ঢাকা ১২:৪০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এইচএসসিতে মা পেলেন ৪.৮৩, ছেলে পেল ৩.৬৭

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:১৭:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ জুলাই ২০১৭
  • ৩৯৩ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ অদম্য আগ্রহের সাথে সামান্য একটু সহযোগিতামূলক মনোভাব, একটু অনুপ্রেরণা পেলে অনেক অসাধ্য কাজই সম্ভব হতে পারে। একসঙ্গে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে মা শাহনাজ পারভিন (৪০) এবং ছেলে রাকিব আমিন সবুজ (২০) এই কথা প্রমাণ করলেন। তারা আরও প্রমাণ করলেন যে, পড়াশোনার কোনো বয়স নেই। এই খুশির খবরে এখন আনন্দে ভাসছে শাহনাজের পরিবার।  মা-ছেলের পাশ করার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর শাহনাজ পারভিনের বাড়িতে ভিড় করছেন এলাকাবাসী।

জানা গেছে, নাটোর মহিলা কলেজ থেকে পরীক্ষা দিয়ে শাহনাজ পারভিন জিপিএ ৪.৮৩ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। আর নাটোর টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ থেকে পরীক্ষা দিয়ে জিপিএ ৩.৬৭ পেয়েছে শাহনাজের ছেলে রাকিব। ছেলের চেয়ে মায়ের ফলাফল ভালো হওয়ায় কোনো আফসোস নেই রাকিবের। সে মায়ের এমন ফলাফলে ভীষণ আনন্দিত।

গণমাধ্যমের কাছে রাকিব বলেছে, ‘আমার রেজাল্টের চেয়ে মায়ের রেজাল্ট ভালো হওয়ায় খুব খুশি হয়েছি। তাছাড়া মায়ের ফলাফল ভাল হওয়ার কারণে পরিবারের সবাই আনন্দিত। ‘

মা শাহনাজ পারভিন বলেন, ‘১৯৯৫ সালে এসএসসিতে দ্বিতীয় বিভাগ নিয়ে পাশ করি। এরপর আর লেখা পড়া করার সুযোগ হয়নি। কিন্তু যখন বুঝলাম লেখা-পাড়ার কোনো বয়স নাই তখন কলেজে ভর্তি হয়ে পড়াশোনায় মনোযোগ দেই। ‘

জানা গেছে,  ১৯৯২ সালে তেলকুপি এলাকার রুহুল আমীনের সাথে বিয়ে হয় শাহনাজ পারভিনের। এরপর পরিবার নিয়ে শহরের নাটোর শহরের মল্লিকহাটি মধ্যপাড়ায় বসবাস করছেন তিনি। বিয়ের পর ১৯৯৫ সালে স্থানীয় একটি স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে দ্বিতীয় বিভাগে পাশ করেন।  অভাবের সংসারের কারণে আর লেখা-পড়া চালিয়ে যেতে পারেননি শাহনাজ পারভিন। এক ছেলে ও এক মেয়ে সন্তানের জননী শাহনাজ স্থানীয় একটি ক্লিনিকে নার্সের চাকরি করে সংসার পরিচালনা করে আসছিলেন। কিন্তু লেখাপড়ার গুরুত্ব বুঝে ৪০ বছর বয়সেই শাহনাজ পারভিন ২০১৫ সালে নাটোর মহিলা কলেজে কম্পিউটার বিষয়ে ভর্তি হন। বাকীটুকু ইতিহাস!

