ঢাকা ০৯:২৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দায়িত্ব ফিরে পেয়েই বরখাস্ত বিএনপির তিন মেয়র

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:২০:১৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩ এপ্রিল ২০১৭
  • ২৯৬ বার

দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ে পদ ফিরে পাওয়ার পর আবার বরখাস্ত হয়েছেন বিএনপিপন্থী তিন মেয়র। তারা হলেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ও হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র জি কে গউছ।

তাদের বিরুদ্ধে মামলা বিচারাধীন থাকায় রবিবার স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় পৃথক পৃথক আদেশে তিন মেয়রকে সাময়িক বরখাস্ত করে। এর মধ্যে সিলেট ও রাজশাহী মেয়র আজই দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। আর হবিগঞ্জের মেয়র ১০ দিন আগে দায়িত্ব ফিরে পান।

২০১৩ সালের জুনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীদের পরাজিত করে মেয়র হন আরিফুল হক ও মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। আর ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে কারাগারে থেকেও বিজয়ী হন জি কে গউছ।

সকালে দায়িত্বে, দুপুরে বরখাস্ত আরিফুল

দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ে পদ ফিরে পেয়ে রবিবার সকালে মেয়রের চেয়ারে বসেছিলেন আরিফুল হক। দুপুরে তাকে আবার সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়রের পদ থেকে বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।

সূত্র জানায়, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সিটি করপোরেশন অ্যাক্ট উপ-সচিব মো. মাহমুদুল আলম সিলেট সিটি করপোরেশনে দুপুরে একটি ফ্যাক্স বার্তা পাঠান। ওই বার্তায় বলা হয়েছে, ‘আরিফুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল মামলা-৪/২০০৯ এর সম্পূরক অভিযোগপত্র গত ২২ মার্চ আদালতে গৃহীত হয়েছে। সেহেতু সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে স্থানীয় সরকার বিভাগ আইন ২০০৯ এর ১২ উপধারা প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।’

সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা মামলায় দুই বছরেরও বেশি সময় কারাগারে আটক থাকার পর সম্প্রতি জামিনে মুক্তি পান আরিফুল হক। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের বরখাস্তের আদেশ নিয়ে জটিলতা কাটিয়ে ২৭ মাস পর তিনি রবিবার সকালে মেয়রের চেয়ারে বসেন। এর আগে, বিএনপি দলীয় এ মেয়রকে নেতাকর্মীরা নগরীর কুমারপাড়ার বাসা থেকে শোডাউন দিয়ে সিটি করপোরেশনে নিয়ে আসেন।

২০১৩ সালের ১৫ জুন সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালে হবিগেঞ্জে সাবেক অর্থমন্ত্রী কিবরিয়াকে গ্রেনেড হামলা করে হত্যা মামলার এজাহারভূক্ত আসামি হিসেবে তিনি। ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর হবিগঞ্জের জ্যেষ্ঠ হাকিম আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিচারক তার জামিন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠান।

এই মামলায় অভিযোগপত্রে আরিফুল হক চৌধুরীর নাম আসার পর ২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি তাকে বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এরপর তিনি ওই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করলে সেই বরখাস্তের আদেশ স্থগিত করে হাইকোর্ট। গত ২৩ মার্চ সেই আদেশ বহাল রাখেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগও।

গত ৩০ মার্চ স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মাহমুদুল আলম স্বাক্ষরিত এক পত্রে আদালতের আদেশের যথাযথ প্রতিফলনের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করেন। এ পত্র প্রাপ্তির তিন দিন পর আরিফুল হক চৌধুরী মেয়রের চেয়ারে বসেন এবং তিন ঘণ্টা পর আবার বরখাস্ত হন।

চেয়ারে বসা মাত্রই পদ হারালেন বুলবুল

অফিস কক্ষের তালা ভেঙে চেয়ারে বসা মাত্রই আবার বরখাস্তের খবর শুনতে হলো রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।

রবিবার বিকাল ৩টা পাঁচ মিনিটের দিকে ফ্যাক্সযোগে আদেশের কপিটি নগরভবনে আসে। এর আগে ৩টা দুই মিনিটের দিকে মেয়র বুলবুল তার অফিসকক্ষে নিজের চেয়ারে গিয়ে বসেন। আদেশের খবর শুনে ৩টা ১২ মিনিটের দিকে তিনি বেরিয়ে যান।

মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, মেয়র বুলবুলের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার অভিযোগপত্র আদালতে গৃহীত হয়েছে। আর স্থানীয় সরকারের (সিটি করপোরেশন) ২০০৯ সালের আইনে মেয়রের নামে মামলার অভিযোগপত্র আদালতে গৃহীত হলে তাকে বরখাস্তের বিধান রয়েছে। তাই মেয়র বুলবুলকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলো।

