ঢাকা ০৮:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পানির অপর নাম ‘মরণ’-১

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৭:৪৩:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ মে ২০১৭
  • ২৬০ বার

নিজের চোখে পানি নিয়ে মানুষের ক্ষুদ্র হাহাকারের দুটো ঘটনা মনে পরে। একটা খানিক মজার। আর একটা বিভৎস। মনে আছে, তখন ক্লাস সেভেন বা এইটে পড়ি। নানা বাড়িতে বেশ ধুমধামের সাথে, বলতে গেলে বিয়ের আয়োজনে আমাদের দুই ভাইয়ের সুন্নতে খতনার আয়োজন করলেন নানা। সেই আশির দশকে সেই অজপাড়া গায়ের হাসপাতালে চেতনানাশক ওষুধ যা ছিলো তা আসলে কোনও কাজেরই না। চার হাত পা চেপে ধরে ডাক্তার আর নানার চেলাপেলারা যা করেছিলেন তার যন্ত্রণা যেমন মনে আছে, তেমনি মনে আছে সে সময় পানি পিপাসায় যে যন্ত্রণা পেয়েছিলাম সে কথাও। এমনকি সুন্নতে খতনার তান্ডব আমার উপর শেষ হবার পরও যে পানি পিপাসা ছিলো তাও মেটানো হয়নি। তখন গ্রামে বলা হতো শরীরে কোনও ক্ষত থাকলে পানি কম খেতে হয়। পানি বেশী খেলে ক্ষত শুকায় না। টানা তিনদিনে এক সামনে শত রকমের হাইফাই খাবার দিলেও সর্বসাকুল্যে এক গাস পানি খেতে দিয়েছিলো কিনা মনে নেই। আজও সেই সময়ের পানি পিপাসার কথা মনে পড়লে গলা শুকিয়ে আসে।
পরে ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের। ২০১৩ সালে পেশাগত দায়িত্ব পালনে ছিলাম ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের বার্ণ ইউনিটে। দুপুর দিকে হঠাৎ হট্টগোল হৈচৈ। বেশ কয়েকজন আহত নারী-পুরুষ শিশুকে আনা হলো। তাদের মাঝে একজনের অবস্থা বিভৎস। তিনি বাপ্পী। নিউমার্কেট থানা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক। হাতের কবজির উপর থেকে শুধু হাড়টা বেরিয়ে আছে। তাতে কিছু মাংস ঝুলে আছে। সারা শরীর ঝলসে আছে। একটু পরপর বমি করছেন আর পানি পানি করে কাতরাচ্ছেন। চোখ দুটি তার শরীর নিংড়ে বেরিয়ে আসছে। পানির জন্য বাপ্পীর আর্তনাদ এখনও কানে বাজে।
এই পানি নিয়ে ইনিয়ে বিনিয়ে এই দুটি ঘটনা কচলানো পানির জন্য মানুষের কাতরতার ছবি নিয়ে ভূমিকা করা মাত্র। আসি মোদ্দা কথায়। আসলে যে পানির জন্য জীবণের কোনও না কোনও সময় মানুষ এতটা কাতর হয় কোনও এক বিশাল পানির ভান্ডার তখন অভিশাপ। বলছিলাম হাওর এলাকার কথা। মূল কথা হলো-এই পানি। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মিঠা পানির আধার বলা হয় হাওরকে। সে হাওর এবার অকালে পানিতে থৈথৈ। আর অকালে কয়েক লাখ মানুষের জীবণের ছন্দপতনও ঘটিয়েছে এই পানিই।
এই লিখার পেছনে কোনও গবেষণা বা তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণের উদ্দেশ্য নেই। নেই কোনও মুন্সিয়ানা জাহিরের লক্ষ। গত প্রায় ২৭ বছর সুনামগঞ্জের হাওর ঘেঁষা মেঘালয় সীমান্ত থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর, হবিগঞ্জের বিথংগল থেকে কিশোরগঞ্জের বড় হাওর, মৌলভিবাজারের হাকালুকি থেকে সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়া বা শনিরহাওর থেকে নেত্রকোণার ডিঙ্গাপুতার এপার ওপার কি শীত কি বর্ষায় ছুটে বেড়ানোর অভিজ্ঞতা থেকে কিছু সাদা কথা বলাই
এই লিখতে বসার উদ্দেশ্য। দিনের এমন কোন সময় নেই যে সময়ে এইসব হাওরের বুকে পদচারণার সময় হয়নি। ভোর সকাল বা মধ্য দুপুর। সন্ধ্যা বা গভীর রাত। কনকনে শীতের সকাল বা ভরা বর্ষায় আফাল ঠেলে উত্তাল ঢেউ ছিড়ে হাওড়ের এপার ওপারের স্মৃতি যেকোনও সময় চোখের সামনে ভেসে উঠে আর মন বলে এবার কিছু একটা অন্তত লিখা দরকার।
১.
