ঢাকা ০৬:৩৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
ঢাকা মহানগরে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলতে আপাতত বাধা নেই চিঠি লিখে ‘নিরুদ্দেশ’ পুলিশের উপপরিদর্শক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর অবস্থানে না যাওয়ার ব্যাখ্যা দিলেন আসিফ পাকিস্তানে ‘যুদ্ধবিরতি’তে শিয়া-সুন্নি গোষ্ঠী আন্দোলনে হামলাকারী ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার কোহলির প্রেমিকা আনুশকাকে অস্ট্রেলিয়া নিতে প্রথা ভেঙেছিল ভারতের বোর্ড মোল্লা কলেজে হামলা-সংঘর্ষ: ৩ শিক্ষার্থী নিহতের দাবি কর্তৃপক্ষের সংঘর্ষে না জড়িয়ে শিক্ষার্থীদের শান্ত থাকার আহ্বান সরকারের মসজিদ ঘিরে উত্তেজনা উত্তর প্রদেশে ৪০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা, ইন্টারনেট ও স্কুল বন্ধ নানামুখী ষড়যন্ত্র শুরু হয়ে গেছে: তারেক রহমান

চাষিদের শেষ সম্বল গরু-ছাগল খাদ্যে বিষক্রিয়ায় মারা যাচ্ছে :হাওরে ভয়াবহ বিপর্যয়

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:১২:১৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ এপ্রিল ২০১৭
  • ৫৭৬ বার