২০১৫ সালে ৭ মে একই কারণে সিটি মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। ২০১৬ সালের ১০ মার্চ উচ্চ আদালত তার বরখাস্ত আদেশ অবৈধ ঘোষণা করেন।

গত মঙ্গলবার স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মাহমুদুল আলম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়নে ভারপ্রাপ্ত মেয়র ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেয়া হয়।

১০ দিনের মাথায় আবার বরখাস্ত গউছ

দায়িত্ব গ্রহণের মাত্র ১০ দিনের মাথায় আবারও হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র জিকে গউছকে বরখাস্ত করা হয়েছে। রবিবার স্থানীয় সরকারের এক আদেশে তাকে বরখাস্ত করা হয়।

বরখাস্তের কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, সুনামগঞ্জে আওয়ামী লীগ নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের ওপর হামলা মামলায় মেয়র জিকে গউছ চার্জশিটভুক্ত আসামি।

হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক সাবিনা আলম বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, রবিবার দুপুরে এ সংক্রান্ত একটি আদেশ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠানো হয়েছে।

নির্বাচিত হওয়ার পর গত ২৩ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন জেল থেকে নির্বাচিত পৌর মেয়র জিকে গউছ।

২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জের বৈদ্যের বাজারে গ্রেনেড হামলায় সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়াসহ পাঁচজন নিহতের মামলায় সর্বশেষ সম্পূরক চার্জশিটে জিকে গউছকে আসামিভুক্ত করা হয়। ২০১৪ সালের ২৮ ডিসেম্বর ‍তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। এসব মামলায় কারাগারে থেকেই পৌর নির্বাচনে অংশ নেন তিনি। বিপুল ভোটে বিজয়ী হন জিকে গউছ। প্যারোলে মুক্ত হয়ে শপথ গ্রহণ করেন। ফৌজদারি মামলায় কারাগারে আটক থাকায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে।

এ ছাড়াও ২০০৪ সালের ২১ জুন দিরাই বাজারে সদ্য প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা সুরঞ্জিত সেন গুপ্তের একটি সমাবেশে বোমা হামলার মামলায়ও তাকে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হয়।

এ বছরের ৪ জানুয়ারি উচ্চ আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পান জিকে গউস। এরপর ২৩ মার্চ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে তাকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন হবিগঞ্জ পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র দিলীপ দাশ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

দায়িত্ব ফিরে পেয়েই বরখাস্ত বিএনপির তিন মেয়র

আপডেট টাইম : ১২:২০:১৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩ এপ্রিল ২০১৭

দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ে পদ ফিরে পাওয়ার পর আবার বরখাস্ত হয়েছেন বিএনপিপন্থী তিন মেয়র। তারা হলেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ও হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র জি কে গউছ।

তাদের বিরুদ্ধে মামলা বিচারাধীন থাকায় রবিবার স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় পৃথক পৃথক আদেশে তিন মেয়রকে সাময়িক বরখাস্ত করে। এর মধ্যে সিলেট ও রাজশাহী মেয়র আজই দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। আর হবিগঞ্জের মেয়র ১০ দিন আগে দায়িত্ব ফিরে পান।

২০১৩ সালের জুনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীদের পরাজিত করে মেয়র হন আরিফুল হক ও মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। আর ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে কারাগারে থেকেও বিজয়ী হন জি কে গউছ।

সকালে দায়িত্বে, দুপুরে বরখাস্ত আরিফুল

দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ে পদ ফিরে পেয়ে রবিবার সকালে মেয়রের চেয়ারে বসেছিলেন আরিফুল হক। দুপুরে তাকে আবার সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়রের পদ থেকে বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।

সূত্র জানায়, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সিটি করপোরেশন অ্যাক্ট উপ-সচিব মো. মাহমুদুল আলম সিলেট সিটি করপোরেশনে দুপুরে একটি ফ্যাক্স বার্তা পাঠান। ওই বার্তায় বলা হয়েছে, ‘আরিফুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল মামলা-৪/২০০৯ এর সম্পূরক অভিযোগপত্র গত ২২ মার্চ আদালতে গৃহীত হয়েছে। সেহেতু সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে স্থানীয় সরকার বিভাগ আইন ২০০৯ এর ১২ উপধারা প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।’

সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা মামলায় দুই বছরেরও বেশি সময় কারাগারে আটক থাকার পর সম্প্রতি জামিনে মুক্তি পান আরিফুল হক। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের বরখাস্তের আদেশ নিয়ে জটিলতা কাটিয়ে ২৭ মাস পর তিনি রবিবার সকালে মেয়রের চেয়ারে বসেন। এর আগে, বিএনপি দলীয় এ মেয়রকে নেতাকর্মীরা নগরীর কুমারপাড়ার বাসা থেকে শোডাউন দিয়ে সিটি করপোরেশনে নিয়ে আসেন।

