ঢাকা ০২:৪৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ধরলা নদীর তীরে সোলার পার্ক বাস্তবায়ন হচ্ছে না

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৪৪:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ মার্চ ২০১৭
  • ৩০৭ বার

উপযুক্ত জায়গার অভাবে কুঁড়িগ্রামের ধরলা নদীর তীরে প্রস্তাবিত ৩০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন সোলার পার্ক বাস্তবায়ন হচ্ছে না। প্রকল্পটির জন্য নতুন জায়গা খোঁজা হচ্ছে বলে জ্বালানি খনিজ সম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বাবিউবো) বেসরকারি খাতের মাধ্যমে কুঁড়িগ্রাম জেলার ধরলা নদীর তীরে ৩০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন সোলার পার্ক স্থাপনের উদ্যোগ নেয়। প্রকল্পটির জন্য প্রস্তাবিত জমিতে সোলার পার্ক স্থাপনের প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য বিদ্যুৎ বিভাগ কর্তৃক বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (বাপাউবো) প্রতিনিধিসহ ৫ সদস্যের একট কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাইক্রমে সুপারিশ করে যে, প্রস্তাবিত এলাকাটি সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য উপযোগী।

সূত্র জানায়, প্রস্তাবিত বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য স্পন্সর নিয়োগের লক্ষ্যে পিপিআর অনুযায়ী দরপত্র আহ্বান করা হয়। দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি কর্তৃক ইটার্ণ-সিসিসিই-হ্যারিয়ন কনসোর্টিয়ামকে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসাবে নির্বাচন করা হয় এবং সেজন্য দরপ্রস্তাব অনুমোদনের জন্য সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে পাঠানো হয়। কমিটির গত ২০১৪ সালের ৩০ নভেম্বর বৈঠকে প্রস্তাবটি অনুমোদন দেওয়া হয়। একই সঙ্গে প্রস্তাবক কোম্পানির কাছে আগ্রহ পত্র আহ্বান করা হয়। এ ছাড়াও প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য কুঁড়িগ্রাম জেলার মাধবরাম মৌজায় ১৭ দশমিক ২৭ একর ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি অধিগ্রহণ করা হয় এবং ৯৮ দশমিক ২৭ একর খাস জমি হস্তান্তরের প্রস্তাব ভূমি মন্ত্রণালয় কর্তৃক অনুমোদন দেওয়া হয়।

সূত্র জানায়, পরবর্তী সময়ে স্পন্সর কোম্পানি নির্মিতব্য বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সুরক্ষার জন্য প্রকল্প এলাকার ধরলা নদীর তীরে বাঁধ নির্মাণের জন্য অনুরোধ জানায়। স্পন্সর কোম্পানির অনুরোধের ভিত্তিতে সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন কার্যক্রমকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে বিদ্যুৎকেন্দ্রের সুরক্ষায় বাঁধ নির্মাণের জন্য পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হয়। প্রকল্পের জন্য নির্ধারিত এলাকা বন্যা সমতলে হওয়ায় সেখানে বাঁধ নির্মাণ করা হলে নদীর পানি স্রোতের স্বাভাবিক প্রবাহ বিঘ্নিত হবে মর্মে উল্লেখ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রকল্পটি অন্য কোনো নিরাপদ স্থানে বাস্তবায়নের অনুরোধ জানায়।

এর পরিপ্রেক্ষিতে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসন জানায়, জেলায় একটি অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য জমির সন্ধান করা হচ্ছে এবং জমির অপ্রতুলতার কারণে সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য বর্তমানে স্থানের পরিবর্তে অন্যত্র কোথাও জমি দেওয়া সম্ভব নয়। পরবর্তী সময়ে স্পন্সর কোম্পানি জানায় যে, এ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য পঞ্চগড় জেলায় জমির সংস্থান করা যেতে পারে এবং সেই স্থানে প্রকল্প স্থানান্তরের অনুমতি দেওয়ার জন্য অনুরোধ করে।

সূত্র জানায় প্রকল্পটি স্থানান্তর করা হলে নানা ধরনের জটিলতা দেখা দিবে বিশেষ করে প্রকল্প বাস্তবায়ন ব্যয় বাড়বে, উৎপাদিত বিদ্যুতের ট্যারিফ পুনঃনির্ধারণ করতে হবে। এ ছাড়াও পিপিআর ২০০৮ অনুযায়ী প্রকল্পটি স্থানান্তরের সুযোগ নাই। এসব বিবেচনা করে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ প্রকল্পটি আপাতত বাতিলের আবেদন জানিয়ে একটি প্রস্তাব সরকরি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির পরবর্তী বৈঠকে উপস্থাপনের জন্য পাঠিয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ধরলা নদীর তীরে সোলার পার্ক বাস্তবায়ন হচ্ছে না

