তারেকের পাশে আবারো বিতর্কিতরা

বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পিছু ছাড়ছে না দলের বিতর্কিতরা। দলের গুরুত্বপূর্ণ কোনো পদ-পদবীতে না থাকলেও প্রভাব বিস্তারে থাকছেন তারা সর্বাগ্রে। বিভিন্ন সময়ে ওইসকল ব্যক্তিদের নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঘটনা ঘটলেও নিরুত্তাপ বিএনপির হাইকমান্ড। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে এ সকল ঘটনা নিয়ে সংবাদ মাধ্যমগুলোতে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও সময়ের ব্যবধানে বিতর্কিতরা আরও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ লন্ডন বিএনপির নেতাকর্মীদের।

নেতাকর্মীরা জানান, ওয়ান ইলেভেন প্রেক্ষাপটে লন্ডনে চিকিৎসার জন্য আসেন বিএনপির তরুণ প্রজন্মের নেতা ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার পরিবার। বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার পরে দলটির সর্বাধিক জনপ্রিয় আর ক্ষমতাশালী এই নেতাকে এরপর থেকেই অনেক ধরনের বলয় ঘিরে রাখার চেষ্টা করেন। অনেক ক্ষেত্রে সফলও হন ওইসকল সুবিধাবাদী চক্রটি। তবে বিষয়টি অনুধাবন করে সতর্কতা হিসেবে দির্ঘ্যদিন ধরে নিজেকে নেতাকর্মী বিচ্ছিন্ন করে রাখেন তারেক রহমান। প্রয়োজন ব্যতিত এবং তার অনুমতি ছাড়া কারো সঙ্গে দেখা করার উপায় ছিলো না। কিন্ত সুবিধাবাদী আর বিতর্কিতরা এবার ভিন্ন কৌশলে তারেক রহমানের অন্দরমহলে প্রবেশ করেন। ওই সকল নেতা আর ব্যক্তিদের নিয়ে ইতিমধ্যে বিভিন্ন গুঞ্জন সৃষ্টির প্রেক্ষিতে কয়েকদিনের বিরতি দিয়ে আবারো প্রকাশ্যে এসেছেন।

লন্ডন বিএনপির নেতাকর্মীরা জানান, গত ১ জুন লন্ডনের ওভাল স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ডের খেলা দেখতে যান তারেক রহমান। লন্ডনে বসবাস করার পর তারেক রহমানের এটাই প্রথম প্রকাশ্যে চলে আসার ঘটনা। সাধারণ দর্শক গ্যালারিতে তাকে পেয়ে বাংলাদেশের দর্শক-নেতাকর্মী যারপরনাই খুশি হলেও তার সঙ্গে উপস্থিত কয়েকজনকে দেখে হতাশ হয়ে পড়েন।

নেতাকর্মীরা জানান, এসময়ে তারেক রহমানের সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক পারভেজ মল্লিক ছিলেন। লন্ডন বিএনপির নেতাকর্মীরা দির্ঘদিন ধরে এই দুজনের কর্মকাণ্ডকে সন্দেহের চোখে দেখে আসছেন।

নেতাকর্মীরা জানান, তারেক রহমানের ঘনিষ্ট হিসেবে পরিচয় দানকারী পারভেজ মল্লিক শুরুতে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। তিনি ১৯৯৫-৯৬ শিক্ষাবর্ষের ২৫তম ব্যাচের ছাত্র ছিলেন। ওই সময়ে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ও নারী নির্যাতনের সেঞ্চুরিয়ান হিসেবে পরিচিত ছাত্রলীগ নেতা জসিম উদ্দিন মানিকের কাছের লোক ছিলেন। এছাড়া ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মিলনের সঙ্গে মওলানা ভাসানী হলে একই রুমে থাকতেন তিনি। ১৯৯৮ সালে সালে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলনের মুখে মানিক ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত হলে পারভেজকেও হল থেকে বের করে দেওয়া হয়। এরপর ছাত্রদলের ব্যানারে ভিড় করেন তিনি। পরে তৎকালীন ছাত্রদলের সভাপতির সঙ্গে সখ্যতা করে ত্যাগী নেতাকর্মীদের ডিঙ্গিয়ে একাধারে দুইবার জাবি ছাত্রদলের সভাপতি বনে যান। ওই সময়ে জাবি ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন মাহবুবা নাজনীন জেবিন। চির প্রতিদ্বন্দ্বী এই দুই সংগঠনের সভাপতিই এখন স্বামী-স্ত্রী। তারা উভয়ে এখন লন্ডনে রয়েছেন। পেশাগত জীবনে কারও কোনো কর্ম না থাকলেও বিলাসবহুল জীবনযাপন করছেন। পারভেজ মল্লিকের সঙ্গে জেবিন তারেক রহমানের বাসায় অবাধ যাতায়াত করেন। তাদের এই বিবাহের অন্যতম উদ্যোক্তা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক দেবব্রত পাল। তার বিরুদ্ধেও রয়েছে ক্ষমতাসীন দলের সাথে ঘনিষ্টতার অভিযোগ।

অভিযোগ রয়েছে, পারভেজ মল্লিকের স্ত্রী জেবিন তারেক রহমানের বাসায় অবাধ যাতায়াতের মাধ্যমে এ ধরনের নজরদারী আর তারেক রহমানসহ বিএনপির সকল গোপন তথ্য পাঁচার করেন।

এ সকল বিষয়ে জানার জন্য পারভেজ মল্লিকের লন্ডন নাম্বারে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর