লেবার পার্টির হয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্য পদে টানা দ্বিতীয়বারের মত নির্বাচিত হওয়ার প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর নাতনি টিউলিপ সিদ্দিক।
লন্ডনের হ্যাম্পস্টিড ও কিলবার্ন সংসদীয় এলাকা থেকে ৮ জুন অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে লড়বেন বঙ্গবন্ধুর কন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানার বড় মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক। এর আগে ২০১৫ সালে একই আসন থেকে সেখানকার প্রথম বাঙালি মুসলিম নারী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।
৩৪ বছর বয়সী টিউলিপ সিদ্দিক ১১৩৮ ভোটে তখনকার ক্ষমতাসীন কনজার্ভেটিভ পার্টির প্রার্থীকে পরাজিত করেন বঙ্গবন্ধুর নাতনি টিউলিপ। টিউলিপ সিদ্দিক পেয়েছিলেন ২৩ হাজার ৯৭৭ ভোট। আর কনজারভেটিভ পার্টির সায়মন মার্কাস পেয়েছিলেন ২২ হাজার ৮৩৯ ভোট।
বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানা ও শফিক সিদ্দিকীর মেয়ে টিউলিপ লন্ডনের মিচামে জন্মগ্রহণ করেন। তার শৈশব কেটেছে বাংলাদেশ, ভারত এবং সিঙ্গাপুরে। ১৫ বছর বয়স থেকে তিনি হ্যাম্পস্ট্যাড অ্যান্ড কিলবার্নে বসবাস করছেন। এই এলাকায় স্কুলে পড়েছেন ও কাউন্সিলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। লন্ডনের কিংস কলেজ থেকে পলিটিক্স, পলিসি ও গভর্মেন্ট বিষয়ে তার স্নাতকোত্তর ডিগ্রি রয়েছে।
মাত্র ১৬ বছর বয়সে লেবার পার্টির সদস্য হওয়া টিউলিপ অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল গ্রেটার লন্ডন অথরিটি এবং সেইভ দ্য চিলড্রেনের সঙ্গেও কাজ করেছেন। ২০১০ সালে ক্যামডেন কাউন্সিলে প্রথম বাঙালি নারী কাউন্সিলর নির্বাচিত হন তিনি। টিউলিপ সিদ্দিক হলেন তিন ব্রিটিশ বাংলাদেশির একজন, যারা যুক্তরাজ্যের এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। বাকি দুজন ছিলেন সিলেটের মেয়ে রুশনারা আলী, রূপা হক। তারা তিনজনই লেবার পার্টির হয়ে নির্বাচনে অংশ নেন। এবারও একই পার্টি থেকে এই তিন বাংলাদেশী নারী নির্বাচন লড়বেন।
এবারের নির্বাচনের প্রচারণায় ইতিবাচক সাড়া পেয়ে দারুণ উচ্ছসিত টিউলিপ সিদ্দিক। নিজের ব্লগে লিখেছেন,’ সাধারণ নির্বাচনের প্রচারণা চলছে। প্রচারণার প্রথম কয়দিন যেভাবে আমি মানুষের সমর্থন পেয়েছি, তাতে আমি মুগ্ধ। যারা এর আগে কখনোই আমার জন্য প্রচারণায় নামেননি, তারাও নির্বাচনী প্রচারণায় কীভাবে সাহায্য করতে পারে বলে আমাকে জিজ্ঞেস করছে!’
জীবনঘনিষ্ঠ নানা ইস্যু নিয়ে সমাজসেবামূলক রাজনীতি করে ছোটবেলা থেকেই নিজের এলাকায় বিভিন্ন বয়সের মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন টিউলিপ সিদ্দিক। ২০১০ সালে ক্যামডেন থেকে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়ে সরকারি বাজেট বরাদ্দ কমানোর মুখে সেখানকার কমিউনিটি সেন্টার ও লাইব্রেরিগুলো রক্ষায় ঐতিহাসিক ভূমিকা রাখেন টিউলিপ। এর আগে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, সেভ দ্যা চিলড্রেন ইত্যাদি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সাথে মানব পাচার এবং আধুনিক যুগের দাসপ্রথা নিয়ে কাজ করেছেন।