্গে সবাই মেলার প্লাস্টিকের রঙিন চশমা পরে ঘুরে বেড়াতে থাকে। শিশুদের বন্ধুত্ব কাচের মতো নির্মল। শিশুরা প্রতিযোগিতা ভালোবাসে, ঈদের জামাটা বন্ধুদের থেকে লুকিয়ে রাখে, হইচই করে, আবার মুহূর্তে কনিষ্ঠ আঙুলে বিচ্ছেদ নিয়ে ফেলে। কথা বন্ধ করে দেয়। বাবা-মায়েরা প্রায়ই শিশুদের ঝগড়া নিয়ে ঝগড়া করতে থাকে, ততক্ষণে হয়তো তারা ভাব করে ফেলেছে।

বন্ধুত্ব প্রয়োজন ও পরিস্থিতিতে বিবর্তিত হয়। বয়সে পরিণত হয়। অর্থের আগমনে বন্ধুরা বেড়ে যায় পঙ্গপালের মতো। আবার অভাব উঁকি দিলে মৌসুমি বন্ধুরা অদৃশ্য হয়ে যায়। বলা হয় বিপদের চালুনিতে আসল বন্ধুরা পরিশ্রুত হয়ে যায়। কলেজে যে বখাটে ছেলেটা দু’চোখের বিষ সেও হতে পারে বন্ধু। যেমন অর্থাভাবে কলেজের বেতন দিতে দেরি হয়েছিল। বাড়ি থেকে টাকা আসেনি। কেউ বোঝেনি। ধার দিতে ইতস্তত করছিল। বখাটে ছেলেটা তখন বলেছিল, ‘আর ধুর নে। এই টাকা কয়টা রাখ। পরে দিস যখন সুবিধা হয়।’ সে একদিন বন্ধু হয়েছিল।

বন্ধু তুমি কত রঙে রঙিন

বন্ধুর বৃত্ত অনেক প্রসারিত। সময়ের তালে তালে এই বৃত্ত আরও প্রসারিত হচ্ছে। এখন অনেক ক্ষেত্রে বন্ধুই আমাদের সবকিছু। এই বন্ধুর কাছেই নিজের সবকিছু শেয়ার করা। কোনো গোপনীয়তা না রাখা। এসব যেন বন্ধুত্বের সংবিধান হয়ে গেছে আজ। আমাদের বন্ধুর অভাব নেই। কত বন্ধু আমাদের!! তারপরও আমরা অসহায়, একাকিত্বে ভুগি অনেকেই। কারণ, এত বন্ধুর ভিড়ে প্রকৃত বন্ধুটাকেই তো খুঁজে পাই না। বন্ধুত্বের বৃত্ত কয়েকটিই আছে। আমরা যারা ছাত্র তারা দিনের বেশিরভাগ সময়ই স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে কাটিয়ে থাকি। এ হচ্ছে একধরনের বন্ধু বৃত্ত। এই বৃত্তটা একটু বড় বটে। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু বন্ধু থাকে, যাদের বলা হয় বেস্ট/ক্লোজেস্ট ফ্রেন্ডস। এরা এক বৃত্তের বন্ধুরা আম গাছের আঠার মতো সবসময় একসাথে থাকে। কিছু বন্ধু আছে যাদের সাথে শুধু ক্লাসে আর কোথাও দেখা হলে কথা হয়, এ ছাড়া কোনো প্রয়োজন ছাড়া খুব একটা কথাবার্তা হয় না। আবার কিছু বন্ধু যাদের সাথে ক্লাসে খুব কথাবার্তা হয় কিন্তু বাইরে শুধু ‘হাই-হ্যালো’। এরা এককথায় সহপাঠী নামে পরিচিত হয়। তবে একটা কথা আছে, সবাই কিন্তু কারও বেস্ট ফ্রেন্ড, কারও ক্লাস ফ্রেন্ড আবার কারও সহপাঠী।

এরপর দ্বিতীয় বৃত্ত একজন যেই এলাকায় থাকে সেখানকার ও তার আশপাশের বন্ধুরা। এখানে বেস্ট ফ্রেন্ডও থাকে আবার ‘হাই-হ্যালো’ ফ্রেন্ডও থাকে। আবার স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ফ্রেন্ড একই এলাকার হয়েছে থাকে তাহলে সে এক গ্রুপের। আবার স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে কোনো বেস্ট ফ্রেন্ড থাকলে তো কোনো কথাই নেই। তবে সবার ক্ষেত্রে এবং সব জায়গায় যে এমনটা হবে তা একদমই ঠিক না। এই বন্ধু এমন একটা সম্পর্ক যেটা কিনা সবার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট করে কিছু বলা যায়ই না। আর আজকাল তো আমাদের নেট ফ্রেন্ডের অভাব নেই! এ ক্ষেত্রে মার্ক জাকারবার্গকে কী বলা যায় বা আমাদেরকেই বা কী বলা যায়?

অবশ্য চালের কাঁকরের মতো প্রায়ই বন্ধুত্বে বিশ্বাসঘাতকেরা মিশে থাকে। হন্তারক বন্ধু সেজে পিঠে ছুরি বসায়, নরনারীর বন্ধুত্ব প্রেমে বদলে গিয়ে জটিলতার মরুভূমিতে পথ হারায়। তারপরও দুর্গম জীবনের পথে বন্ধুত্ব যেন দেবদারু গাছের ছায়া, তৃষ্ণার জল, প্যান্ডোরার বাক্সের সেই শেষ আশা, যা আমাদের বাঁচিয়ে রাখে।