ঢাকা ০৮:১৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সোনালী ব্যাংকের ২০টি শাখার অবস্থা নাজুক

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:১৯:৫৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ জুন ২০১৭
  • ৩৩৬ বার

সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বলেছেন, সোনালী ব্যাংকের ২০টি শাখার অবস্থা খুবই নাজুক। যেখানে প্রায় ৮৪ শতাংশ খেলাপি ঋণ রয়েছে। এছাড়া ৫টি শাখার খেলাপি ঋণ ৫৪ শতাংশ।

সোনালী ব্যাংকের সর্বশেষ অবস্থা জানাতে বুধবার বিকেলে রাজধানীর মতিঝিলে ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘সোনালী ব্যাংকের কথা আসলেই ঘুরেফিরে হলমার্কের কথা উঠে আসে। হলমার্ক যে পরিমাণ ঋণ নিয়েছে তার বিপরীতে সমপরিমাণে সম্পদ নেই। মূলত এখানে ঋণ বিতরণ করা হয়নি, হয়েছে লুণ্ঠন। আর এ কারণেই ব্যাংকটির প্রকৃত খেলাপি ঋণ প্রায় ৫০ শতাংশ ছাড়িয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘সোনালী ব্যাংকে বর্তমানে আমানত আছে ১ লাখ কোটি টাকা। এর মধ্যে ঋণ বিতরণ করা হয়েছে ৩৮ হাজার কোটি টাকা। বর্তমানে ব্যাংকটির দৃশ্যমান খেলাপি ঋণ ১০ হাজার কোটি টাকা। ৭ হাজার কোটি টাকা অবলোপন করা হয়েছে। আরো ২ হাজার কোটি টাকা পুনঃতফসিলের আর তা আদালতে রিটের কারণে আটকে আছে। ৩৮ হাজার কোটি টাকার মধ্যে ১৯ হাজার কোটি টাকা নেই। এখন যেভাবে হোক ব্যাংকটির খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমাতে হবে।’

খেলাপি ঋণের কারণ উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ‘কিছু দুষ্ট ঋণগ্রহীতার কাছে ব্যাংকের টাকা আটকে আছে। এটা বাদ দিলে মোটের উপরে কিন্তু ঋণ খেলাপি খুব বেশি না। মূল সমস্যা হচ্ছে বড় শাখায় বড় ঋণগ্রহীতাদের কাছে ঋণগুলো আটকে থাকা। তবে ঋণ আদায়ে নানারকম পদ্ধতি আছে। সুদ মওকুফ পদ্ধতি, পুনঃ তফসিল পদ্ধতি এবং আরেকটা পদ্ধতি মামলা।’

ওবায়েদ উল্লাহ বলেন, ‘ক্ষুদ্র ঋণ গ্রহীতাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হলে সফলতা পাওয়া যায়। এছাড়া টাকা আদায়ের হারও ভালো। কিন্তু যখন বড় ঋণগ্রহীতার কাছ থেকে টাকা আদায় করতে যাওয়া হয়, তখন আমরা খুবই অসহায় হয়ে পড়ি। আমরা রিটের আশ্রয় নেই। তবে রিটের চাপ থেকে আমরা বের হতে পারি না।’

তিনি বলেন, ‘আগে আদালতের রিট থাকা ঋণগুলো নিয়মিত দেখানো হতো। এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশে তা খেলাপি দেখানো হচ্ছে। এর ফলে ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ বেড়েছে। এ ছাড়া আগে নিয়মিত করা প্রায় ৩০০ কোটি টাকার ঋণ এবং নতুন করে আরো ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকার ঋণ খেলাপি হয়েছে।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

সোনালী ব্যাংকের ২০টি শাখার অবস্থা নাজুক

আপডেট টাইম : ১১:১৯:৫৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ জুন ২০১৭

সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বলেছেন, সোনালী ব্যাংকের ২০টি শাখার অবস্থা খুবই নাজুক। যেখানে প্রায় ৮৪ শতাংশ খেলাপি ঋণ রয়েছে। এছাড়া ৫টি শাখার খেলাপি ঋণ ৫৪ শতাংশ।

সোনালী ব্যাংকের সর্বশেষ অবস্থা জানাতে বুধবার বিকেলে রাজধানীর মতিঝিলে ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘সোনালী ব্যাংকের কথা আসলেই ঘুরেফিরে হলমার্কের কথা উঠে আসে। হলমার্ক যে পরিমাণ ঋণ নিয়েছে তার বিপরীতে সমপরিমাণে সম্পদ নেই। মূলত এখানে ঋণ বিতরণ করা হয়নি, হয়েছে লুণ্ঠন। আর এ কারণেই ব্যাংকটির প্রকৃত খেলাপি ঋণ প্রায় ৫০ শতাংশ ছাড়িয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘সোনালী ব্যাংকে বর্তমানে আমানত আছে ১ লাখ কোটি টাকা। এর মধ্যে ঋণ বিতরণ করা হয়েছে ৩৮ হাজার কোটি টাকা। বর্তমানে ব্যাংকটির দৃশ্যমান খেলাপি ঋণ ১০ হাজার কোটি টাকা। ৭ হাজার কোটি টাকা অবলোপন করা হয়েছে। আরো ২ হাজার কোটি টাকা পুনঃতফসিলের আর তা আদালতে রিটের কারণে আটকে আছে। ৩৮ হাজার কোটি টাকার মধ্যে ১৯ হাজার কোটি টাকা নেই। এখন যেভাবে হোক ব্যাংকটির খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমাতে হবে।’

খেলাপি ঋণের কারণ উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ‘কিছু দুষ্ট ঋণগ্রহীতার কাছে ব্যাংকের টাকা আটকে আছে। এটা বাদ দিলে মোটের উপরে কিন্তু ঋণ খেলাপি খুব বেশি না। মূল সমস্যা হচ্ছে বড় শাখায় বড় ঋণগ্রহীতাদের কাছে ঋণগুলো আটকে থাকা। তবে ঋণ আদায়ে নানারকম পদ্ধতি আছে। সুদ মওকুফ পদ্ধতি, পুনঃ তফসিল পদ্ধতি এবং আরেকটা পদ্ধতি মামলা।’

ওবায়েদ উল্লাহ বলেন, ‘ক্ষুদ্র ঋণ গ্রহীতাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হলে সফলতা পাওয়া যায়। এছাড়া টাকা আদায়ের হারও ভালো। কিন্তু যখন বড় ঋণগ্রহীতার কাছ থেকে টাকা আদায় করতে যাওয়া হয়, তখন আমরা খুবই অসহায় হয়ে পড়ি। আমরা রিটের আশ্রয় নেই। তবে রিটের চাপ থেকে আমরা বের হতে পারি না।’

তিনি বলেন, ‘আগে আদালতের রিট থাকা ঋণগুলো নিয়মিত দেখানো হতো। এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশে তা খেলাপি দেখানো হচ্ছে। এর ফলে ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ বেড়েছে। এ ছাড়া আগে নিয়মিত করা প্রায় ৩০০ কোটি টাকার ঋণ এবং নতুন করে আরো ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকার ঋণ খেলাপি হয়েছে।’