বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় পাশে থাকবে ব্রিটেন। অতীতের মতো ব্রিটেন বাংলাদেশের বন্ধুরাষ্ট্র হিসেবে দেশের উন্নয়ন অগ্রগতিতে পাশে থাকবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন ব্রিটেনের অর্ধশতাধিক এমপি। ২৭ মার্চ সোমবার হাউজ অব কমন্সের দি টেরেস প্যাভিলিয়নে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ আয়োজিত বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৪৬তম বার্ষিকী উদযাপনের অনুষ্ঠানে এমন প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তারা।
যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুকের পরিচালনায় স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে বক্তারা লন্ডন ও বাংলাদেশের সিলেটে সন্ত্রাসী ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, গণতন্ত্র কখনো সন্ত্রাসবাদের কাছে হার মানতে পারে না।
ব্রিটেনের সরকারী দল কনজারভেটিভ, বিরোধী দল লেবার পার্টি, লিবারেল ডেমোক্র্যাটস ও স্কটিশ ন্যাশনালিস্ট পার্টির এমপিসহ প্রায় অর্ধ শতাধিক ব্রিটিশ এমপি এ অনুষ্ঠানে যোগ দেন। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
ব্রিটিশ এমপিদের মধ্যে ৫৩ জন এমপি আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে নিজেদের উপস্থিতি স্বাক্ষরে শিটে রেকর্ডভুক্ত করেন।ব্রিটিশ এমপিদের নিয়ে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করলো যুক্তরাজ্য আ.লীগ
অনুষ্ঠানের হোস্ট লেবার দলীয় এমপি জিম ফিটসজপেট্রিক সূচনা বক্তব্য রাখেন। তিনি সবাইকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে যে পরিমাণ এমপি হাজির হয়েছেন-অন্য কোনো অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে এমনটি আর ঘটেনি।
লেবার দলের ছায়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী এমিলি থর্নব্যারি বলেন, ব্রিটেন বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে ছিল। সেই সঙ্গে ব্রিটেন গত ৪৬ বছর ধরে স্বাধীন বাংলাদেশের ভাল বন্ধু। গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের উন্নয়নে ব্রিটেন অতেতের মতো সবসময় পাশে থাকবে।ব্রিটিশ এমপিদের নিয়ে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করলো যুক্তরাজ্য আ.লীগ
ব্রিটিশ সংসদের বাংলাদেশ বিষয়ক অল পার্টি এ্যালায়েন্সের চেয়ার এন মেইন এমপি বঙ্গবন্ধু জাদুঘর পরিদর্শনের অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করে বলেন, ১৯৭৫ সালের ভয়াল রাতের নৃশংসতার চিহ্ন সেখানে এখনো সুরক্ষিত আছে। ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বঙ্গবন্ধু জাদুঘর পরিদর্শনের বিরল অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, গত সপ্তাহে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সামনে সন্ত্রাসী হামলায় একইভাবে নিরীহ মানুষের রক্ত ঝরেছে। আমাদের নিশ্চিত করতে হবে জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসের কাছে গণতন্ত্র কখনো হার মানবে না। তিনি আরো বলেন, ৪৬ বছর আগে বাংলাদেশের মানুষ সংগ্রাম করেছে। আজ তারা সেই সংগ্রামের বিজয়কে উদযাপন করছে। এটা অত্যন্ত আনন্দের সময়।ব্রিটিশ এমপিদের নিয়ে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করলো যুক্তরাজ্য আ.লীগ
বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড বো আসনের এমপি রুশনারা আলী বলেন, বাংলাদেশের স্বধীনতার জন্য ৩০ লাখ মানুষ প্রাণ দিয়েছেন। অনেক সংগ্রামের পর স্বাধীনতা পেয়েছে বাংলাদেশ। এসব মানুষের আত্মত্যাগের কথা মনে রাখার জন্য এ ধরণের আয়োজন অত্যন্ত জরুরি।বাংলাদেশের মানুষের অগ্রগতি এবং সাফল্যই আমাদের অগ্রাধিকার।
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এমপি রূপা হক বলেন, কম সময়ে বাংলাদেশ খুব দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে।
হ্যাম্পটেড অ্যান্ড কিলবার্ন আসনের এমপি টিউলিপ সিদ্দিক উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিষয়ে সকলকে সতর্ক থাকার আহবান জানিয়ে বলেন, সন্ত্রাসীরা কখনো মুসলিম বা ইসলামের প্রতিনিধিত্ব করতে পারে না। তাদের পরিচয় কেবলই সন্ত্রাসী।ব্রিটিশ এমপিদের নিয়ে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করলো যুক্তরাজ্য আ.লীগ
যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের স্বাধীনতা দিবসের এ আয়োজনে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার কথা তুলে ধরেন বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার নাজমুল কা্ওনাইন এবং যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফ।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা নিয়ে দুটি প্রমাণ্যচিত্র প্রদর্শণ করা হয়। ছিল দেশাত্ববোধক গানের সাথে নৃত্য পরিবেশনা
অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ব্রিটিশ এমপিদের হাতে উপহারের ব্যাগ তুলে দেয়া হয়। এ অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা নিয়ে একটি স্মরনিকাও বের করে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ।
অনুষ্ঠানে অন্যান্য ব্রিটিশ এমপিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এল্যান মেইল, জনাথন অ্যাশওয়ার্থ, টম ব্লেইক, পল স্কালি, স্টিফেন টিমস, লিজ কেন্ডাল, কারেন বাক, এঞ্জেলা রায়নার, লূইসি এলমান,স্টিফেন টুইগ,জিম দাউদ, মার্ক হেনরিক,গিবেন বারওয়েল,জেস পিলিপস,জেসিকা মর্ডান, জনাথন ডিজেজানলি,নিক ডাকিন,ক্রিস ম্যাথসন,ফিলিপ ডেভিস,ডেইভ এন্ডারসন, জিম কানিংহাম, নাজ শাহ, চি ওনওয়ারা, টমি শেফার্ড, ওয়েস স্ট্রেটিং, কেলভিন হপকিন্স, মাইক গেইভস, কেভিন জন্স, এমা লুয়েল বাক প্রমুখ।