ঢাকা ০৫:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৮টি কারণে ইফতারিতে আনারস খাবেন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৪:৩৮:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ জুন ২০১৭
  • ২৬১ বার

এই গরম আর লম্বা দিনে ইফতারে চাই পুষ্টি ও স্বাস্থ্যকর খাবার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইফতারে ভাজাপোড়া কমিয়ে বেশি বেশি ফল রাখাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।

তাই রমজান মাসজুড়ে পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হবে বিভিন্ন ফলের পুষ্টিগুণ। আজ জানুন রসালো আনারস সম্পর্কে। এটা যে কেবল জ্বরের পথ্য তাই নয়, ইফতারেও জোগাতে পারে প্রচুর ভিটামিন আর খনিজ।

এবার জেনে নিন, যে কারণে ইফতারিতে আনারস খাবেন:-

১. আরথ্রাইটিস সামলাতে : পুরনো আমল থেকেই হাড়ের সংযোগস্থল ও পেশির যন্ত্রণা উপশমে আনারস খাওয়ার প্রচল রয়েছে। বিশেষ করে আরথ্রাইটিসের সমস্যায় যারা ভুগছেন তাদের ব্যাপক উপকার মিলবে আনারসে।

এতে আছে এক বিরল প্রোটেওলিটিক উৎসেচক, যার নাম ব্রোমেলাইন। জটিল প্রোটিনগুলোকে ভাঙতে প্রাথমিক সহায়তা দেয় এই এনজাইম। বিভিন্ন পরীক্ষায় প্রমাণ মিলেছে, প্রদাহ নিরাময় ও আরথ্রাইটিসে দেখভালের কাজ করে ব্রোমেলাইন।

২. রোগ প্রতিরোধ : এক বসায় আপনি যতটুকু আনারস খেতে পারবেন, তাতে প্রতিদিনের প্রয়োজন মিটিয়েও ৩০ শতাংশ বাড়তি ভিটামিন সি মিলবে। অ্যাসকর্বিক এসিডের অন্যতম সেরা উৎস হিসাবে বিবেচিত হয় আনারস।

এর

ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধী ক্ষমতা বাড়ায়। রক্তের শ্বেত কণিকার কার্যক্রম ত্বরাণ্বিত করে। আনারসে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট দেহের বিষাক্ত উপাদান বের করে দিতে দারুণ কাজের।

৩. টিস্যু ও কোষের স্বাস্থ্য : ভিটামিন সি এর সাধারণ এক বৈশিষ্ট্য হলো কোলাজেন তৈরিতে ভূমিকা রাখা। আনারস এ কাজে খুব ভালো। রক্তবাহী শিরার অভ্যন্তরীন দেয়াল, ত্বক, প্রত্যঙ্গ এবং হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রোটিন এই কোলাজেন। আনারসের ভিটামিন সি অতি উচ্চমানের। ক্ষত সারাতে এটি খুব দ্রুত ক্রিয়াশীল হয়। যেকোনো সংক্রমণ ও অসুস্থতায় দেহের ক্ষতিগ্রস্ত টিস্যু ও কোষগুলোকে রক্ষায় শক্ত ব্যবস্থা গড়ে তোলে।

৪. ক্যান্সার ঠেকাতে : আনারসে আরো আছে ভিটামিন এ, বেটা ক্যারোটিন, ব্রোমেলাইন, বিভিন্ন ধরনের ফ্লেভোনয়েড উপাদান এবং উচ্চমাত্রার ম্যাঙ্গানিজ। এসব উপাদান সুপারোজাইড ডিসমুটেস নামের এক শক্তিশালী উৎসেচক সৃষ্টির অংশ হয়ে ওঠে। ক্যান্সার সৃষ্টিকারী বিভিন্ন বিষাক্ত উপাদানকে দেহ থেকে বের করে দিতে তৎপর থাকে এটি।

