এক, মুনমুন দুই, ময়ূরী তিন শতাধিক ছবির নায়িকা। মুনমুন ২০০৩ আর ময়ূরী-পলি ২০০৭ সালের পর থেকে বেকার। কোথায় আছেন তাঁরা? কেমন আছেন?
২০০৩ সালে বিয়ে করেন মুনমুন। এই ‘নিষিদ্ধ নারী’ এখন দুই ছেলের মা। উত্তরায় ছোটখাটো একটা গার্মেন্টসও দিয়েছেন। থাকেনও সেখানেই। সংসারের কাজ শেষ করে প্রতিদিন অফিস করেন। ব্যবসা বাড়ানোর জন্য ঋণের ব্যবস্থাও করছেন। ব্যবসাই এখন তাঁর সব। তাহলে চলচ্চিত্র? প্রশ্নটা শুনে কিছুক্ষণ চুপ করে রইলেন। তারপর বললেন, ‘অভিনয় তো করতেই চাই। অনেক পরিচালককে বলেছিও। কিন্তু কে টাকা লগ্নি করবে আমার পেছনে? যে কয়টা ছবির প্রস্তাব এখন পর্যন্ত পেয়েছি, কোনোটাই পছন্দ হয়নি। একসময় এক নম্বর নায়িকা ছিলাম। আমার নামেই ছবি চলত। চাইলেই এখন যে-সে প্রস্তাবে রাজি হতে পারি না। ’ চার বছর আগে সর্বশেষ মুক্তি পেয়েছিল মুনমুনের ‘কুমারী মা’। ২০০৭ সালে ছবির শুটিং শেষ করেছিলেন। দীর্ঘদিন পড়ে থাকায় ছবিটি ব্যবসায়িকভাবে সুবিধা করতে পারেনি। মুক্তির অপেক্ষায় আছে ‘মেঘকন্যা’, ‘রাগী’ ও ‘কাঁসার থালায় রুপালি চাঁদ’। ছবিগুলো নিয়ে আশাবাদী মুনমুন। ‘রাগী’তে তিনি খলনায়িকা।
দিয়ে নতুন করে আলোচনায় আসতে পারব। ’ শীতের সময় দারুণ ব্যস্ত থাকেন মুনমুন। এবারের মৌসুমে ৪০ জেলায় প্রায় ৬০টি যাত্রাপালায় অংশ নিয়েছেন। যাত্রায় ভালো আয় হয় বলেও জানান তিনি।
এফডিসির বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এখনো হাজির হন ময়ূরী। ফিরতে চান চলচ্চিত্রে। ছবি প্রযোজনারও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বছরখানেক আগে বলিউডের ‘ডার্টি পিকচার’-এর অনুকরণে ‘ডার্টি পিকচার’ তৈরির ঘোষণা দিয়েছিলেন। এত দিনেও গুছিয়ে উঠতে পারেননি। তবে এবার নাকি সময় হয়েছে। বলেন, ‘বাজেট নিয়ে ঝামেলা হচ্ছিল। চিত্রনাট্য তৈরি করতেই বেশি সময় লেগেছে। এখন সব ঠিক, শিগগিরই শুটিং শুরু করব। ’ ময়ূরীর বেশির ভাগ সময় কাটে সার্কাস দলের সঙ্গে। ‘নিউ সুপার সার্কাস’-এর হয়ে কাজ করেন। শীতের মৌসুমে যাত্রাপালায়ও দেখা যায় তাঁকে। ২০০৯ সালে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন রেজাউল করিম মিলনকে। এক সন্তানের মা তিনি। ২০১৫ সালে মারা যান মিলন। এর পর থেকে একাই আছেন। মগবাজারে নিজের ফ্ল্যাটেই থাকেন। ময়ুরী অভিনীত শেষ ছবি ‘বাংলাভাই’। ছবিতে আইটেম গানে নেচেছিলেন। নিয়মিত অভিনয় করার কথা ভাবছেন। পাশাপাশি ব্যবসা দাঁড় করানোরও চেষ্টা করছেন।
আর্থিকভাবে বেশ সচ্ছল পলি। শতাধিক ছবির এই নায়িকা থাকেন গুলশানের আলিশান ফ্ল্যাটে। বেশ কিছু দোকানও আছে তাঁর। দামি গাড়ি ব্যবহার করেন। স্বামী বড় ব্যবসায়ী। বিভিন্ন উৎসবে এফডিসির দুস্থ শিল্পীদের সাহায্যেও এগিয়ে আসেন। যোগাযোগ রাখেন তার সময়কার অভিনেতা-অভিনেত্রীদের সঙ্গে। সুবিধা-অসুবিধায় পাশে দাঁড়ান। পলি বলেন, ‘অনেক ভালো আছি। কোনো চিন্তা নেই। বরং আমার সময়কার অনেকে খারাপ আছেন। তাঁদের জন্য কষ্ট হয়। যতটুকু পারি সাহায্য করি। ’ পলি কোনো যাত্রাপালা বা সার্কাসে কাজ করেন না। তবে বিদেশে কোনো কনসার্ট হলে বা ভালো পারিশ্রমিক পেলে হাজির হন। অবসর কাটে স্বামীর ব্যবসার কাজ দেখাশোনা করে। চার সন্তানের মা। তাই ঝামেলাও কম নয়! চলচ্চিত্রে ফেরার ইচ্ছাও নেই। সর্বশেষ অভিনয় করেছেন কাজী হায়াতের ‘মানিক রতন দুই ভাই’ ছবিতে, একটি আইটেম গানে নেচেছিলেন। এরপর আরো কিছু প্রস্তাব পেলেও ফিরিয়ে দেন। ‘সংসার নিয়ে অনেক ব্যস্ত। বাচ্চারা পড়াশোনা করছে। ওদের দেখাশোনা করতে হয়। নামসর্বস্ব এসব ছবিতে কাজ করে অযথা সময় নষ্ট করতে চাই না। যদি কেউ আমাকে নিয়ে আলাদাভাবে গল্প সাজাতে চান তাহলে ভেবে দেখব। ’-কালের কণ্ঠ