গেলো সপ্তাহের ঘটনা। নেত্রকোণার মোহনগঞ্জের দুর্গম প্রত্যন্ত হাওরে অনুপদাকে ফোন করেছিলাম। অনুপদা আমার বাবার দোস্তের ছেলে। দাদা, কেমন আছো? না ভাই, একদম ভাল না।
শুনেছি দাদা, পাহাড়ি ঢলের পানি সব ফসল তলিয়ে দিয়েছে।
সেতো গেছেই রে দাদা। এখন গরু বাছুরগুলা বাঁচাইতে যুদ্ধ করতেছি। এক কাঁচি ধান কাটতে পারে নাই আমাদের গ্রামের মানুষ। এমনকি কাঁচা ধান গাছটিও কাটার সুযোগ দেয় নাই। এক নিমিষে কোথা থাইকা এতো পানি আসলো কেউ বুঝলো না। কাঁচা ধান গাছগুলা কাটতে পারলেও গরু ছাগলরে খাওয়ানো যাইতো। এখন ট্রলার ভরে গরু ছাগল সব উজান দেশে পাঠানো হচ্ছে।
অনুপদা বলে গেলেন, গাঁয়ের মানুষের বছরটা যে কিভাবে যাবে জানি না। বিশ্বাস করবা না। এখন যে পানি তা মনে হয় বর্ষা কাল। আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে এমন পানি থাকে।
২. কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামে কথা হচ্ছিলো সম বয়সি ক্ষুদ্র কৃষক বন্ধু সোয়াবের সাথে। মোবাইল ফোনে তার যে গলা শুনেছি তাতেই রাজ্যের বিরক্তির ছাপ। আর সে বিরক্তির পেছনে চেপে থাকা কষ্টও ফুটে উঠে। সোয়াবের কাছ থেকে জানা হলো- ঐ এলাকায় এবার আর কেউ ভাল থাকাতো দূরের কথা তিন বেলা ছেলে মেয়ে নিয়ে খেয়ে বেঁচে থাকার স্বপ্নটাও দেখতে ভয় পাচ্ছেন। হাওর এলাকা ছেড়ে নগরমুখি হওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছেন তারা। সোয়াবের আশপাশের পরিচিত জন এমন কেউ নেই যার এক মুঠো ধান এবার গোলায় তুলতে পেরেছে। সবই গেছে আগাম বন্যায়।
গত কিছু দিনের এমন আরও অসংখ্য উদাহরণ দেওয়া যায়। যেমন, সুনামগঞ্জের প্রত্যন্ত সীমান্ত ঘেঁষা হাওর থেকে আমার গৃহপরিচালিকা শাহানার বাবা ফোন দিয়েছেন অন্তত মেয়ের দুই মাসের বেতন অগ্রিম দিতে। তা দিয়ে কিছু একটা ব্যবসা করে দিন চালাবেন। গাঁয়ের পরিচিত বোন শুভ ঢাকায় এসেছে তার ছেলের পড়াশুনা এবার বন্ধ করে দিতে হবে, ছেলের জন্য ঢাকায় যে যে পরিচিত আছেন তার কাছে চাকুরি চাইছেন। ইটনা থেকে তরুণ এডিসন আহমদ ফোন করেই বলেছে-ভাই মার্ডার, ভাই একেবারে মার্ডার। গত ১০ বছরের মধ্যে সাত বছরই ফসল পায়নি কৃষক। এখন কিভাবে চলবে মানুষ, মাথায় ধরে না। ৫ হাজার টাকার একটা চাকুরিও মিলে না, তদবির লাগে। কিছু একটা করেন আপনারা সাংবাদিকরা।
কত যে পারিবারিক অনুষ্ঠান বিস্তৃৃর্ণ হাওরাঞ্চলে এবার অন্তত হাজার হাজার পরিবারে পিছিয়ে যাচ্ছে, কতজনের চিকিৎসা থেমে যাবে-আর বিনোদন বিলাসতো দূরের কথা, সে হিসাব কোনও দিনই হয়তো জানা যাবে না। অভিমানি গৃহিণী সারাটা বছর অপেক্ষায় ছিলো ফসল উঠলে কৃষক তার জন্য এবার একটা নতুন শাড়ি বা রূপার একটা নাক ফুল কিনে আনবে। অভিমানে কৃষাণ কৃষাণির ঘরে সুখের সুর বাজবে না। ক্ষুধায় কাতর ছোট শিশুর মুখে দু‘বেলা ভাতের মাড় তুলে দিতে দিতে মায়ের চোখের পানি মুছবে পুরাতন ছেঁড়া শাড়ির আঁচলে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

পানির অপর নাম ‘মরণ’-১

আপডেট টাইম : ০৭:৪৩:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ মে ২০১৭