ধান, মাছ ও হাঁস হারিয়ে যাওয়ার পর হাওরের চাষিদের শেষ সম্বল গরু-ছাগল খাদ্যে বিষক্রিয়ায় মারা যাচ্ছে। পশুখাদ্যের অভাবে অনেক কৃষক গবাদি পশুকে ডুবে যাওয়া ঘাস ও ধান খাওয়াতে বাধ্য হচ্ছে। এতে নতুন করে অসুস্থ হচ্ছে গবাদি পশু। মৌলভীবাজারে ছাগল ও সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে ইতোমধ্যে গরু মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পশুখাদ্যের সঙ্কট দেখা দিয়েছে হাকালুকিসহ জেলার হাওরগুলোতে। চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছে হাকালুকির গবাদি পশু পালকরা। নতুন করে অসুস্থ হচ্ছে গবাদি পশু। মৌলভীবাজারের হাকালুকির হাওরের কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা অংশসহ জেলার হাওরপাড়ে পানিবন্দি কয়েক হাজার কৃষকের সঙ্গে পর্যাপ্ত খাবার না খেয়ে আছে এসব গবাদি পশু। দুয়েক জন কৃষক তলিয়ে যাওয়া ধান খেতে দিলে অসুস্থ হয়ে পড়ে অনেক গবাদি পশু। এতে ব্যাপক আতঙ্ক বিরাজ করছে হাওরাঞ্চলের গবাদি পশুর খামারিদের মধ্যে। ইতোমধ্যে সেখানে কয়েকটি ছাগল মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. শাহীদুজ্জামান বলেন, জেলার হাওরাঞ্চলে প্রায় ৬৭ হাজার গরু, ১৫ হাজার মহিষ, ২২ হাজার ছাগল, ৩ হাজার ভেড়া, পৌনে ৩ লাখ মুরগি ও ৯০ হাজার হাঁস অপ্রতুল খাদ্য সঙ্কটে রয়েছে। ঘাসের পরিবর্তে দানাদার খাবার দেওয়ার জন্য কৃষককে পরামর্শ দিচ্ছি। জগন্নাথপুর সংবাদদাতা জানান, সুনামগঞ্জে এই উপজেলাটির গরুসহ বিভিন্ন গৃহপালিত পশু হারানোর আশঙ্কায় আতঙ্কের প্রহর গুনছে জগন্নাথপুর উপজেলাবাসী। গত মঙ্গলবার উপজেলার চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নের ভূরাখালী গ্রামে দুটি গরু মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। গরু দুটি মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ বলেন, এ সংবাদ আমরা পেয়েছি। তবে কী কারণে গরুগুলো মারা গেছে আমরা এখনও নিশ্চিত নই। হাওরে খাদ্যের চাহিদা মেটাতে স্থানীয় নলুয়ার হাওর থেকে বিভিন্ন জাতের ‘ভটভটি’ নামক ঘাস তুলে এনে ভূরাখালী গ্রামের জনসাধারণ গরুসহ অন্যান্য গৃহপালিত পশুর খাদ্যের চাহিদা মেটাচ্ছে। কিন্তু এসব খাদ্য খেয়ে এই দুটি গরু মারা গেছে। গরু দুটির মালিক আরশ আলী ও ফরুক মিয়া জানান, আমরা গোখাদ্যের অভাবে হাওর থেকে ‘ভটভটি’ এনে গরুগুলোকে খাওয়ালে কিছুক্ষণ পর মারা যায়। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. কামরুল আহমদ খান বলেন, গৃহপালিত পশুর খাদ্য সঙ্কট হওয়ায় গরুগুলোকে সোমবার সারা দিন ভটভটি ঘাস খেতে দেওয়া হয়। ওই ঘাসে কিছু বিষক্রিয়া থাকায় গরুগুলো পাতলা পায়খানায় আক্রান্ত হয়। আক্রান্ত গরুগুলোর মধ্যে দুটি গরু মারা গেছে। কিশোরগঞ্জে আগাম বন্যায় বোরো ধান তলিয়ে যাওয়া ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন ও ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম পরিদর্শন করেছে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির একটি প্রতিনিধি দল। আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্রতিনিধি দলটি জেলার ইটনা ও মিঠামইনের বিভিন্ন হাওর পরিদর্শন করে। সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি মাহমুদুর রহমান তারেক জানান, প্রথমে ধান, পরে মাছ। ধান, মাছ হারিয়ে হাহাকার আর অনিশ্চিত ভবিষ্যতের শঙ্কা কৃষকদের। একের পর এক হাওর পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় পুরো সুনামগঞ্জ জেলার কৃষি অর্থনীতি চরম হুমকির মুখে। এ অবস্থায় আগামী ৩০ এপ্রিল সুনামগঞ্জে আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জেলার বৃহত্তম বোরো ভাণ্ডার দেখার হাওর, খরচার হাওর এবং শনির হাওরসহ জেলার ১৩৩টি ছোট-বড় হাওরের সব ক’টির ফসল এখন পানির নিচে তলিয়ে গেছে। তাহিরপুর উপজেলার সর্ববৃহত্ শনির হাওর কোনোমতে টিকে থাকলেও শেষ রক্ষা হয়নি। বাঁধ ভেঙে এই হাওরের বিস্তীর্ণ এলাকার ফসল তলিয়ে গেছে। একইভাবে সোমবার তলিয়ে গেছে জামালগঞ্জ ও দিরাই উপজেলাবেষ্টিত অন্যতম বৃহত্তম পাকনার হাওর। সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মতে, জেলায় এ বছর ২ লাখ ২৩ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছিল। ফলনও হয়েছিল ভালো। প্রায় ৮ লাখ ৪৩ হাজার টন চাল পাওয়া যেত এই পরিমাণ ধান থেকে। যার আর্থিক মূল্য প্রায় ৩৪ হাজার ১৬ কোটি টাকা। সরকারি হিসাবেই ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৯০ ভাগ। যার আর্থিক ক্ষতি প্রায় ২২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। কিশোরগঞ্জে ভৈরবের জোয়ানশাহী হাওরের ৫ হাজার হেক্টর ধানিজমি। যেকোনো সময় তলিয়ে যেতে পারে এ হাওরের ২১ হাজার টন বোরো ধান। এরই মধ্যে উজান থেকে পাহাড়ি ঢল আর বৃষ্টির পানি বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে জমিতে ঢুকছে। তাই ফসল রক্ষার্থে কিছু কিছু কৃষক আধা-পাকা ধান কেটে ঘরে তোলার চেষ্টা করছে। বাকি কৃষকরা তাদের ফসল রক্ষার জন্য রাত-দিন বাঁধে পাহারা দিচ্ছে। শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে আগাম বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলের ফলে উপজেলার প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমির উঠতি বোর ধান পানির নিচে তলিয়ে যাওয়া প্রান্তিক কৃষকরা সর্বহারা। সিলেট অফিস জানায়, সিলেটের বন্যাদুর্গতদের জন্য ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় ৪ হাজার ৯০০ টন চাল ও ৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। এই বরাদ্দ থেকে ভিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে ৫০ হাজার পরিবারকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত মাসে ৩০ কেজি করে চাল ও নগদ ৫০০ টাকা করে দেওয়া হবে। গতকাল দুপুরে সিলেটের জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে জেলা প্রশাসক রাহাত আনোয়ার এ তথ্য জানান। বড়লেখা সংবাদদাতা জানান, অকাল বন্যায় মৌলভীবাজারের বড়লেখায় উপজেলার তালিমপুর ইউনিয়নের হাকালুকি হাওর অংশের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও মত্স্যজীবী পরিবারের মাঝে চাল ও নগদ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। খাদ্য ও অর্থ সহায়তা (জিআর) কর্মসূচির আওতায় ৪৬৬ জনকে ১৫ কেজি করে চাল ও ৩২ জন ক্ষতিগ্রস্তকে নগদ এক হাজার করে টাকা প্রদান করা হয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

