ঢাকা ১০:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হাওড় অঞ্চলকে দুর্গত এলাকা ঘোষণার দাবি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০১:৫৬:০২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ এপ্রিল ২০১৭
  • ২৬৭ বার

বৃষ্টির পানি আর পাহাড়ি ঢলে বাঁধ ভেঙে সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণা, হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জসহ হাওর অঞ্চলের বোরো ফসল তলিয়ে যাওয়ায় এসব অঞ্চলকে দুর্গত এলাকা ঘোষণা করে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন কৃষক-ক্ষেতমজুর সমিতির নেতারা।শনিবার বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এ দাবি জানানো হয়।

ক্ষতিগ্রস্ত হাওরাঞ্চলের কৃষকদের নিয়ে বাংলাদেশ কৃষক সমিতি ও ক্ষেতমজুর সমিতি এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে।

সমাবেশে নেতারা বলেন, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসেই হাওরাঞ্চলের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণের কাজ শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু ঠিকাদাররা কাজ শেষ না করেই সরকারি কর্মকর্তাদের যোগসাজশে টাকা উঠিয়ে নিচ্ছে। এসব ফসলরক্ষা বাঁধে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করায় তা ভেঙে কৃষকের ফসল তলিয়ে যাচ্ছে।

দুর্বল বাঁধ নির্মাণের সঙ্গে জড়িত পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা, ঠিকাদারসহ দায়ীদের শাস্তি দাবি জানিয়ে নেতারা বলেন, এসব অসৎ কর্মকর্তা ও লোকরা প্রতিবছরই হাওরের সাধারণ মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। এদের বিচারের আওতায় না আনলে হাওরবাসীরাই এদের প্রতিহত করবে।

অপরিপক্ক ধান তলিয়ে যাওয়ায় এবার এক মুঠো ধানও কৃষক ঘরে তুলতে পারবে না উল্লেখ করে কৃষক-ক্ষেতমজুর নেতারা বলেন, আগামী কয়েকদিনে পানি কমলেও তলিয়ে যাওয়া ধান কৃষক ঘরে তুলতে পারবে না। কারণ এবার অপরিপক্ক অবস্থায় সমস্ত ফসল তলিয়ে গেছে। ফলে কৃষকরা সর্বশান্ত হয়ে পরেছে। তাই অবিলম্বে এসব হাওরাঞ্চলকে দুর্গত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করে কৃষকসহ ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে।
কম দামে খাদ্য সরবরাহসহ ঋণের কিস্তির সব কার্যক্রম বন্ধ, সুদছাড়া নতুন ঋণের ব্যবস্থা, স্কুল-কলেজের বেতন মওকুফ, স্বাস্থ্য রক্ষায় বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের নানামুখী কর্মসূচি নেওয়ারও দাবি জানানো হয় সমাবেশ থেকে।

এছাড়াও অবিলম্বে শস্যবীমা চালু, কর্মহীন ক্ষেতমজুরসহ গ্রামের গরিব মানুষের জন্য সারা বছর কাজ ও খাদ্যের নিশ্চয়তার দাবিও জানানো হয়।

কৃষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন, ক্ষেতমজুর সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রেজা, কৃষক সমিতির কেন্দ্রীয় নেতা আজহারুল ইসলাম আরজু, জাহিদ হোসেন খান, আবিদ হোসেন, ক্ষেতমজুর সমিতির কেন্দ্রীয় নেতা মোতালেব হোসেন, ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী, সুনামগঞ্জ জেলা সিপিবি সভাপতি অধ্যাপক চিত্তরঞ্জন তালুকদার ও স্থানীয় কয়েকজন জনপ্রতিনিধি।
বিক্ষোভ সমাবেশটি পরিচালনা করেন ক্ষেতমজুর সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক অর্ণব সরকার। সমাবেশে সংহতি জানিয়ে ‘বাঁচাও হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ’ আন্দোলনের ঢাকার শিক্ষার্থী ও সুনামগঞ্জ সমিতির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