আপডেট টাইম : ১১:৪৪:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ মার্চ ২০১৭

উপযুক্ত জায়গার অভাবে কুঁড়িগ্রামের ধরলা নদীর তীরে প্রস্তাবিত ৩০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন সোলার পার্ক বাস্তবায়ন হচ্ছে না। প্রকল্পটির জন্য নতুন জায়গা খোঁজা হচ্ছে বলে জ্বালানি খনিজ সম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বাবিউবো) বেসরকারি খাতের মাধ্যমে কুঁড়িগ্রাম জেলার ধরলা নদীর তীরে ৩০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন সোলার পার্ক স্থাপনের উদ্যোগ নেয়। প্রকল্পটির জন্য প্রস্তাবিত জমিতে সোলার পার্ক স্থাপনের প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য বিদ্যুৎ বিভাগ কর্তৃক বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (বাপাউবো) প্রতিনিধিসহ ৫ সদস্যের একট কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাইক্রমে সুপারিশ করে যে, প্রস্তাবিত এলাকাটি সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য উপযোগী।

সূত্র জানায়, প্রস্তাবিত বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য স্পন্সর নিয়োগের লক্ষ্যে পিপিআর অনুযায়ী দরপত্র আহ্বান করা হয়। দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি কর্তৃক ইটার্ণ-সিসিসিই-হ্যারিয়ন কনসোর্টিয়ামকে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসাবে নির্বাচন করা হয় এবং সেজন্য দরপ্রস্তাব অনুমোদনের জন্য সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে পাঠানো হয়। কমিটির গত ২০১৪ সালের ৩০ নভেম্বর বৈঠকে প্রস্তাবটি অনুমোদন দেওয়া হয়। একই সঙ্গে প্রস্তাবক কোম্পানির কাছে আগ্রহ পত্র আহ্বান করা হয়। এ ছাড়াও প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য কুঁড়িগ্রাম জেলার মাধবরাম মৌজায় ১৭ দশমিক ২৭ একর ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি অধিগ্রহণ করা হয় এবং ৯৮ দশমিক ২৭ একর খাস জমি হস্তান্তরের প্রস্তাব ভূমি মন্ত্রণালয় কর্তৃক অনুমোদন দেওয়া হয়।

সূত্র জানায়, পরবর্তী সময়ে স্পন্সর কোম্পানি নির্মিতব্য বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সুরক্ষার জন্য প্রকল্প এলাকার ধরলা নদীর তীরে বাঁধ নির্মাণের জন্য অনুরোধ জানায়। স্পন্সর কোম্পানির অনুরোধের ভিত্তিতে সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন কার্যক্রমকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে বিদ্যুৎকেন্দ্রের সুরক্ষায় বাঁধ নির্মাণের জন্য পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হয়। প্রকল্পের জন্য নির্ধারিত এলাকা বন্যা সমতলে হওয়ায় সেখানে বাঁধ নির্মাণ করা হলে নদীর পানি স্রোতের স্বাভাবিক প্রবাহ বিঘ্নিত হবে মর্মে উল্লেখ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রকল্পটি অন্য কোনো নিরাপদ স্থানে বাস্তবায়নের অনুরোধ জানায়।

এর পরিপ্রেক্ষিতে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসন জানায়, জেলায় একটি অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য জমির সন্ধান করা হচ্ছে এবং জমির অপ্রতুলতার কারণে সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য বর্তমানে স্থানের পরিবর্তে অন্যত্র কোথাও জমি দেওয়া সম্ভব নয়। পরবর্তী সময়ে স্পন্সর কোম্পানি জানায় যে, এ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য পঞ্চগড় জেলায় জমির সংস্থান করা যেতে পারে এবং সেই স্থানে প্রকল্প স্থানান্তরের অনুমতি দেওয়ার জন্য অনুরোধ করে।

সূত্র জানায় প্রকল্পটি স্থানান্তর করা হলে নানা ধরনের জটিলতা দেখা দিবে বিশেষ করে প্রকল্প বাস্তবায়ন ব্যয় বাড়বে, উৎপাদিত বিদ্যুতের ট্যারিফ পুনঃনির্ধারণ করতে হবে। এ ছাড়াও পিপিআর ২০০৮ অনুযায়ী প্রকল্পটি স্থানান্তরের সুযোগ নাই। এসব বিবেচনা করে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ প্রকল্পটি আপাতত বাতিলের আবেদন জানিয়ে একটি প্রস্তাব সরকরি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির পরবর্তী বৈঠকে উপস্থাপনের জন্য পাঠিয়েছে।