ঢাকা মহানগরে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলতে আপাতত বাধা নেই

চাষিদের শেষ সম্বল গরু-ছাগল খাদ্যে বিষক্রিয়ায় মারা যাচ্ছে :হাওরে ভয়াবহ বিপর্যয়

আপডেট টাইম : ১২:১২:১৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ এপ্রিল ২০১৭

ধান, মাছ ও হাঁস হারিয়ে যাওয়ার পর হাওরের চাষিদের শেষ সম্বল গরু-ছাগল খাদ্যে বিষক্রিয়ায় মারা যাচ্ছে। পশুখাদ্যের অভাবে অনেক কৃষক গবাদি পশুকে ডুবে যাওয়া ঘাস ও ধান খাওয়াতে বাধ্য হচ্ছে। এতে নতুন করে অসুস্থ হচ্ছে গবাদি পশু। মৌলভীবাজারে ছাগল ও সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে ইতোমধ্যে গরু মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পশুখাদ্যের সঙ্কট দেখা দিয়েছে হাকালুকিসহ জেলার হাওরগুলোতে। চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছে হাকালুকির গবাদি পশু পালকরা। নতুন করে অসুস্থ হচ্ছে গবাদি পশু। মৌলভীবাজারের হাকালুকির হাওরের কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা অংশসহ জেলার হাওরপাড়ে পানিবন্দি কয়েক হাজার কৃষকের সঙ্গে পর্যাপ্ত খাবার না খেয়ে আছে এসব গবাদি পশু। দুয়েক জন কৃষক তলিয়ে যাওয়া ধান খেতে দিলে অসুস্থ হয়ে পড়ে অনেক গবাদি পশু। এতে ব্যাপক আতঙ্ক বিরাজ করছে হাওরাঞ্চলের গবাদি পশুর খামারিদের মধ্যে। ইতোমধ্যে সেখানে কয়েকটি ছাগল মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. শাহীদুজ্জামান বলেন, জেলার হাওরাঞ্চলে প্রায় ৬৭ হাজার গরু, ১৫ হাজার মহিষ, ২২ হাজার ছাগল, ৩ হাজার ভেড়া, পৌনে ৩ লাখ মুরগি ও ৯০ হাজার হাঁস অপ্রতুল খাদ্য সঙ্কটে রয়েছে। ঘাসের পরিবর্তে দানাদার খাবার দেওয়ার জন্য কৃষককে পরামর্শ দিচ্ছি। জগন্নাথপুর সংবাদদাতা জানান, সুনামগঞ্জে এই উপজেলাটির গরুসহ বিভিন্ন গৃহপালিত পশু হারানোর আশঙ্কায় আতঙ্কের প্রহর গুনছে জগন্নাথপুর উপজেলাবাসী। গত মঙ্গলবার উপজেলার চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নের ভূরাখালী গ্রামে দুটি গরু মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। গরু দুটি মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ বলেন, এ সংবাদ আমরা পেয়েছি। তবে কী কারণে গরুগুলো মারা গেছে আমরা এখনও নিশ্চিত নই। হাওরে খাদ্যের চাহিদা মেটাতে স্থানীয় নলুয়ার হাওর থেকে বিভিন্ন জাতের ‘ভটভটি’ নামক ঘাস তুলে এনে ভূরাখালী গ্রামের জনসাধারণ গরুসহ অন্যান্য গৃহপালিত পশুর খাদ্যের চাহিদা মেটাচ্ছে। কিন্তু এসব খাদ্য খেয়ে এই দুটি গরু মারা গেছে। গরু দুটির মালিক আরশ আলী ও ফরুক মিয়া জানান, আমরা গোখাদ্যের অভাবে হাওর থেকে ‘ভটভটি’ এনে গরুগুলোকে খাওয়ালে কিছুক্ষণ পর মারা যায়। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. কামরুল আহমদ খান বলেন, গৃহপালিত পশুর খাদ্য সঙ্কট হওয়ায় গরুগুলোকে সোমবার সারা দিন ভটভটি ঘাস খেতে দেওয়া হয়। ওই ঘাসে কিছু বিষক্রিয়া থাকায় গরুগুলো পাতলা পায়খানায় আক্রান্ত হয়। আক্রান্ত গরুগুলোর মধ্যে দুটি গরু মারা গেছে। কিশোরগঞ্জে আগাম বন্যায় বোরো ধান তলিয়ে যাওয়া ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন ও ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম পরিদর্শন করেছে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির একটি প্রতিনিধি