এই দারুণ ফলাফলে উচ্ছসিত মা-ছেলে উচ্চ শিক্ষার জন্য সরকারের সকল সহযোগিতা কামনা করেছেন। মা শাহনাজ বলেছেন, ভবিষৎতে উচ্চ শিক্ষার জন্য ভালো কোনো কলেজে ভর্তি হতে চান তিনি। কিন্তু অভাবের সংসারে সাংসারিক কাজ করে লেখাপড়া চালিয়ে নেয়া খুব কঠিন। তাই সরকারি কোনো সহযোগিতা তার স্বপ্ন পূরণ করতে পারে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

এইচএসসিতে মা পেলেন ৪.৮৩, ছেলে পেল ৩.৬৭

আপডেট টাইম : ১১:১৭:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ জুলাই ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ অদম্য আগ্রহের সাথে সামান্য একটু সহযোগিতামূলক মনোভাব, একটু অনুপ্রেরণা পেলে অনেক অসাধ্য কাজই সম্ভব হতে পারে। একসঙ্গে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে মা শাহনাজ পারভিন (৪০) এবং ছেলে রাকিব আমিন সবুজ (২০) এই কথা প্রমাণ করলেন। তারা আরও প্রমাণ করলেন যে, পড়াশোনার কোনো বয়স নেই। এই খুশির খবরে এখন আনন্দে ভাসছে শাহনাজের পরিবার।  মা-ছেলের পাশ করার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর শাহনাজ পারভিনের বাড়িতে ভিড় করছেন এলাকাবাসী।

জানা গেছে, নাটোর মহিলা কলেজ থেকে পরীক্ষা দিয়ে শাহনাজ পারভিন জিপিএ ৪.৮৩ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। আর নাটোর টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ থেকে পরীক্ষা দিয়ে জিপিএ ৩.৬৭ পেয়েছে শাহনাজের ছেলে রাকিব। ছেলের চেয়ে মায়ের ফলাফল ভালো হওয়ায় কোনো আফসোস নেই রাকিবের। সে মায়ের এমন ফলাফলে ভীষণ আনন্দিত।

গণমাধ্যমের কাছে রাকিব বলেছে, ‘আমার রেজাল্টের চেয়ে মায়ের রেজাল্ট ভালো হওয়ায় খুব খুশি হয়েছি। তাছাড়া মায়ের ফলাফল ভাল হওয়ার কারণে পরিবারের সবাই আনন্দিত। ‘

মা শাহনাজ পারভিন বলেন, ‘১৯৯৫ সালে এসএসসিতে দ্বিতীয় বিভাগ নিয়ে পাশ করি। এরপর আর লেখা পড়া করার সুযোগ হয়নি। কিন্তু যখন বুঝলাম লেখা-পাড়ার কোনো বয়স নাই তখন কলেজে ভর্তি হয়ে পড়াশোনায় মনোযোগ দেই। ‘

জানা গেছে,  ১৯৯২ সালে তেলকুপি এলাকার রুহুল আমীনের সাথে বিয়ে হয় শাহনাজ পারভিনের। এরপর পরিবার নিয়ে শহরের নাটোর শহরের মল্লিকহাটি মধ্যপাড়ায় বসবাস করছেন তিনি। বিয়ের পর ১৯৯৫ সালে স্থানীয় একটি স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে দ্বিতীয় বিভাগে পাশ করেন।  অভাবের সংসারের কারণে আর লেখা-পড়া চালিয়ে যেতে পারেননি শাহনাজ পারভিন। এক ছেলে ও এক মেয়ে সন্তানের জননী শাহনাজ স্থানীয় একটি ক্লিনিকে নার্সের চাকরি করে সংসার পরিচালনা করে আসছিলেন। কিন্তু লেখাপড়ার গুরুত্ব বুঝে ৪০ বছর বয়সেই শাহনাজ পারভিন ২০১৫ সালে নাটোর মহিলা কলেজে কম্পিউটার বিষয়ে ভর্তি হন। বাকীটুকু ইতিহাস!

এই দারুণ ফলাফলে উচ্ছসিত মা-ছেলে উচ্চ শিক্ষার জন্য সরকারের সকল সহযোগিতা কামনা করেছেন। মা শাহনাজ বলেছেন, ভবিষৎতে উচ্চ শিক্ষার জন্য ভালো কোনো কলেজে ভর্তি হতে চান তিনি। কিন্তু অভাবের সংসারে সাংসারিক কাজ করে লেখাপড়া চালিয়ে নেয়া খুব কঠিন। তাই সরকারি কোনো সহযোগিতা তার স্বপ্ন পূরণ করতে পারে।