ডিমলা উপজেলার পশ্চিম ছাতনাই ইউনিয়ের ২নং ওয়ার্ডের ঠাকুরগঞ্জ পিয়াজিপাড়া গ্রামে প্রায় শত বিঘা জমিতে খোল পঁচা বা পাতা ব্লাষ্ট রোগের কারণে ধান ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। সমাধান না পাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন সেখানকার কৃষকরা।
কৃষক জাকিরুল আলম জানান, গেল বছর এই জমিতে ভুট্টা আবাদ করেছিলাম। এবার ভুট্টার পাশাপাশি জমিতে ‘ভিত্তি-২৮’ জাতের ধান লাগিয়েছি। কিন্তু ধান ক্ষেতে রোগ দেখা দেওয়ায় আমরা দিশেহারা হয়ে পড়েছি।
তিনি আরও জানান, আমি ২ বিঘা জমিতে ধান লাগিয়েছি। পুরো জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে ফোন দিয়েছি। কিন্তু তার কোনো পরামর্শ না পেয়ে গত ১৮ মার্চ আক্রান্ত ধান গাছগুলো তুলে সরাসরি উপজেলা কৃষি অফিসার হুমায়ূন কবীরের কাছে নিয়ে যাই। সেখানে নিয়ে গেলে তিনি তার এক সহকারীকে বিষয়টি দেখার জন্য বলেন। পরে ধান গাছগুলো দেখে আমাকে বলেন, এগুলো খোল পঁচা বা পাতা ব্লাষ্ট রোগে আক্রান্ত। তিনি নাটিভো+পটাশ ক্ষেতে ছিটিয়ে দিতে বলেন। পরামর্শ মত জমিতে বায়ার কোম্পানীর এই ওষুধগুলি ছিটানোর সাথে সাথেই পুরো জমির ধানগাছ নষ্ট হয়ে গেছে। ক্ষেত ভালো হওয়া তো দুরের কথা এ পরামর্শে যারাই ক্ষেতে এ ওষুধ ছিটিয়েছে তাদেরই ক্ষেতের ধানগাছ নষ্ট হয়ে গেছে। কিন্তু কৃষি বিভাগ আর আমাদের খোঁজ খবর রাখেনি। পরে আমি অবারও এলাকায় দায়িত্ব প্রাপ্ত বিএস ফয়জুল ইসলামকে ফোনে বিষয়টি অবহিত করলে তিনি ব্যস্ত আছেন বলে জানিয়ে পার্শ্ববর্তী এলাকার বিএস আবুল বাসারকে পাঠিয়ে দেন। তিনি ক্ষেত ঘুরে দেখে কোনো সমাধান না দিয়ে চলে যান।
একই কথা জানান কৃষক দুলাল হোসেন। তিনি বলেন, আমার দেড় বিঘা ধানের ক্ষেত নষ্ট হয়েছে, আব্বাস আলীর দেড় বিঘা, ইউনুস আলীর ২ বিঘাসহ এখানকার অনেক কৃষকের ধানের ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে।
কৃষক আলমগীর বলেন, আমি দেড় বিঘা জমিতে এসিআই কোম্পানীর জিরা জাতের ধান লাগিয়েছি। পুরো ক্ষেতের ধানগাছ নষ্ট হয়ে গেছে। আশে পাশের প্রায় শত বিঘা জমির ধান ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে।
কৃষি অফিসের পরামর্শ মত কাজ করে কোনো সমাধান না হওয়ায় গ্রামের অনেকের পরামর্শে ব্রেক্সিসল ও জিংক ক্ষেতে ছিটিয়েও কোনো কাজ হয়নি। বরং ধীরে ধীরে ক্ষেতের ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলেও জানান এখানকার কৃষকরা।
কালিগঞ্জ ও পশ্চিম ছাতনাই এলাকায় দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকরী কৃষি কর্মকর্তা ফয়জুল ইসলাম বলেন, ক্ষেতের এ রোগ থেকে রেহাই পাওয়া যাবে। চিন্তার কিছু নেই। কৃষকরা হয়ত জমিতে সঠিক পরিমাণে ওষুধ দেয়নি। কম অথবা বেশি করে দিয়েছেন। প্রতি বিঘা জমিতে ৩৬ গ্রাম নাটিভো দিতে হবে। তা না হলে রোগ থেকে ক্ষেতের ফসল বাঁচানো যাবে না।