রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ হাওড় অঞ্চলের বন্যা দুর্গতদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে বলেছেন, পাহাড়ী ঢলে সৃষ্ট আকস্মিক প্লাবন থেকে হাওড়কে রক্ষার জন্য যথাযথ নাব্যতা সৃষ্টি করতে সীমান্ত থেকে ভৈরবমুখী নদীগুলোর ক্যাপিটাল ড্রেজিং অপরিহার্য। প্লাবন থেকে হাওড় অঞ্চলকে রক্ষা করতে ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের ব্যবস্থা করা অবশ্যই প্রয়োজন। এছাড়া টেকসই ডুবন্ত বাঁধ নির্মাণ করাও জরুরি।
রাষ্ট্রপতি সোমবার রাতে স্থানীয় নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, সুশীল সমাজ, পেশাজীবী, শিক্ষাবিদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন।
ভারতের পাহাড় থেকে ধেয়ে আসা পানির কারণে সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ ও হাওড়ের অন্যান্য অঞ্চলে আগাম প্লাবনে উদ্বেগ প্রকাশ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, হাওড়ের একজন অধিবাসী ও একজন কৃষকের সন্তান হওয়ায় আমি বিরাজমান এই পরিস্থিতিতে খুবই উদ্বিগ্ন এবং আমাদের এই অবস্থার স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন বলে মনে করি।
রাষ্ট্রপতি বলেন, আমি এ ব্যাপারে ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলেছি এবং তিনি আমাকে এ সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের আগামী বোরো মৌসুম পর্যন্ত সহায়তা দেয়া হবে। এ ক্ষেত্রে তিনি তার সীমাবদ্ধতার কথাও উল্লেখ করেন।
রাষ্ট্রপতি হামিদ বলেন, আমি আপনাদের সন্তান এবং দেশের রাষ্ট্রপতি। আমাকে দেশের সব নাগরিকদের নিয়ে চিন্তা করতে হয়। কিন্তু আপনাদের সন্তান হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে আমি গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করবো এবং সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রাষ্ট্রপতি বন্যা কবলিতদের কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রী ও বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার আশ্বাস দেন।
তিনি সম্মিলিতভাবে এ সমস্যা সমাধানে স্বচ্ছল ও স্থানীয় নেতাদের সমন্বিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান, সংসদ মুহিবুর রহমান মানিক, ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, রেজোয়ান আহমেদ তৌফিক, পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ, এ্যাডভোকেট শামসুননাহার রব্বানী, ডা. জয়া সেন গুপ্তা এবং সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলাম অন্যান্যের মধ্যে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
এর আগে রাষ্ট্রপতি সুনামগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় এবং সুনামগঞ্জ ঐতিহ্য যাদুঘর পরিদর্শন করেন।
তিনি আজ সকালে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে যুদ্ধক্ষেত্রে তাঁর সহযোদ্ধা মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। রাষ্ট্রপতি তাদেরকে বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড ত্বরান্বিত করা এবং নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরার আহ্বান জানান।