ঢাকা ০৩:০৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫, ১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শাপলা বিক্রি করেই জীবন চলে যাদে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০১:১৬:৪৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ অগাস্ট ২০১৫
  • ৩৬৩ বার

সারাদিন কাঠফাঁটা রোদ কিংবা মুসলধারে বৃষ্টি যা-ই হউক বিলে তাদের যেতেই হবে। শাপলা তাদের তুলতেই হবে। তা না হলে সংসার চলবে কি করে?

বিলের শাপলাই তো তাদের জীবন ধারণে অন্ন জোগাতে সিংহভাগ ভূমিকা রাখছে। পাশাপাশি তাল গাছ দিয়ে তৈরি খোন্দা (তাল গাছের নৌকা) ও ছোট ডিঙ্গি নৌকা পরম বন্ধুর মতো তাদের সহযোগিতা করছে। এতক্ষণ বলছিলাম গাজীপুরের কালীগঞ্জ বেলাই ও মোহানী বিল পাড়ের মানুষের কথা। জাতীয় ফুল শাপলা বিক্রি করেই জীবন চলে তাদের।

স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার পৌর এলাকার দুর্বাটি ও বক্তারপুর ইউনিয়নের মোহানী গ্রামের বিল পাড়ের প্রায় অর্ধশতাধিক দরিদ্র মানুষ এই শাপলা তোলার কাজে নিয়োজিত। বর্ষা মৌসুমের প্রতিদিনই তারা এই শাপলা তোলার কাজটি করে থাকে। আর শাপলা তুলে একদিকে নিজের সংসারের খরচের চাহিদা মেটাচ্ছেন অন্য দিকে সবজি হিসেবে অতি জনপ্রিয় করে তুলছেন জাতীয় ফুল শাপলাকে।

কথা হয় শাপলা তুলতে আসা দুর্বাটি গ্রামের মতিউর রহমান (৪৬) এর সঙ্গে। তিনি জানান, প্রতিদিন ভোর থেকে বিকেল পর্যন্ত এই শাপলা তোলার কাজ করেন তারা। আর বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত ওই শাপলা আঁটি করা হয়। পরে সকালে সেগুলো চলে যায় রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন বাজারে। শুধু মতিউর নয়, তার মতো প্রতিদিন এ কাজ করছেন একই গ্রামের মকবুল (২২), শফিক (৩৫), আমিন (৩২), ইব্রাহিম (৪০)। ওই গ্রামের মহিদুল (৩৫) বলেন, ‘আমাদের উঠানো শাপলা বিক্রি হয় রাজধানীর মোহাম্মদপুর, রায়ের বাজার, কারওয়ান বাজারসহ বড় বড় বাজারে।’

মোহানী গ্রামের আছিব (৩২) জানান, প্রতিদিন তারা ৪ পিকআপ (ভ্যান) শাপলা তুলতে পারেন। আর প্রতি পিকআপের ভাড়া দিতে হয় ১৮শ থেকে ২ হাজার টাকা। একই গ্রামের মজিবুর (৪৫) জানান, প্রতিদিন তাদের গড়ে প্রত্যেকের প্রায় দেড় হাজার থেকে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত আয় হয়। ফারুক (৪২) জানান, সময়ের কারণে পাইকারী দরে প্রতি আঁটি ৫ টাকা ধরে বিক্রি করা হয়। কিন্তু যদি সময় নিয়ে বাজারে খুচরা বিক্রি করা যেত তবে এই আয় আরো বেশি হতো।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

শাপলা বিক্রি করেই জীবন চলে যাদে

আপডেট টাইম : ০১:১৬:৪৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ অগাস্ট ২০১৫

সারাদিন কাঠফাঁটা রোদ কিংবা মুসলধারে বৃষ্টি যা-ই হউক বিলে তাদের যেতেই হবে। শাপলা তাদের তুলতেই হবে। তা না হলে সংসার চলবে কি করে?

বিলের শাপলাই তো তাদের জীবন ধারণে অন্ন জোগাতে সিংহভাগ ভূমিকা রাখছে। পাশাপাশি তাল গাছ দিয়ে তৈরি খোন্দা (তাল গাছের নৌকা) ও ছোট ডিঙ্গি নৌকা পরম বন্ধুর মতো তাদের সহযোগিতা করছে। এতক্ষণ বলছিলাম গাজীপুরের কালীগঞ্জ বেলাই ও মোহানী বিল পাড়ের মানুষের কথা। জাতীয় ফুল শাপলা বিক্রি করেই জীবন চলে তাদের।

স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার পৌর এলাকার দুর্বাটি ও বক্তারপুর ইউনিয়নের মোহানী গ্রামের বিল পাড়ের প্রায় অর্ধশতাধিক দরিদ্র মানুষ এই শাপলা তোলার কাজে নিয়োজিত। বর্ষা মৌসুমের প্রতিদিনই তারা এই শাপলা তোলার কাজটি করে থাকে। আর শাপলা তুলে একদিকে নিজের সংসারের খরচের চাহিদা মেটাচ্ছেন অন্য দিকে সবজি হিসেবে অতি জনপ্রিয় করে তুলছেন জাতীয় ফুল শাপলাকে।

কথা হয় শাপলা তুলতে আসা দুর্বাটি গ্রামের মতিউর রহমান (৪৬) এর সঙ্গে। তিনি জানান, প্রতিদিন ভোর থেকে বিকেল পর্যন্ত এই শাপলা তোলার কাজ করেন তারা। আর বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত ওই শাপলা আঁটি করা হয়। পরে সকালে সেগুলো চলে যায় রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন বাজারে। শুধু মতিউর নয়, তার মতো প্রতিদিন এ কাজ করছেন একই গ্রামের মকবুল (২২), শফিক (৩৫), আমিন (৩২), ইব্রাহিম (৪০)। ওই গ্রামের মহিদুল (৩৫) বলেন, ‘আমাদের উঠানো শাপলা বিক্রি হয় রাজধানীর মোহাম্মদপুর, রায়ের বাজার, কারওয়ান বাজারসহ বড় বড় বাজারে।’

মোহানী গ্রামের আছিব (৩২) জানান, প্রতিদিন তারা ৪ পিকআপ (ভ্যান) শাপলা তুলতে পারেন। আর প্রতি পিকআপের ভাড়া দিতে হয় ১৮শ থেকে ২ হাজার টাকা। একই গ্রামের মজিবুর (৪৫) জানান, প্রতিদিন তাদের গড়ে প্রত্যেকের প্রায় দেড় হাজার থেকে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত আয় হয়। ফারুক (৪২) জানান, সময়ের কারণে পাইকারী দরে প্রতি আঁটি ৫ টাকা ধরে বিক্রি করা হয়। কিন্তু যদি সময় নিয়ে বাজারে খুচরা বিক্রি করা যেত তবে এই আয় আরো বেশি হতো।