একেবারে বলিউডি ফিল্মের ধাঁচেই অপহরণকারীকে গুলি করে অপহৃতকে উদ্ধার করলেন ভারতের জাতীয়স্তরের মহিলা শ্যুটার। রাজধানী দিল্লিতেই ঘটেছে এমন দুঃসাহসিক ঘটনা। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আসিফ জাতীয় শ্যুটার আয়েশার বোনের বর। পকেটমানির জন্য রাতের দিকে কয়েকঘণ্টা দিল্লিতে ক্যাব চালান আসিফ।
বৃহস্পতিবার সেরকমই ক্যাব নিয়ে বেরিয়েছিলেন তিনি। দিল্লির দরিয়াগঞ্জ থেকে রফি এবং আকাশ নামে দুই যুবক তার গাড়িতে চাপেন। মিন্টো রোডের দিকে যাওয়ার কথা বলে তারা। কিন্তু কিছুদূর গিয়ে আসিফকে অন্যদিকে গাড়ি নিয়ে যেতে বলে রফি এবং আকাশ। কিন্তু উদ্দেশ্য ঠিক নয় বুঝতে পেরে গাড়ি থামিয়ে দেন আসিফ। এর পরেই নিজমূর্তি ধারণ করে রফি ও আকাশ।
গাড়ির সামনের সিটে বসে আসিফকে প্রাণে
মারার হুমকি দেয় তারা। ভোপরার কাছে গাড়ি নিয়ে এসে আসিফের মানিব্যাগ কেড়ে নেয় তারা। কিন্তু তাতে দেড়শো টাকার বেশি কিছুই না পেয়ে একেবারে রাগের বশে আসিফকে মারধর করে। এবং তাকে বাড়িতে ফোন করে মুক্তিপণ চাইতে বাধ্যও করে দুই দুষ্কৃতী। রাত ১ টা নাগাদ আসিফের বাড়ির লোককে তারা জানায় একঘণ্টার মধ্যে ২৫ হাজার টাকা নিয়ে ভজনপুরার দিল্লিরশাস্ত্রী পার্কে টাকা নিয়ে আসতে। তবেই ছেলেকে জীবন্ত পাবেন।
আতঙ্কে আসিফের পরিবার পুলিশকে ফোন করে। কিন্তু ততক্ষণে আষেশার কাছে খবর পৌঁছে গিয়েছে। স্বামী ফলককে নিয়ে গাড়িতে করে পার্কের কাছে পৌঁছে যান আয়েশা। সময় মত আসিফকে নিয়ে শাস্ত্রী পার্কে এসে পৌঁছায় দুই অপহরণকারী। গাড়িটি থামার পর দরজা খুলে বেরিয়ে আসে একটি ছোট্ট ছেলে। পুলিশ থাকতে পারে এই আশঙ্কায় রীতিমত ছক কষেই পার্কে হাজির হয়েছিল অপহরণকারীরা।
এরপর ধীরে ধীরে গাড়ি থেকে বেরিয়ে আসে রফি এবং আকাশ নামে দুই অপহরণকারী। সঙ্গে সঙ্গে নিজের লাইসেন্স পিস্তল ব্যাগ থেকে বের করে একজনের কোমরে এবং একজনের পায়ে গুলি করেন আয়েশা। আতঙ্কে গাড়ি থেকে ছুটে বেরিয়ে আসেন আসিফ। এরমধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। তারা দুই অপহরণকারীরে গ্রেপ্তার করে।
আয়েশার কাছ থেকে পিস্তল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দিল্লি পুলিসের জয়েন্ট সিপি যাদব। আত্মরক্ষায় গুলি চালানোয় আয়েশার বিরুদ্ধে কোনও গুরুতর অভিযোগ দায়ের করা হবে না বলেও পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে। জাতীয়স্তরের শ্যুটার এবং কোচ আয়েশার এই সাহসিকতাকে কুর্নিশ জানিয়েছে দিল্লি পুলিস।