হাওর বার্তা ডেস্কঃ সিরাজদিখান উপজেলার ডুবে যাওয়া বিভিন্ন ইরি ,আমন ধান ও পাট ক্ষেতে শাপলা ব্যাপকভাবে জন্ম নিয়েছে। এছাড়াও এলাকার ইছামতি নদী নালা খাল বিল পানিতে শাপলা ফুল ফুটেছে সৌন্দর্য আর নয়না ভিরাম দৃশ্য নিয়ে। শাপলা ফুল সাধারণত জ্যৈষ্ঠ মাস থেকে শুরু করে কার্তিক মাস পর্যন্ত পাওয়া যায়।
তবে মৌসুমের শেষ অর্থাৎ কার্তিক মাসে তেমন বেশী পাওয়া যায় না।এলাকার শাপলা সংগ্রহকারী কৃষকেরা ভোর বেলা থেকে নৌকা নিয়ে ডুবে যাওয়া জমিতে ও বিলের মধ্যে ঘুরে ঘুরে শাপলা সংগ্রহ করতে শুরু করে এবং শেষ করে দুপুরের দিকে।
জাতীয় ফুল শাপলা। এটি দেখতে যেমন সুন্দর,তেমনি তরকারী হিসেবে এটি খেতেও সুস্বাধু।কেউ খায় সখ করে,আবার কেউ খায় অভাবে পড়ে। অভাবগ্রস্ত বা নিতান্ত গরীব লোকজন এ বর্ষা মৌসুমে জমি থেকে শাপলা তুলে তা দিয়ে ভাজি বা ভর্তা তৈরী করে আহার করে থাকেন। আর শহরে লোকজন সখের বসে এ মৌসুমে ২-৪ দিন শাপলা তরকারী বা ভাজি খেয়ে থাকেন।
আর সেই জীবন্ত শাপলা বিক্রি করে এখন জীবিকা নির্বাহ করছে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার শত পরিবার। কৃষি জমি পানির নীচে থাকায় এ মৌসুমে কৃষকের তেমন কোন কাজ নেই। তাই এলাকার অনেক কৃষক বর্তমানে এ পেশায় জড়িয়ে পড়েছে। এ পেশায় কোন পুজির প্রয়োজন না হওয়ায় বিভিন্ন বয়সের লোক এ পেশায় অংশ নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছে। শাপলা সাধারণত তরকারী হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
উপজেলার লতব্দী ইউনিয়নের চর নিমতলার বিল থেকে শাপলা সংগ্রহকারী রবিউল ইসলাম জানান, এ সময়ে একেক জনে কমপক্ষে ৩০ থেকে সর্বোচ্চ ৪০ মোঠা (৬০পিছ শাপলায় ১ মোঠা ধরা হয়) সংগ্রহ করতে পারে। পাইকাররা আবার সংগ্রহকারীর কাছ থেকে এসব শাপলা সংগ্রহ করে একত্রে করে। সিরাজদিখানের রসুনিয়া, ইমামগঞ্জ ও তালতলায় শাপলার পাইকারী ক্রয় কেন্দ্র রয়েছে। পাইকাররা এখান থেকে শাপলা ক্রয় করে নিয়ে পরে রাতে ঢাকার যাত্রাবাড়ি পাইকারী বাজারে বিক্রি করে থাকে।
উপজেলার চরনিমতলী গ্রামের পাইকার বাবুল খান. আমার সংবাদকে জানান, শাপলা সংগ্রহকারীদের কাছ থেকে প্রতিদিন প্রায় দেড় হাজার থেকে দুই হাজার মোঠা শাপলা ক্রয় করে থাকি। সংগ্রহকারীদের কাছ থেকে এক মোঠা শাপলা ১০ টাকা দরে ক্রয় করি। তারপর গাড়ি ভাড়া গড়ে ৩ টাকা, লেবার ১ টাকা, আড়ৎ দাড়ি খরচ ২ টাকাসহ মোট ১৭ থেকে ১৮ টাকা খরচ পড়ে।
যাত্রাবাড়ি আড়ৎ এ শাপলা বিক্রি করে ২৫ থেকে ২৭ টাকা করে মোঠা। শাপলা তরকারী হিসাবে খুবই মজাদার একটি খাদ্য। গত কয়েক বছর যাবৎ এ ব্যবসাটি এলাকায় বেশ প্রশার লাভ করেছে।এ থেকে উপার্জিত অর্থ দিয়ে এখন অনেকেই জীবিকা নির্বাহ করে সংসার চালাচ্ছেন।