হাওর বার্তা ডেস্কঃ জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর)-র প্রধান ফিলিপ্পো গ্রান্দি রোহিঙ্গা মুসলিমদের নাগরিকত্ব দিতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। শুক্রবার তিনি এ আহ্বান জানান বলে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে।
রাখাইন প্রদেশটি মিয়ানমারের পশ্চিমে অবস্থিত। ২০১২ সাল থেকে একাধিক সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় কয়েক হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম নিহত ও প্রায় দেড় লাখ ঘর-বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। বৌদ্ধ শাসিত মিয়ানমারের দীর্ঘদিনের সামরিক শাসন অবসানের পর এসব দাঙ্গা শুরু হয়।
কিছুদিন আগে রোহিঙ্গা যোদ্ধাদের একটি ক্যাম্প উচ্ছেদের সময় তিন সেনা ও এক গ্রাম প্রশাসক নিহত হওয়ার পর পুনরায় উত্তেজনা শুরু হয়।
ব্যাংককে গ্রান্দি সাংবাদিকদের বলেন, মুসলিম সম্প্রদায়কে নাগরিকত্ব দেওয়ার কাজ শুরু করা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ দীর্ঘদিন ধরেই তারা নাগরিকত্ব বঞ্চিত রয়েছেন।
মিয়ানমার প্রায় দশ রাখ রোহিঙ্গা মুসলিমকে বাংলাদেশ থেকে অবৈধ অভিবাসী বলে দাবি করে আসছে। কয়েক প্রজন্ম ধরে সেখানে রোহিঙ্গা পরিবার বাস করলেও তাদের নাগরিকত্ব দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছে দেশটির সরকার।
গ্রান্দি জানান, এ অঞ্চলের সংঘাত নিয়ে আরও তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। তিনি বলেন, মিয়ানমার ইউনিয়নের সবচেয়ে দরিদ্র্য প্রদেশ হচ্ছে রাখাইন। অঞ্চলটির উন্নয়নে দ্রুত বিনিয়োগ দরকার, এটা দুই সম্প্রদায়কেই মেনে নিতে হবে।
গত বছর অক্টোবরে বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে মিয়ানমারের একটি চৌক্তিতে সশ্রস্ত রোহিঙ্গাদের হামলায় কয়েকজন সীমান্ত পুলিশ নিহত হন। এরপর মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রাখাইন প্রদেশে বিশেষ অভিযান শুরু করে। জাতিসংঘের মতে, এ অভিযানে কয়েকশ রোহিঙ্গা মুসলিম নিহত হয়েছেন। সহস্রাধিক বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এবং অন্তত ৭৫ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন।
সর্বশেষ সহিংসতার ঘটনায় চলতি সপ্তাহে রাখাইনে বৌদ্ধদের গণপিটুনিতে এক রোহিঙ্গা মুসলিম নিহত ও ছয়জন আহত হয়েছেন।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর এ অভিযানে মানবতাবিরোধী অপরাধ তদন্তের জন্য জাতিসংঘ একটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং অভিযান শুরু করেছে। সু চির নেতৃত্বাধীন মিয়ানমার সরকার জাতিসংঘের এমন অভিযোগ অস্বীকার এবং অভিযানটির বিরোধিতা করে আসছে।
থাইল্যান্ডের মিয়ানমার-থাই সীমান্তবর্তী এলাকায় ৯টি ক্যাম্পে মিয়ানমারের লক্ষাধিক শরণার্থী বাস করছেন। এসব শরণার্থীরা সংখ্যালঘু কারেন সম্প্রদায়ের। যারা গত ৩০ বছরে সংঘাতের মুখে মিয়ানমার ছেয়ে পালিয়ে থাইল্যান্ডে আশ্রয় নিয়েছেন।
থাই সরকার এবস শরণার্থী ক্যাম্প থেকে আগামীতে ২০০জনকে মিয়ানমারে ফিরিয়ে দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। গ্রান্দি জানান, এর অংশ হিসেবে অক্টোবরে ৭১জনকে মিয়ানমারে পাঠানো হবে। সূত্র: রয়টার্স।