কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার উন্নয়নে সবকিছু করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য শিক্ষা নিশ্চিত করা এবং এই লক্ষ্য অর্জন করতে হলে সমাজের কোনো অংশকে পেছনে ফেলে রাখার সুযোগ নেই।’
রবিবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় সংসদ ভবন কার্যালয়ে কওমি মাদ্রাসার কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় আলেম তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ আশ্বাস দেন। আলেম প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন আল্লামা আশরাফ আলী। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
গত ১১ এপ্রিল গণভবনে আলেমদের এক সমাবেশে কওমি মাদ্রাসার সর্বোচ্চ স্তর দাওরায়ে হাদিসকে মাস্টার্সের সমমান ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর এই স্বীকৃতির ব্যাপারে সরকারি প্রজ্ঞাপনও জারি হয়। তবে এখনো জাতীয় সংসদে এ সংক্রান্ত আইন পাস হয়নি।
অধিবেশনে কওমি স্বীকৃতির আইন পাসের দাবি নিয়ে আলেমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে যান। শেখ হাসিনা বলেন, বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী কওমি মাদ্রাসায় পড়াশোনা করে এবং তাদেরকে শিক্ষার মূলধারায় নিয়ে আসতে হবে।
কওমি মাদ্রাসার চূড়ান্ত ডিগ্রিকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রির সমমানের স্বীকৃতি দেয়ার জন্য আলেমরা প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। তারা বলেন, ‘এটি একটি যুগান্তকারী ও ঐতিহাসিক ঘটনা। ইতিহাসের পাতায় একথা সোনালী হরফে লেখা থাকবে।’ আলেমরা দেশে ইসলামের বিকাশে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের কথা স্মরণ করেন।
এ প্রসঙ্গে তারা রাজধানীর কাকরাইলে তাবলিগ জামায়াতের ‘মারকাজ’ প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর জমি দেয়ার কথা উল্লেখ করেন। বঙ্গবন্ধু বিশ্ব ইজতেমার জন্য তুরাগ নদের তীরে জমি বরাদ্দ দিয়েছেন বলেও তারা উল্লেখ করেন।
আলেমরা বিশ্ব ইজতেমার জন্য ১৬০ একর জমি প্রদানসহ ইসলামের বিকাশে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য শেখ হাসিনারও প্রশংসা করেন। প্রধানমন্ত্রী সরকারের সন্ত্রাসবিরোধী প্রচারে অংশ নিতে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে আলেম-ওলামাদের প্রতি আহ্বান জানান।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁ কামাল, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম ও মুখ্য সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
আলেমদের প্রতিনিধি দলে ছিলেন আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ, আল্লামা আবদুল কুদ্দুস, মাওলানা মাহফুজুল হক, মুফতি ফয়জুল্লাহ, মাওলানা আবদুল বাছেস বরকতপুরী, মুফতি নূরুল আমিন, মাওলানা আনাস মাদানী, মাওলানা নূরুল ইসলামও মাওলানা উসামা আমিন।
বৈঠকে আল্লামা শাহ আহমদ শফীর পক্ষ থেকে একটি চিঠি প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করা হয়। যাতে কওমি মাদ্রাসা শিক্ষার ঐতিহ্য অবদান ও স্বকীয়তার কথা বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়।