নিজের চোখে পানি নিয়ে মানুষের ক্ষুদ্র হাহাকারের দুটো ঘটনা মনে পরে। একটা খানিক মজার। আর একটা বিভৎস। মনে আছে, তখন ক্লাস সেভেন বা এইটে পড়ি। নানা বাড়িতে বেশ ধুমধামের সাথে, বলতে গেলে বিয়ের আয়োজনে আমাদের দুই ভাইয়ের সুন্নতে খতনার আয়োজন করলেন নানা। সেই আশির দশকে সেই অজপাড়া গায়ের হাসপাতালে চেতনানাশক ওষুধ যা ছিলো তা আসলে কোনও কাজেরই না। চার হাত পা চেপে ধরে ডাক্তার আর নানার চেলাপেলারা যা করেছিলেন তার যন্ত্রণা যেমন মনে আছে, তেমনি মনে আছে সে সময় পানি পিপাসায় যে যন্ত্রণা পেয়েছিলাম সে কথাও। এমনকি সুন্নতে খতনার তান্ডব আমার উপর শেষ হবার পরও যে পানি পিপাসা ছিলো তাও মেটানো হয়নি। তখন গ্রামে বলা হতো শরীরে কোনও ক্ষত থাকলে পানি কম খেতে হয়। পানি বেশী খেলে ক্ষত শুকায় না। টানা তিনদিনে এক সামনে শত রকমের হাইফাই খাবার দিলেও সর্বসাকুল্যে এক গাস পানি খেতে দিয়েছিলো কিনা মনে নেই। আজও সেই সময়ের পানি পিপাসার কথা মনে পড়লে গলা শুকিয়ে আসে।
পরে ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের। ২০১৩ সালে পেশাগত দায়িত্ব পালনে ছিলাম ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের বার্ণ ইউনিটে। দুপুর দিকে হঠাৎ হট্টগোল হৈচৈ। বেশ কয়েকজন আহত নারী-পুরুষ শিশুকে আনা হলো। তাদের মাঝে একজনের অবস্থা বিভৎস। তিনি বাপ্পী। নিউমার্কেট থানা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক। হাতের কবজির উপর থেকে শুধু হাড়টা বেরিয়ে আছে। তাতে কিছু মাংস ঝুলে আছে। সারা শরীর ঝলসে আছে। একটু পরপর বমি করছেন আর পানি পানি করে কাতরাচ্ছেন। চোখ দুটি তার শরীর নিংড়ে বেরিয়ে আসছে। পানির জন্য বাপ্পীর আর্তনাদ এখনও কানে বাজে।
এই পানি নিয়ে ইনিয়ে বিনিয়ে এই দুটি ঘটনা কচলানো পানির জন্য মানুষের কাতরতার ছবি নিয়ে ভূমিকা করা মাত্র। আসি মোদ্দা কথায়। আসলে যে পানির জন্য জীবণের কোনও না কোনও সময় মানুষ এতটা কাতর হয় কোনও এক বিশাল পানির ভান্ডার তখন অভিশাপ। বলছিলাম হাওর এলাকার কথা। মূল কথা হলো-এই পানি। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মিঠা পানির আধার বলা হয় হাওরকে। সে হাওর এবার অকালে পানিতে থৈথৈ। আর অকালে কয়েক লাখ মানুষের জীবণের ছন্দপতনও ঘটিয়েছে এই পানিই।
এই লিখার পেছনে কোনও গবেষণা বা তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণের উদ্দেশ্য নেই। নেই কোনও মুন্সিয়ানা জাহিরের লক্ষ। গত প্রায় ২৭ বছর সুনামগঞ্জের হাওর ঘেঁষা মেঘালয় সীমান্ত থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর, হবিগঞ্জের বিথংগল থেকে কিশোরগঞ্জের বড় হাওর, মৌলভিবাজারের হাকালুকি থেকে সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়া বা শনিরহাওর থেকে নেত্রকোণার ডিঙ্গাপুতার এপার ওপার কি শীত কি বর্ষায় ছুটে বেড়ানোর অভিজ্ঞতা থেকে কিছু সাদা কথা বলাই
এই লিখতে বসার উদ্দেশ্য। দিনের এমন কোন সময় নেই যে সময়ে এইসব হাওরের বুকে পদচারণার সময় হয়নি। ভোর সকাল বা মধ্য দুপুর। সন্ধ্যা বা গভীর রাত। কনকনে শীতের সকাল বা ভরা বর্ষায় আফাল ঠেলে উত্তাল ঢেউ ছিড়ে হাওড়ের এপার ওপারের স্মৃতি যেকোনও সময় চোখের সামনে ভেসে উঠে আর মন বলে এবার কিছু একটা অন্তত লিখা দরকার।
১.