হাওড় অঞ্চলকে দুর্গত এলাকা ঘোষণার দাবি

আপডেট টাইম : ০১:৫৬:০২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ এপ্রিল ২০১৭

বৃষ্টির পানি আর পাহাড়ি ঢলে বাঁধ ভেঙে সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণা, হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জসহ হাওর অঞ্চলের বোরো ফসল তলিয়ে যাওয়ায় এসব অঞ্চলকে দুর্গত এলাকা ঘোষণা করে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন কৃষক-ক্ষেতমজুর সমিতির নেতারা।শনিবার বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এ দাবি জানানো হয়।

ক্ষতিগ্রস্ত হাওরাঞ্চলের কৃষকদের নিয়ে বাংলাদেশ কৃষক সমিতি ও ক্ষেতমজুর সমিতি এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে।

সমাবেশে নেতারা বলেন, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসেই হাওরাঞ্চলের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণের কাজ শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু ঠিকাদাররা কাজ শেষ না করেই সরকারি কর্মকর্তাদের যোগসাজশে টাকা উঠিয়ে নিচ্ছে। এসব ফসলরক্ষা বাঁধে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করায় তা ভেঙে কৃষকের ফসল তলিয়ে যাচ্ছে।

দুর্বল বাঁধ নির্মাণের সঙ্গে জড়িত পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা, ঠিকাদারসহ দায়ীদের শাস্তি দাবি জানিয়ে নেতারা বলেন, এসব অসৎ কর্মকর্তা ও লোকরা প্রতিবছরই হাওরের সাধারণ মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। এদের বিচারের আওতায় না আনলে হাওরবাসীরাই এদের প্রতিহত করবে।

অপরিপক্ক ধান তলিয়ে যাওয়ায় এবার এক মুঠো ধানও কৃষক ঘরে তুলতে পারবে না উল্লেখ করে কৃষক-ক্ষেতমজুর নেতারা বলেন, আগামী কয়েকদিনে পানি কমলেও তলিয়ে যাওয়া ধান কৃষক ঘরে তুলতে পারবে না। কারণ এবার অপরিপক্ক অবস্থায় সমস্ত ফসল তলিয়ে গেছে। ফলে কৃষকরা সর্বশান্ত হয়ে পরেছে। তাই অবিলম্বে এসব হাওরাঞ্চলকে দুর্গত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করে কৃষকসহ ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে।
কম দামে খাদ্য সরবরাহসহ ঋণের কিস্তির সব কার্যক্রম বন্ধ, সুদছাড়া নতুন ঋণের ব্যবস্থা, স্কুল-কলেজের বেতন মওকুফ, স্বাস্থ্য রক্ষায় বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের নানামুখী কর্মসূচি নেওয়ারও দাবি জানানো হয় সমাবেশ থেকে।

এছাড়াও অবিলম্বে শস্যবীমা চালু, কর্মহীন ক্ষেতমজুরসহ গ্রামের গরিব মানুষের জন্য সারা বছর কাজ ও খাদ্যের নিশ্চয়তার দাবিও জানানো হয়।

কৃষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন, ক্ষেতমজুর সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রেজা, কৃষক সমিতির কেন্দ্রীয় নেতা আজহারুল ইসলাম আরজু, জাহিদ হোসেন খান, আবিদ হোসেন, ক্ষেতমজুর সমিতির কেন্দ্রীয় নেতা মোতালেব হোসেন, ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী, সুনামগঞ্জ জেলা সিপিবি সভাপতি অধ্যাপক চিত্তরঞ্জন তালুকদার ও স্থানীয় কয়েকজন জনপ্রতিনিধি।
বিক্ষোভ সমাবেশটি পরিচালনা করেন ক্ষেতমজুর সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক অর্ণব সরকার। সমাবেশে সংহতি জানিয়ে ‘বাঁচাও হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ’ আন্দোলনের ঢাকার শিক্ষার্থী ও সুনামগঞ্জ সমিতির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।