৫. হজম : অন্যান্য ফলের মতো আনারসও ভক্ষণোযোগ্য ফাইবারে পরিপূর্ণ। তবে আনারস অনন্য। খাওয়া যায় এবং খাওয়া যায় না- এই উভয় ধরনের ফাইবার রয়েছে আনারসে। কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়া, অস্বস্তিকর পেটের পীড়া, অ্যাথেরোসক্লেরোসিস কিংবা রক্ত জমাট বাঁধার মতো স্বাস্থ্যগত বিষয়ে এই ফল খুবই উপকারী।

৬. সর্দি ও জ্বর : শ্বাসযন্ত্র ও সাইনাসে কফ ও মিউকাস তৈরিতে বাধা দেয় আনারসের ব্রোমেলাইন। এ কারণে সর্দি ও জ্বরের অতি জরুরি পথ্য হিসাবে বহুল প্রচলিত ফল এটি। কারো ঘরে জ্বর হয়েছে তো আনারস নিতে ভুল হয় না।

৭. হাড়ের স্বাস্থ্য : ক্যালসিয়ামের ধারক হিসাবে আনারস নামকরা কিছু নয়। তবে এতে রয়েছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ম্যাঙ্গানিজ। হাড়ের সুগঠনে এটি অতি জরুরি এক খনিজ। ক্ষতিগ্রস্ত হাড় মেরামতেও কার্যকর। আর ম্যাঙ্গানিজসমৃদ্ধ ফলের মধ্যে রীতিমতো বিখ্যাত আনারস।

৮. মুখের স্বাস্থ্য : অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান ছাড়াও আনারসে রয়েছে অ্যাস্ট্রিনজেন্ট এজেন্ট। এটি মাড়িকে শক্ত করে। দাঁতকে ধরে রাখে মাড়ির সঙ্গে। দাঁত ও চুল পড়ে যাওয়া কিংবা ত্বকের টান টান ভাব নষ্ট হওয়া ঠেকাতে বেশ কাজের এই অ্যাস্ট্রিনজেন্ট এজেন্ট। দাঁত পড়ে গেলে বা মাড়ির ব্যথা উপশমে আনারস এক অসাধারণ ফল।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

৮টি কারণে ইফতারিতে আনারস খাবেন

আপডেট টাইম : ০৪:৩৮:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ জুন ২০১৭

এই গরম আর লম্বা দিনে ইফতারে চাই পুষ্টি ও স্বাস্থ্যকর খাবার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইফতারে ভাজাপোড়া কমিয়ে বেশি বেশি ফল রাখাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।

তাই রমজান মাসজুড়ে পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হবে বিভিন্ন ফলের পুষ্টিগুণ। আজ জানুন রসালো আনারস সম্পর্কে। এটা যে কেবল জ্বরের পথ্য তাই নয়, ইফতারেও জোগাতে পারে প্রচুর ভিটামিন আর খনিজ।

এবার জেনে নিন, যে কারণে ইফতারিতে আনারস খাবেন:-

১. আরথ্রাইটিস সামলাতে : পুরনো আমল থেকেই হাড়ের সংযোগস্থল ও পেশির যন্ত্রণা উপশমে আনারস খাওয়ার প্রচল রয়েছে। বিশেষ করে আরথ্রাইটিসের সমস্যায় যারা ভুগছেন তাদের ব্যাপক উপকার মিলবে আনারসে।

এতে আছে এক বিরল প্রোটেওলিটিক উৎসেচক, যার নাম ব্রোমেলাইন। জটিল প্রোটিনগুলোকে ভাঙতে প্রাথমিক সহায়তা দেয় এই এনজাইম। বিভিন্ন পরীক্ষায় প্রমাণ মিলেছে, প্রদাহ নিরাময় ও আরথ্রাইটিসে দেখভালের কাজ করে ব্রোমেলাইন।

২. রোগ প্রতিরোধ : এক বসায় আপনি যতটুকু আনারস খেতে পারবেন, তাতে প্রতিদিনের প্রয়োজন মিটিয়েও ৩০ শতাংশ বাড়তি ভিটামিন সি মিলবে। অ্যাসকর্বিক এসিডের অন্যতম সেরা উৎস হিসাবে বিবেচিত হয় আনারস।