দল। আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্রতিনিধি দলটি জেলার ইটনা ও মিঠামইনের বিভিন্ন হাওর পরিদর্শন করে। সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি মাহমুদুর রহমান তারেক জানান, প্রথমে ধান, পরে মাছ। ধান, মাছ হারিয়ে হাহাকার আর অনিশ্চিত ভবিষ্যতের শঙ্কা কৃষকদের। একের পর এক হাওর পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় পুরো সুনামগঞ্জ জেলার কৃষি অর্থনীতি চরম হুমকির মুখে। এ অবস্থায় আগামী ৩০ এপ্রিল সুনামগঞ্জে আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জেলার বৃহত্তম বোরো ভাণ্ডার দেখার হাওর, খরচার হাওর এবং শনির হাওরসহ জেলার ১৩৩টি ছোট-বড় হাওরের সব ক’টির ফসল এখন পানির নিচে তলিয়ে গেছে। তাহিরপুর উপজেলার সর্ববৃহত্ শনির হাওর কোনোমতে টিকে থাকলেও শেষ রক্ষা হয়নি। বাঁধ ভেঙে এই হাওরের বিস্তীর্ণ এলাকার ফসল তলিয়ে গেছে। একইভাবে সোমবার তলিয়ে গেছে জামালগঞ্জ ও দিরাই উপজেলাবেষ্টিত অন্যতম বৃহত্তম পাকনার হাওর। সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মতে, জেলায় এ বছর ২ লাখ ২৩ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছিল। ফলনও হয়েছিল ভালো। প্রায় ৮ লাখ ৪৩ হাজার টন চাল পাওয়া যেত এই পরিমাণ ধান থেকে। যার আর্থিক মূল্য প্রায় ৩৪ হাজার ১৬ কোটি টাকা। সরকারি হিসাবেই ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৯০ ভাগ। যার আর্থিক ক্ষতি প্রায় ২২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। কিশোরগঞ্জে ভৈরবের জোয়ানশাহী হাওরের ৫ হাজার হেক্টর ধানিজমি। যেকোনো সময় তলিয়ে যেতে পারে এ হাওরের ২১ হাজার টন বোরো ধান। এরই মধ্যে উজান থেকে পাহাড়ি ঢল আর বৃষ্টির পানি বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে জমিতে ঢুকছে। তাই ফসল রক্ষার্থে কিছু কিছু কৃষক আধা-পাকা ধান কেটে ঘরে তোলার চেষ্টা করছে। বাকি কৃষকরা তাদের ফসল রক্ষার জন্য রাত-দিন বাঁধে পাহারা দিচ্ছে। শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে আগাম বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলের ফলে উপজেলার প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমির উঠতি বোর ধান পানির নিচে তলিয়ে যাওয়া প্রান্তিক কৃষকরা সর্বহারা। সিলেট অফিস জানায়, সিলেটের বন্যাদুর্গতদের জন্য ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় ৪ হাজার ৯০০ টন চাল ও ৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। এই বরাদ্দ থেকে ভিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে ৫০ হাজার পরিবারকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত মাসে ৩০ কেজি করে চাল ও নগদ ৫০০ টাকা করে দেওয়া হবে। গতকাল দুপুরে সিলেটের জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে জেলা প্রশাসক রাহাত আনোয়ার এ তথ্য জানান। বড়লেখা সংবাদদাতা জানান, অকাল বন্যায় মৌলভীবাজারের বড়লেখায় উপজেলার তালিমপুর ইউনিয়নের হাকালুকি হাওর অংশের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও মত্স্যজীবী পরিবারের মাঝে চাল ও নগদ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। খাদ্য ও অর্থ সহায়তা (জিআর) কর্মসূচির আওতায় ৪৬৬ জনকে ১৫ কেজি করে চাল ও ৩২ জন ক্ষতিগ্রস্তকে নগদ এক হাজার করে টাকা প্রদান করা হয়।