ঢাকা ০২:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শুরু হচ্ছে দুই দিনব্যাপী ‘লোকমেলার পার্বণ উৎসব’

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৫৮:৫৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ জুলাই ২০১৭
  • ৩০৫ বার
হাওর বার্তা ডেস্কঃ  গ্রাম প্রধান বাংলাদেশের মানুষের বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম কাতি বা উৎসব, মেলা। বাংলাদেশ বারো মাসে তের কাতি’র দেশ। আবহমান বাংলার এক প্রাচীন ঐতিহ্য এটি। বছরের বিভিন্ন সময়ে আয়োজিত আঞ্চলিক মেলাসমুহ গ্রামের প্রধান বিনোদন। ধারণা করা হয়, গ্রামীণ হাট-বাজারের ধারনা থেকে প্রজাদের বিনোদনের প্রয়োজনে রাজা-জমিদাররা বিশেষ বিশেষ দিনে মেলার আয়োজন বা পৃষ্ঠপোষকতা করা শুরু করেন।
পরে নাগরিক প্রয়োজনে মেলা সার্বজনীনতা লাভ করে। মেলাকে সহজে সংজ্ঞায়িত করলে বলা যায়-বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রম ও সামাজিক বিনোদনের একত্রিত রূপ। অনেকে ধারনা করেন; মোগল শাসনামলে সম্রাজ্য জয়ের সফরে বিভিন্ন পরগনায় তাঁবু পাততেন মোগল সৈন্যদল। সৈন্যদের প্রয়োজনে এলাকার মানুষ তাদের উৎপাদিত পণ্যের পশরা নিয়ে বসতেন তাঁবুর আশ-পাশে সেখান থেকে মেলার উৎপত্তি।
মেলাই একমাত্র কাতি যেখানে ধনী-গরীব, নীতিশ-বৈশ্য, কালো-ধলো, মুসলিম-হিন্দু, জাত-অজাত এক সঙ্গে মিলে। মেলা মানে আড়ং। বট-পাকুড়ের ছায়ায়, নদীর তীরে, আবার কখনও মন্দির-মঠ-তীর্থস্থানে বা সাধু-সন্ন্যাসী-পীর-ফকিরদের আস্তানায় এবং গ্রামের খোলা মাঠে মেলা বসে। মানুষের প্রয়োজনীয় তাবৎ পণ্য, সমাজের মানুষের সমাগম, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল কিছুর একত্রিত রূপ মেলা।
বাংলাদেশের এমন কোন জেলা বা উপজেলা নেই- যেখানে মেলার আয়োজন হয় না। সারা বছরই দেশের কোন না কোন এলাকায় মেলা লেগেই থাকে। ভিন্ন ভিন্ন নামে হলেও মেলার অন্তর্নিহিত বিষয় কিন্তু একই। তা হলো মানুষে মানুষে সমাগম আর গ্রাম্য লোকাচারে কয়েকদিনের জন্য হৈ হুল্লুর। বাংলা একাডেমি’র এক হিসাবে বাংলাদেশে ১২শ ৯৪ টি আর বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুঠির শিল্প কর্পোরেশন সংকলিত বাংলাদেশের মেলা ২য় সংস্করণে মেলার সংখ্যা আছে ১৩শ ৮৭টি। আদতে বাস্তবে মেলার সংখ্যা আরো বেশি।
রঙ্গে ভরা বঙ্গ বাংলাদেশের লোক-মেলা নিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করছে। তার অংশ হিসেবে এবার বাংলার লোক সংস্কৃতির প্রাণ কিছু লোক-মেলার পার্বণ নিয়ে দুই দিনব্যাপী ‘মেলার পার্বণ উৎসব’ অনুষ্ঠান আয়োজন করতে যাচ্ছে। সেগুনবাগিচাস্থ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে আয়োজিত হবে ‘লোকমেলার পার্বণ উৎসব’।
২৮ ও ২৯ জুলাই শুক্র ও শনিবার প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে অনুষ্ঠানে গাজীরপট, রেঁ রেঁ, বেহুলার ভাসান, ভেলা ভাসানী, লালকাঁচ, মাদারবাশ নাচ। প্রতিটি বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন ও পরিবেশনা থাকবে এই অনুষ্ঠানে। এ উপলক্ষে ‘বাংলার মেলা বাংলার পার্বণ’ নামে একটি বই প্রকাশিত হবে।
অনুষ্ঠানের প্রথম দিন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন বলে জানিয়েছেন রঙ্গে ভরা বঙ্গের পরিচালক ইমরান উজ-জামান।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

