ঢাকা ০৪:৪৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জামালপুরে বন্যায় দুর্ভোগ চরমে, পানি বাড়বে আরও তিন দিন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৭:৩৭:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ জুলাই ২০১৭
  • ২২৯ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ  টইটুম্বুর যমুনার পানি উপচে পড়ছে লোকালয়ে। প্রতি দিনই নতুন নতুন এলাকায় ঢুকে পড়ছে জলের ¯্রােত। ফসলহারা মানুষের কাজ না থাকায় নেই আয়ের পথও। এই দুর্ভোগ লাঘবের জন্য অপেক্ষা করে থাকা মানুষদের জন্য অপেক্ষা করছে আরও দুর্গতি। কারণ পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, আগামী কয়দিনে পানি কমবে না, বরং আরও বাড়বে।

বুধবার করা হিসাব অনুযায়ী জামালপুরে যমুনা বইছে বিপদসীমার  ৮০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে। এতে ছয় উপজেলা প্রায় দেড় লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নব কুমার চৌধুরী জানিয়েছেন আগামী ১৫ জুলাই পর্যন্ত পানি বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। আর এই পূর্বাভাস সত্য হলে নদী তীরের মানুষদের পাশাপাশি বহু দূরের জনপদও তলিয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

গত কয়েকদিন ধরে বন্যা কবলিত এলাকার বিভিন্ন রাস্তা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় উপজেলা সদরের সাথে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে কয়েকটি উপজেলার। এসব এলাকায় বিশুদ্ধ খাবার পানি ও  গো-খাদ্যের সংকট দেখা দেয়ায় বাড়ি-ঘর ছেড়ে গৃহপালিত পশু-পাখি নিয়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সেতু ও উঁচু এলাকায় স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিতে শুরু করেছে বানভাসী মানুষরা।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শহিদুর ইসলাম জানিয়েছেন, ছয় উপজেলায় ১৬১টি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, বন্যার তলিয়ে গেছে ৭৭ হেক্টর আমন বীজতলা, ১৩৩ হেক্টর আউশ ধান, ৪৫০ হেক্টর সবজি ও কয়েক হেক্টর জমির পাট।

চারপাশে বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় মাঠে কোন কাজ না থাকায় বিপাকে পড়েছে শ্রমজীবী মানুষ। দুই বেলা খাবার যোগাড় করতে পারছে না এসব পরিবারের কর্তারা। ফলে এক বেলা খেয়ে অনেক পরিবারকে দিন কাটাতে হচ্ছে।

বন্যা কবলিত অনেক পরিবার এখনও অনেক পরিবার সরকারি ত্রাণ সহায়তা না পাওয়ায় খাদ্য সংকটে রয়েছে তারা।

যদিও জেলা প্রশাসক আহমেদ কবির জানিয়েছেন, বন্যার্তদের জন্য এখন পর্যন্ত ১৩০ মেট্রিক টন চাল, নগদ দুই লাখ ২০ হাজার টাকা ও তিন হাজার দুইশ প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়া বন্যা মোকাবেলার জন্য সব ধরণের প্রস্তুতিসহ প্রয়োজনীয় ত্রানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

জেলা প্রশাসক জানান, আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখার পাশাপাশি বন্যা কবলিত এলাকার প্রতিটি পরিবার যাতে সরকারি ত্রাণ সহায়তা পায় সেজন্য সকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সরকারি কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিদের বলা হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

জামালপুরে বন্যায় দুর্ভোগ চরমে, পানি বাড়বে আরও তিন দিন

আপডেট টাইম : ০৭:৩৭:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ জুলাই ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ  টইটুম্বুর যমুনার পানি উপচে পড়ছে লোকালয়ে। প্রতি দিনই নতুন নতুন এলাকায় ঢুকে পড়ছে জলের ¯্রােত। ফসলহারা মানুষের কাজ না থাকায় নেই আয়ের পথও। এই দুর্ভোগ লাঘবের জন্য অপেক্ষা করে থাকা মানুষদের জন্য অপেক্ষা করছে আরও দুর্গতি। কারণ পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, আগামী কয়দিনে পানি কমবে না, বরং আরও বাড়বে।

বুধবার করা হিসাব অনুযায়ী জামালপুরে যমুনা বইছে বিপদসীমার  ৮০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে। এতে ছয় উপজেলা প্রায় দেড় লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নব কুমার চৌধুরী জানিয়েছেন আগামী ১৫ জুলাই পর্যন্ত পানি বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। আর এই পূর্বাভাস সত্য হলে নদী তীরের মানুষদের পাশাপাশি বহু দূরের জনপদও তলিয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

গত কয়েকদিন ধরে বন্যা কবলিত এলাকার বিভিন্ন রাস্তা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় উপজেলা সদরের সাথে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে কয়েকটি উপজেলার। এসব এলাকায় বিশুদ্ধ খাবার পানি ও  গো-খাদ্যের সংকট দেখা দেয়ায় বাড়ি-ঘর ছেড়ে গৃহপালিত পশু-পাখি নিয়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সেতু ও উঁচু এলাকায় স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিতে শুরু করেছে বানভাসী মানুষরা।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শহিদুর ইসলাম জানিয়েছেন, ছয় উপজেলায় ১৬১টি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, বন্যার তলিয়ে গেছে ৭৭ হেক্টর আমন বীজতলা, ১৩৩ হেক্টর আউশ ধান, ৪৫০ হেক্টর সবজি ও কয়েক হেক্টর জমির পাট।

চারপাশে বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় মাঠে কোন কাজ না থাকায় বিপাকে পড়েছে শ্রমজীবী মানুষ। দুই বেলা খাবার যোগাড় করতে পারছে না এসব পরিবারের কর্তারা। ফলে এক বেলা খেয়ে অনেক পরিবারকে দিন কাটাতে হচ্ছে।

বন্যা কবলিত অনেক পরিবার এখনও অনেক পরিবার সরকারি ত্রাণ সহায়তা না পাওয়ায় খাদ্য সংকটে রয়েছে তারা।

যদিও জেলা প্রশাসক আহমেদ কবির জানিয়েছেন, বন্যার্তদের জন্য এখন পর্যন্ত ১৩০ মেট্রিক টন চাল, নগদ দুই লাখ ২০ হাজার টাকা ও তিন হাজার দুইশ প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়া বন্যা মোকাবেলার জন্য সব ধরণের প্রস্তুতিসহ প্রয়োজনীয় ত্রানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

জেলা প্রশাসক জানান, আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখার পাশাপাশি বন্যা কবলিত এলাকার প্রতিটি পরিবার যাতে সরকারি ত্রাণ সহায়তা পায় সেজন্য সকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সরকারি কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিদের বলা হয়েছে।