গেলো সপ্তাহের ঘটনা। নেত্রকোণার মোহনগঞ্জের দুর্গম প্রত্যন্ত হাওরে অনুপদাকে ফোন করেছিলাম। অনুপদা আমার বাবার দোস্তের ছেলে। দাদা, কেমন আছো? না ভাই, একদম ভাল না।
শুনেছি দাদা, পাহাড়ি ঢলের পানি সব ফসল তলিয়ে দিয়েছে।
সেতো গেছেই রে দাদা। এখন গরু বাছুরগুলা বাঁচাইতে যুদ্ধ করতেছি। এক কাঁচি ধান কাটতে পারে নাই আমাদের গ্রামের মানুষ। এমনকি কাঁচা ধান গাছটিও কাটার সুযোগ দেয় নাই। এক নিমিষে কোথা থাইকা এতো পানি আসলো কেউ বুঝলো না। কাঁচা ধান গাছগুলা কাটতে পারলেও গরু ছাগলরে খাওয়ানো যাইতো। এখন ট্রলার ভরে গরু ছাগল সব উজান দেশে পাঠানো হচ্ছে।
অনুপদা বলে গেলেন, গাঁয়ের মানুষের বছরটা যে কিভাবে যাবে জানি না। বিশ্বাস করবা না। এখন যে পানি তা মনে হয় বর্ষা কাল। আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে এমন পানি থাকে।
২. কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামে কথা হচ্ছিলো সম বয়সি ক্ষুদ্র কৃষক বন্ধু সোয়াবের সাথে। মোবাইল ফোনে তার যে গলা শুনেছি তাতেই রাজ্যের বিরক্তির ছাপ। আর সে বিরক্তির পেছনে চেপে থাকা কষ্টও ফুটে উঠে। সোয়াবের কাছ থেকে জানা হলো- ঐ এলাকায় এবার আর কেউ ভাল থাকাতো দূরের কথা তিন বেলা ছেলে মেয়ে নিয়ে খেয়ে বেঁচে থাকার স্বপ্নটাও দেখতে ভয় পাচ্ছেন। হাওর এলাকা ছেড়ে নগরমুখি হওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছেন তারা। সোয়াবের আশপাশের পরিচিত জন এমন কেউ নেই যার এক মুঠো ধান এবার গোলায় তুলতে পেরেছে। সবই গেছে আগাম বন্যায়।
গত কিছু দিনের এমন আরও অসংখ্য উদাহরণ দেওয়া যায়। যেমন, সুনামগঞ্জের প্রত্যন্ত সীমান্ত ঘেঁষা হাওর থেকে আমার গৃহপরিচালিকা শাহানার বাবা ফোন দিয়েছেন অন্তত মেয়ের দুই মাসের বেতন অগ্রিম দিতে। তা দিয়ে কিছু একটা ব্যবসা করে দিন চালাবেন। গাঁয়ের পরিচিত বোন শুভ ঢাকায় এসেছে তার ছেলের পড়াশুনা এবার বন্ধ করে দিতে হবে, ছেলের জন্য ঢাকায় যে যে পরিচিত আছেন তার কাছে চাকুরি চাইছেন। ইটনা থেকে তরুণ এডিসন আহমদ ফোন করেই বলেছে-ভাই মার্ডার, ভাই একেবারে মার্ডার। গত ১০ বছরের মধ্যে সাত বছরই ফসল পায়নি কৃষক। এখন কিভাবে চলবে মানুষ, মাথায় ধরে না। ৫ হাজার টাকার একটা চাকুরিও মিলে না, তদবির লাগে। কিছু একটা করেন আপনারা সাংবাদিকরা।
কত যে পারিবারিক অনুষ্ঠান বিস্তৃৃর্ণ হাওরাঞ্চলে এবার অন্তত হাজার হাজার পরিবারে পিছিয়ে যাচ্ছে, কতজনের চিকিৎসা থেমে যাবে-আর বিনোদন বিলাসতো দূরের কথা, সে হিসাব কোনও দিনই হয়তো জানা যাবে না। অভিমানি গৃহিণী সারাটা বছর অপেক্ষায় ছিলো ফসল উঠলে কৃষক তার জন্য এবার একটা নতুন শাড়ি বা রূপার একটা নাক ফুল কিনে আনবে। অভিমানে কৃষাণ কৃষাণির ঘরে সুখের সুর বাজবে না। ক্ষুধায় কাতর ছোট শিশুর মুখে দু‘বেলা ভাতের মাড় তুলে দিতে দিতে মায়ের চোখের পানি মুছবে পুরাতন ছেঁড়া শাড়ির আঁচলে।