আজ ১৩তম তারাবিতে সূরা কাহাফের দশম রুকুর শেষার্ধ থেকে শুরু করে পূর্ণ সূরা পঠিত হবে। সঙ্গে সূরা মরিয়ম এবং সূরা ত্বহা পুরোটুকুই পড়া হবে। পারা হিসেবে আজ পড়া হবে ১৬তম পারা। পাঠকের জন্য আজকের তারাবিতে পঠিত অংশের মূল বিষয়বস্তু তুলে ধরা হলো
সূরা কাহাফ : ৭৫-১১০
দশম রুকর শেষার্ধ, ৭৫ থেকে ৮২ নম্বর আয়াতে হজরত মূসা (আ.) এবং হজরত খিজির (আ.) এর বাকি ঘটনা বলা হয়েছে। ১১তম রুকু, ৮৩ থেকে ১০১ নম্বর আয়াতে বিশ^সম্রাট হজরত জুলকারনাইনের ঘটনা এবং এ থেকে আমাদের শিক্ষণীয় কী তা বলা হয়েছে। বলা হয়েছে ইয়াজুজ-মাজুজের কথাও। ১২তম তথা শেষ রুকু, ১০২ থেকে ১১০ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে ওই সব মানুষের কথা, যাদের আখেরাতে পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত ও ব্যর্থ হবে। এদের পরিচয় কী এবং এ শ্রেণীর বাইরে যারা তাদের প্রতিদান বলেই সূরা শেষ করা হয়েছে।
সূরা মরিয়ম : ১-৯৮
সূরা মরিয়ম নাজিল হয়েছে পবিত্র মক্কা নগরীতে। রুকু ছয়টি এবং আয়াত সংখ্যা ৯৮। আজকের তারাবিতে পূর্ণ সূরাই পঠিত হবে।
প্রথম রুকু, ১ থেকে ১৫ নম্বর আয়াত। সূরা শুরুই হয়েছে আল্লাহর নবী হজরত জাকারিয়া (আ.) এর সন্তানলাভের দোয়া দিয়ে। আল্লাহ তায়ালা তার দোয়া কবুল করলেন এবং ইয়াহইয়া নামে একজন পুত্র সন্তান দানের সুসংবাদ দিলেন। এ সন্তান পরে উলুল আজম পয়গম্বর হয়েছিলেন। দ্বিতীয় রুকু, ১৬ থেকে ৪০ নম্বর আয়াত। হজরত মরিয়ম (আ.) কীভাবে হজরত ঈসা (আ.) কে প্রসব করেছেন, প্রসব-পরবর্তী পরিস্থিতি কেমন ছিল তা বলা হয়েছে বিস্তারিতভাবে।
তৃতীয় রুকু, ৪১ থেকে ৫০ নম্বর আয়াত। এখানে হজরত ইবারহিম (আ.) এর কথা বলা হয়েছে। তিনি তার বাবার সঙ্গে কীভাবে দাওয়াতি কাজ করেছেন তা জানানোই মূল উদ্দেশ্য ছিল বলে মনে হয়। চতুর্থ রুকু, ৫১ থেকে ৬৫ নম্বর আয়াতে হজরত মুসা, ইসমাইল, ইদরিস এবং নূহ (আ.) এর কথা সংক্ষেপে উল্লেখ করা হয়েছে।
পঞ্চম ও ষষ্ঠ তথা শেষ রুকু, ৬৬ থেকে ৯৮ নম্বর আয়াত। এবার আল্লাহপাক বলছেন, আগের এতসব উদাহরণ মানুষের সামনে প্রোজ্জ্বল, তারপরও তারা সত্যের প্রতি ঈমান আনে না! যারা সত্যের প্রতি ঈমান রাখে না তাদের পরকাল কেমন হবে, আর যারা সত্যের প্রতি বিশ^াসী তাদের পরকাল কেমন হবেÑ এ দুই দলের আলোচনার মাধ্যমে সূরা শেষ করা হয়েছে।
সূরা ত্বহা : ১-১৩৫
আগের সূরার মতো এ সূরাও মক্কায় নাজিল হয়েছে। এর আয়াত সংখ্যা ১৩৫ এবং রুকু মোট আটটি।
প্রথম রুকু, ১ থেকে ২৪ নম্বর আয়াতে কোরাআনের মাহাত্ম্য বলার পর হজরত মুসা (আ.) এর আলোচনা শুরু হয়েছে। তিনি কীভাবে নবুয়তি লাভ করেন সে ঘটনা বলা হয়েছ এখানে। দ্বিতীয় রুকু, ২৫ থেকে ৫৪ নম্বর আয়াতে হজরত মুসা নবুয়ত পাওয়ার পর তার কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য কী কী পদক্ষেপ নিয়েছেন তা বলা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা মুসা (আ.) কে এও স্মরণ করিয়ে দিয়েছে কেমন ছিল তার অতীত। কীভাবে আল্লাহ তায়ালা জন্মের আগে থেকেই তাকে হেফাজত করে আসছিলেন। অতএব আল্লাহর কাজে তাকে আরও সতর্ক এবং সচেতন হতে হবে। তৃতীয় ও চতুর্থ রুকু, ৫৫ থেকে ১০৪ নম্বর আয়াতে আগের রুকুর ধারাবাহিকতায় আলোচনা এগিয়ে নেয়া হয়েছে। মুসা (আ.) এর দাওয়াতের পদ্ধতি এবং তার উম্মতের প্রকৃতিও বর্ণনা করা হয়েছে।
ষষ্ঠ রুকু, ১০৫ থেকে ১১৫ নম্বর আয়াতে যারা জানতে চায় কেয়ামত কবে হবে তাদের প্রশ্নের জবাব এবং হেদায়াতি নসিহত করা হয়েছে। সপ্তম রুকু, ১১৬ থেকে ১২৮ নম্বর আয়াতে হরজত আদম এবং ইবলিসের ঘটনা বলা হয়েছে। এর আগে কয়েকটি সূরায় এ বিষয়ে আলোচনা এসেছে। বারবার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তির কারণ হলো মানুষকে সতর্ক ও সচেতন করা। এরপরও যারা সতর্ক হবে না, শয়তানের ধোঁকায় পড়ে জীবন শেষ করবে তাদের আখেরাতের জীবনের ভয়াবহতা উল্লেখ করা হয়েছে। অষ্টম রুকু, ১২৯ থেকে ১৩৫ নম্বর আয়াতে মোমিনদের উদ্দেশ্যে অল্প নসিহত করে আবার পাপীদের হাশরের অবস্থা বলেই সূরা শেষ করা হয়েছে।