এর

ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধী ক্ষমতা বাড়ায়। রক্তের শ্বেত কণিকার কার্যক্রম ত্বরাণ্বিত করে। আনারসে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট দেহের বিষাক্ত উপাদান বের করে দিতে দারুণ কাজের।

৩. টিস্যু ও কোষের স্বাস্থ্য : ভিটামিন সি এর সাধারণ এক বৈশিষ্ট্য হলো কোলাজেন তৈরিতে ভূমিকা রাখা। আনারস এ কাজে খুব ভালো। রক্তবাহী শিরার অভ্যন্তরীন দেয়াল, ত্বক, প্রত্যঙ্গ এবং হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রোটিন এই কোলাজেন। আনারসের ভিটামিন সি অতি উচ্চমানের। ক্ষত সারাতে এটি খুব দ্রুত ক্রিয়াশীল হয়। যেকোনো সংক্রমণ ও অসুস্থতায় দেহের ক্ষতিগ্রস্ত টিস্যু ও কোষগুলোকে রক্ষায় শক্ত ব্যবস্থা গড়ে তোলে।

৪. ক্যান্সার ঠেকাতে : আনারসে আরো আছে ভিটামিন এ, বেটা ক্যারোটিন, ব্রোমেলাইন, বিভিন্ন ধরনের ফ্লেভোনয়েড উপাদান এবং উচ্চমাত্রার ম্যাঙ্গানিজ। এসব উপাদান সুপারোজাইড ডিসমুটেস নামের এক শক্তিশালী উৎসেচক সৃষ্টির অংশ হয়ে ওঠে। ক্যান্সার সৃষ্টিকারী বিভিন্ন বিষাক্ত উপাদানকে দেহ থেকে বের করে দিতে তৎপর থাকে এটি।

৫. হজম : অন্যান্য ফলের মতো আনারসও ভক্ষণোযোগ্য ফাইবারে পরিপূর্ণ। তবে আনারস অনন্য। খাওয়া যায় এবং খাওয়া যায় না- এই উভয় ধরনের ফাইবার রয়েছে আনারসে। কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়া, অস্বস্তিকর পেটের পীড়া, অ্যাথেরোসক্লেরোসিস কিংবা রক্ত জমাট বাঁধার মতো স্বাস্থ্যগত বিষয়ে এই ফল খুবই উপকারী।

৬. সর্দি ও জ্বর : শ্বাসযন্ত্র ও সাইনাসে কফ ও মিউকাস তৈরিতে বাধা দেয় আনারসের ব্রোমেলাইন। এ কারণে সর্দি ও জ্বরের অতি জরুরি পথ্য হিসাবে বহুল প্রচলিত ফল এটি। কারো ঘরে জ্বর হয়েছে তো আনারস নিতে ভুল হয় না।

৭. হাড়ের স্বাস্থ্য : ক্যালসিয়ামের ধারক হিসাবে আনারস নামকরা কিছু নয়। তবে এতে রয়েছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ম্যাঙ্গানিজ। হাড়ের সুগঠনে এটি অতি জরুরি এক খনিজ। ক্ষতিগ্রস্ত হাড় মেরামতেও কার্যকর। আর ম্যাঙ্গানিজসমৃদ্ধ ফলের মধ্যে রীতিমতো বিখ্যাত আনারস।

৮. মুখের স্বাস্থ্য : অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান ছাড়াও আনারসে রয়েছে অ্যাস্ট্রিনজেন্ট এজেন্ট। এটি মাড়িকে শক্ত করে। দাঁতকে ধরে রাখে মাড়ির সঙ্গে। দাঁত ও চুল পড়ে যাওয়া কিংবা ত্বকের টান টান ভাব নষ্ট হওয়া ঠেকাতে বেশ কাজের এই অ্যাস্ট্রিনজেন্ট এজেন্ট। দাঁত পড়ে গেলে বা মাড়ির ব্যথা উপশমে আনারস এক অসাধারণ ফল।