ঢাকা ০৩:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ২৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভারতের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে চীন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৪:১৪:০৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ জুলাই ২০১৭
  • ২৭৭ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ভারতের সঙ্গে চলমান সীমান্ত বিরোধের ক্ষেত্রে চীন কঠোর অবস্থান নিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ওয়াশিংটনের সঙ্গে নয়াদিল্লির ঘনিষ্ঠতাকে বেইজিং ভালো চোখে দেখছে না এবং তারই বহিঃপ্রকাশ হিসেবে এ বিরোধের ক্ষেত্রে চীন কঠোর অবস্থান নিয়েছে বলে ভারতীয় বিশ্লেষকদের বরাত দিয়ে দাবি করছে মার্কিন দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্ট। অতীতেও চীন-ভারত সীমান্ত বিরোধ ঘটেছে তবে বর্তমানে চলমান বিরোধ দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে সংঘাতের রূপ নিতে পারে বলে আশংকা ব্যক্ত করেছেন বিশ্লেষকরা।

চীন-ভারত অভিন্ন সীমান্তে মোতায়েন উভয় পক্ষের সেনারা সাধারণত অস্ত্র বহন করেন না। সম্ভাব্য উত্তেজনা যেন সহিংস রূপ না নিতে পারে তারই সতর্কতা হিসেবে এমনটি করা হয়। তা সত্ত্বেও সিকিম সীমান্তে চীন ও ভারতের সেনাদের মধ্যে ঘটেছে ‘ধাক্কাধাক্কি’।  এতে জড়িয়ে ধরে পেশি শক্তির প্রয়োগ করে প্রতিপক্ষকে হটিয়ে দেয়ার প্রচেষ্টাকে ‘ধাক্কাধাক্কি’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

গত মাসের শেষ দিকে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যখন হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অপ্রত্যাশিতভাবে জড়িয়ে ধরছেন তখন চীন-ভারত সীমান্তে ‘ধাক্কাধাক্কি’র ঘটনা ঘটছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ভারতের ঝুঁকে পড়াকে চীন ভালোভাবে গ্রহণ করেনি সেটা প্রকাশ করার জন্য সীমান্ত সংকটের সৃষ্টি হয়েছে- ভারতীয় বিশ্লেষকরা এমন দাবি করেছেন।

এ বক্তব্য দিয়েছেন গেটওয়ে হাউস নামে ভারতভিত্তিক পররাষ্ট্রনীতি সংক্রান্ত গবেষণা প্রতিষ্ঠানের পরিচালক সামির পাতিল।তিনি বলেন, মার্কিন-ভারত সম্পর্ক নিয়ে পরিষ্কার অসন্তোষ প্রকাশ করছে চীন।

দোকালাম এলাকায় রাস্তা বানানোর জন্য চীনা ট্রাক এবং সেনা ঢোকার ঘটনাকে কেন্দ্র করে চলমান সংকটের সূচনা হয়। সিকিম-চীন সীমান্তের এ অঞ্চলকে ভুটানের ভূখণ্ড মনে করে ভারত ও ভুটান। এখানে ত্রিদেশীয় সঠিক সীমান্ত রেখা নিয়ে চীনের সঙ্গে মতপার্থক্য রয়েছে ভারতের। ভারত এবং ভুটান একে ভুটানের এলাকা হিসেবে দাবি করলেও চীন একে নিজ ভূখণ্ড হিসেবে গণ্য করছে।

এক্ষেত্রে ভারতের ভূমিকাকে ব্রিটেনের সঙ্গে ১৮৯০ সালের চুক্তির লঙ্ঘন হিসেবে মনে করছে চীন। এ চুক্তি অনুযায়ী ওই এলাকার ওপর চীনের অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ভারতের নেতৃবৃন্দ ওই চুক্তির প্রতি সমর্থন ঘোষণা করেছিলেন।

চীনা পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেছেন, দোকালাম সব সময়ই চীনের অংশ ছিল। চীনের রাষ্ট্রীয় দৈনিক গ্লোবাল টাইমস চলমান বিরোধ নিয়ে কঠোর সম্পাদকীয় প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, ভারতীয় সেনাবাহিনী মর্যাদা বজায় রেখে নিজ এলাকায় ফিরে যেতে পারে আর না হয় তাদেরকে তাড়িয়ে দেবে চীনা সেনারা।

সাংহাই মিউনিসিপাল সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের ওয়াং দিহুয়া বলেছেন, সীমান্তে সেনা মোতায়েন বাড়িয়ে চলেছে ভারত। এর মাধ্যমে চীনা সক্ষমতাকে গুরুত্বের সঙ্গে নিতে চাইছে নয়াদিল্লি। এ ছাড়া, নিজ ভূখণ্ড রক্ষায় চীনের দৃঢ় মনোভাবকেও খাটো করে দেখতে চাইছে না ভারত। সংঘাতের মূল্য কি হবে তাও অনুমান করতে ভারত ব্যর্থ হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।

আর এ পরিপ্রেক্ষিতে পাতিল বলেন, চীন খুবই কঠোর অবস্থান নিয়েছে এবং এ অবস্থান মেনে নেয়ার মতো অবকাশ ভারতের নেই।

সূত্র: পার্স টুডে

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ভারতের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে চীন

আপডেট টাইম : ০৪:১৪:০৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ জুলাই ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ভারতের সঙ্গে চলমান সীমান্ত বিরোধের ক্ষেত্রে চীন কঠোর অবস্থান নিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ওয়াশিংটনের সঙ্গে নয়াদিল্লির ঘনিষ্ঠতাকে বেইজিং ভালো চোখে দেখছে না এবং তারই বহিঃপ্রকাশ হিসেবে এ বিরোধের ক্ষেত্রে চীন কঠোর অবস্থান নিয়েছে বলে ভারতীয় বিশ্লেষকদের বরাত দিয়ে দাবি করছে মার্কিন দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্ট। অতীতেও চীন-ভারত সীমান্ত বিরোধ ঘটেছে তবে বর্তমানে চলমান বিরোধ দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে সংঘাতের রূপ নিতে পারে বলে আশংকা ব্যক্ত করেছেন বিশ্লেষকরা।

চীন-ভারত অভিন্ন সীমান্তে মোতায়েন উভয় পক্ষের সেনারা সাধারণত অস্ত্র বহন করেন না। সম্ভাব্য উত্তেজনা যেন সহিংস রূপ না নিতে পারে তারই সতর্কতা হিসেবে এমনটি করা হয়। তা সত্ত্বেও সিকিম সীমান্তে চীন ও ভারতের সেনাদের মধ্যে ঘটেছে ‘ধাক্কাধাক্কি’।  এতে জড়িয়ে ধরে পেশি শক্তির প্রয়োগ করে প্রতিপক্ষকে হটিয়ে দেয়ার প্রচেষ্টাকে ‘ধাক্কাধাক্কি’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

গত মাসের শেষ দিকে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যখন হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অপ্রত্যাশিতভাবে জড়িয়ে ধরছেন তখন চীন-ভারত সীমান্তে ‘ধাক্কাধাক্কি’র ঘটনা ঘটছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ভারতের ঝুঁকে পড়াকে চীন ভালোভাবে গ্রহণ করেনি সেটা প্রকাশ করার জন্য সীমান্ত সংকটের সৃষ্টি হয়েছে- ভারতীয় বিশ্লেষকরা এমন দাবি করেছেন।

এ বক্তব্য দিয়েছেন গেটওয়ে হাউস নামে ভারতভিত্তিক পররাষ্ট্রনীতি সংক্রান্ত গবেষণা প্রতিষ্ঠানের পরিচালক সামির পাতিল।তিনি বলেন, মার্কিন-ভারত সম্পর্ক নিয়ে পরিষ্কার অসন্তোষ প্রকাশ করছে চীন।

দোকালাম এলাকায় রাস্তা বানানোর জন্য চীনা ট্রাক এবং সেনা ঢোকার ঘটনাকে কেন্দ্র করে চলমান সংকটের সূচনা হয়। সিকিম-চীন সীমান্তের এ অঞ্চলকে ভুটানের ভূখণ্ড মনে করে ভারত ও ভুটান। এখানে ত্রিদেশীয় সঠিক সীমান্ত রেখা নিয়ে চীনের সঙ্গে মতপার্থক্য রয়েছে ভারতের। ভারত এবং ভুটান একে ভুটানের এলাকা হিসেবে দাবি করলেও চীন একে নিজ ভূখণ্ড হিসেবে গণ্য করছে।

এক্ষেত্রে ভারতের ভূমিকাকে ব্রিটেনের সঙ্গে ১৮৯০ সালের চুক্তির লঙ্ঘন হিসেবে মনে করছে চীন। এ চুক্তি অনুযায়ী ওই এলাকার ওপর চীনের অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ভারতের নেতৃবৃন্দ ওই চুক্তির প্রতি সমর্থন ঘোষণা করেছিলেন।

চীনা পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেছেন, দোকালাম সব সময়ই চীনের অংশ ছিল। চীনের রাষ্ট্রীয় দৈনিক গ্লোবাল টাইমস চলমান বিরোধ নিয়ে কঠোর সম্পাদকীয় প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, ভারতীয় সেনাবাহিনী মর্যাদা বজায় রেখে নিজ এলাকায় ফিরে যেতে পারে আর না হয় তাদেরকে তাড়িয়ে দেবে চীনা সেনারা।

সাংহাই মিউনিসিপাল সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের ওয়াং দিহুয়া বলেছেন, সীমান্তে সেনা মোতায়েন বাড়িয়ে চলেছে ভারত। এর মাধ্যমে চীনা সক্ষমতাকে গুরুত্বের সঙ্গে নিতে চাইছে নয়াদিল্লি। এ ছাড়া, নিজ ভূখণ্ড রক্ষায় চীনের দৃঢ় মনোভাবকেও খাটো করে দেখতে চাইছে না ভারত। সংঘাতের মূল্য কি হবে তাও অনুমান করতে ভারত ব্যর্থ হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।

আর এ পরিপ্রেক্ষিতে পাতিল বলেন, চীন খুবই কঠোর অবস্থান নিয়েছে এবং এ অবস্থান মেনে নেয়ার মতো অবকাশ ভারতের নেই।

সূত্র: পার্স টুডে