যুক্তরাষ্ট্র গতকাল সিরিয়ার একটি সরকারী লক্ষ্যবস্তুতে সামরিক হামলা চালিয়েছে। এ সপ্তাহের শুরুতে একটি রাসায়নিক হামলায় কয়েক ডজন বেসামরিক মানুষ নিহত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এ হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বিদ্রোহ অধ্যুষিত অঞ্চলে ওই রাসায়নিক হামলা সিরিয়ার সরকার চালিয়েছে বলে জোর দাবি রয়েছে।
সিএনএন’র খবরে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ থেকে সিরিয়ার সরকারী বিমানঘাঁটিতে ৫৯টি দূরপাল্লার টোমাহক ক্রুজ মিশাইল নিক্ষেপ করা হয়। এই বিমান ঘাঁটির বিমান থেকেই রাসায়নিক হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। এই হামলার মাধ্যমে সিরিয়ার ছয় বছরব্যাপী গৃহযুদ্ধে এই প্রথম সরাসরি হস্তক্ষেপ করলো যুক্তরাষ্ট্র।
হামলা চালানোর নির্দেশ দেওয়ার কয়েক ঘন্টা পর ট্রাম্প এক সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় বলেন, ‘আজ, সিরিয়ার একটি বিমান ঘাঁটিতে সামরিক হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়েছি যেখান থেকে ওই রাসায়নিক হামলা চালানো হয়েছিল। এ ধরণের প্রাণঘাতী রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহার ও বিস্তার রোধ যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য অতীব প্রয়োজনীয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘এ নিয়ে কোন সন্দেহ নেই যে, সিরিয়া নিষিদ্ধ রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করেছে। রাসায়নিক অস্ত্র কনভেনশন-এর অধীনে নিজেদের বাধ্যবাধকতা লঙ্ঘণ করেছে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের আহ্বান উপেক্ষা করেছে। আসাদের (সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ) আচরণ পাল্টাতে অতীতে বছরের পর বছর ধরে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সবই ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে।’
সিএনএন’র খবরে বলা হয়, সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে সামরিক হস্তক্ষেপ করা উচিৎ কিনা এ নিয়ে নিজের পূর্বের অবস্থান থেকে নাটকীয়ভাবে সরে এসেছেন ট্রাম্প। নিজের নির্বাচনী প্রচারণার সময় আসাদের ওপর হামলার বিরোধীতা করেন তিনি। কিন্তু ওই রাসায়নিক হামলায় হতাহতদের ছবি দেখে তিনি দৃশ্যত প্রকাশ্যে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন। এরপরই বেশ তাড়াতাড়িই সিরিয়ায় হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র।
পেন্টাগনের মুখপাত্র ক্যাপ্টেন জেফ ডেভিস সাংবাদিকদের বলেন, মার্কিন হামলায় টার্গেট করা হয় বিমান, বিমান রাখার স্থান, পেট্রোলিয়াম ও লজিস্টিক গুদাম, গোলাবারুদের বাঙ্কার, বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও বিমানঘাঁটি পরিচালনায় প্রয়োজনীয় বস্তু। পূর্বাঞ্চলীয় ভূমধ্যসাগরে অবস্থানরত যুদ্ধজাহাজ থেকে এই মিশাইল নিক্ষেপ করা হয়। পেন্টাগন এক বিবৃতিতে বলেছে, শায়রাত নামে ওই বিমানঘাঁটির অবকাঠামো ও যন্ত্রপাতি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ ও ধ্বংস হয়েছে বলে প্রাথমিক লক্ষণে দেখা যাচ্ছে। ফলে রাসায়নিক হামলা চালাতে সিরিয়ার সরকারের সামর্থ্য হ্রাস পেয়েছে।
এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন অবশ্য বলেছেন, এই হামলা যুক্তরাষ্ট্রের সিরিয়া নীতিতে কোন পরিবর্তনের আলামত নয়। তিনি এও নিশ্চিত করেন, হামলার আগে আসাদের মিত্র রাশিয়াকে হামলার বিষয়টি অবহিত করা হয়।
সংবাদ শিরোনাম
সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হামলা
- Reporter Name
- আপডেট টাইম : ১১:২৮:০৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৭ এপ্রিল ২০১৭
- ৩০৩ বার
Tag :
জনপ্রিয় সংবাদ