শুরু হচ্ছে দুই দিনব্যাপী ‘লোকমেলার পার্বণ উৎসব’

আপডেট টাইম : ১১:৫৮:৫৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ জুলাই ২০১৭
হাওর বার্তা ডেস্কঃ  গ্রাম প্রধান বাংলাদেশের মানুষের বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম কাতি বা উৎসব, মেলা। বাংলাদেশ বারো মাসে তের কাতি’র দেশ। আবহমান বাংলার এক প্রাচীন ঐতিহ্য এটি। বছরের বিভিন্ন সময়ে আয়োজিত আঞ্চলিক মেলাসমুহ গ্রামের প্রধান বিনোদন। ধারণা করা হয়, গ্রামীণ হাট-বাজারের ধারনা থেকে প্রজাদের বিনোদনের প্রয়োজনে রাজা-জমিদাররা বিশেষ বিশেষ দিনে মেলার আয়োজন বা পৃষ্ঠপোষকতা করা শুরু করেন।
পরে নাগরিক প্রয়োজনে মেলা সার্বজনীনতা লাভ করে। মেলাকে সহজে সংজ্ঞায়িত করলে বলা যায়-বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রম ও সামাজিক বিনোদনের একত্রিত রূপ। অনেকে ধারনা করেন; মোগল শাসনামলে সম্রাজ্য জয়ের সফরে বিভিন্ন পরগনায় তাঁবু পাততেন মোগল সৈন্যদল। সৈন্যদের প্রয়োজনে এলাকার মানুষ তাদের উৎপাদিত পণ্যের পশরা নিয়ে বসতেন তাঁবুর আশ-পাশে সেখান থেকে মেলার উৎপত্তি।
মেলাই একমাত্র কাতি যেখানে ধনী-গরীব, নীতিশ-বৈশ্য, কালো-ধলো, মুসলিম-হিন্দু, জাত-অজাত এক সঙ্গে মিলে। মেলা মানে আড়ং। বট-পাকুড়ের ছায়ায়, নদীর তীরে, আবার কখনও মন্দির-মঠ-তীর্থস্থানে বা সাধু-সন্ন্যাসী-পীর-ফকিরদের আস্তানায় এবং গ্রামের খোলা মাঠে মেলা বসে। মানুষের প্রয়োজনীয় তাবৎ পণ্য, সমাজের মানুষের সমাগম, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল কিছুর একত্রিত রূপ মেলা।
বাংলাদেশের এমন কোন জেলা বা উপজেলা নেই- যেখানে মেলার আয়োজন হয় না। সারা বছরই দেশের কোন না কোন এলাকায় মেলা লেগেই থাকে। ভিন্ন ভিন্ন নামে হলেও মেলার অন্তর্নিহিত বিষয় কিন্তু একই। তা হলো মানুষে মানুষে সমাগম আর গ্রাম্য লোকাচারে কয়েকদিনের জন্য হৈ হুল্লুর। বাংলা একাডেমি’র এক হিসাবে বাংলাদেশে ১২শ ৯৪ টি আর বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুঠির শিল্প কর্পোরেশন সংকলিত বাংলাদেশের মেলা ২য় সংস্করণে মেলার সংখ্যা আছে ১৩শ ৮৭টি। আদতে বাস্তবে মেলার সংখ্যা আরো বেশি।
রঙ্গে ভরা বঙ্গ বাংলাদেশের লোক-মেলা নিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করছে। তার অংশ হিসেবে এবার বাংলার লোক সংস্কৃতির প্রাণ কিছু লোক-মেলার পার্বণ নিয়ে দুই দিনব্যাপী ‘মেলার পার্বণ উৎসব’ অনুষ্ঠান আয়োজন করতে যাচ্ছে। সেগুনবাগিচাস্থ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে আয়োজিত হবে ‘লোকমেলার পার্বণ উৎসব’।
২৮ ও ২৯ জুলাই শুক্র ও শনিবার প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে অনুষ্ঠানে গাজীরপট, রেঁ রেঁ, বেহুলার ভাসান, ভেলা ভাসানী, লালকাঁচ, মাদারবাশ নাচ। প্রতিটি বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন ও পরিবেশনা থাকবে এই অনুষ্ঠানে। এ উপলক্ষে ‘বাংলার মেলা বাংলার পার্বণ’ নামে একটি বই প্রকাশিত হবে।
অনুষ্ঠানের প্রথম দিন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন বলে জানিয়েছেন রঙ্গে ভরা বঙ্গের পরিচালক ইমরান উজ-জামান।