২০১৩ সালের ১৫ জুন সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালে হবিগেঞ্জে সাবেক অর্থমন্ত্রী কিবরিয়াকে গ্রেনেড হামলা করে হত্যা মামলার এজাহারভূক্ত আসামি হিসেবে তিনি। ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর হবিগঞ্জের জ্যেষ্ঠ হাকিম আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিচারক তার জামিন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠান।

এই মামলায় অভিযোগপত্রে আরিফুল হক চৌধুরীর নাম আসার পর ২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি তাকে বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এরপর তিনি ওই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করলে সেই বরখাস্তের আদেশ স্থগিত করে হাইকোর্ট। গত ২৩ মার্চ সেই আদেশ বহাল রাখেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগও।

গত ৩০ মার্চ স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মাহমুদুল আলম স্বাক্ষরিত এক পত্রে আদালতের আদেশের যথাযথ প্রতিফলনের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করেন। এ পত্র প্রাপ্তির তিন দিন পর আরিফুল হক চৌধুরী মেয়রের চেয়ারে বসেন এবং তিন ঘণ্টা পর আবার বরখাস্ত হন।

চেয়ারে বসা মাত্রই পদ হারালেন বুলবুল

অফিস কক্ষের তালা ভেঙে চেয়ারে বসা মাত্রই আবার বরখাস্তের খবর শুনতে হলো রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।

রবিবার বিকাল ৩টা পাঁচ মিনিটের দিকে ফ্যাক্সযোগে আদেশের কপিটি নগরভবনে আসে। এর আগে ৩টা দুই মিনিটের দিকে মেয়র বুলবুল তার অফিসকক্ষে নিজের চেয়ারে গিয়ে বসেন। আদেশের খবর শুনে ৩টা ১২ মিনিটের দিকে তিনি বেরিয়ে যান।

মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, মেয়র বুলবুলের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার অভিযোগপত্র আদালতে গৃহীত হয়েছে। আর স্থানীয় সরকারের (সিটি করপোরেশন) ২০০৯ সালের আইনে মেয়রের নামে মামলার অভিযোগপত্র আদালতে গৃহীত হলে তাকে বরখাস্তের বিধান রয়েছে। তাই মেয়র বুলবুলকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলো।

২০১৫ সালে ৭ মে একই কারণে সিটি মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। ২০১৬ সালের ১০ মার্চ উচ্চ আদালত তার বরখাস্ত আদেশ অবৈধ ঘোষণা করেন।

গত মঙ্গলবার স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মাহমুদুল আলম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়নে ভারপ্রাপ্ত মেয়র ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেয়া হয়।

১০ দিনের মাথায় আবার বরখাস্ত গউছ

দায়িত্ব গ্রহণের মাত্র ১০ দিনের মাথায় আবারও হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র জিকে গউছকে বরখাস্ত করা হয়েছে। রবিবার স্থানীয় সরকারের এক আদেশে তাকে বরখাস্ত করা হয়।

বরখাস্তের কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, সুনামগঞ্জে আওয়ামী লীগ নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের ওপর হামলা মামলায় মেয়র জিকে গউছ চার্জশিটভুক্ত আসামি।

হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক সাবিনা আলম বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, রবিবার দুপুরে এ সংক্রান্ত একটি আদেশ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠানো হয়েছে।

নির্বাচিত হওয়ার পর গত ২৩ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন জেল থেকে নির্বাচিত পৌর মেয়র জিকে গউছ।

২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জের বৈদ্যের বাজারে গ্রেনেড হামলায় সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়াসহ পাঁচজন নিহতের মামলায় সর্বশেষ সম্পূরক চার্জশিটে জিকে গউছকে আসামিভুক্ত করা হয়। ২০১৪ সালের ২৮ ডিসেম্বর ‍তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। এসব মামলায় কারাগারে থেকেই পৌর নির্বাচনে অংশ নেন তিনি। বিপুল ভোটে বিজয়ী হন জিকে গউছ। প্যারোলে মুক্ত হয়ে শপথ গ্রহণ করেন। ফৌজদারি মামলায় কারাগারে আটক থাকায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে।

এ ছাড়াও ২০০৪ সালের ২১ জুন দিরাই বাজারে সদ্য প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা সুরঞ্জিত সেন গুপ্তের একটি সমাবেশে বোমা হামলার মামলায়ও তাকে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হয়।

এ বছরের ৪ জানুয়ারি উচ্চ আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পান জিকে গউস। এরপর ২৩ মার্চ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে তাকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন হবিগঞ্জ পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র দিলীপ দাশ।