সন্ত্রাস ও জঙ্গি তৎপরতা বিশ্ববাসীকে ভাবিয়ে তুলেছে- মন্তব্য করে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেছেন, ‘আমরাও এর বাইরে নই।’ সন্ত্রাসী ও জঙ্গিদের বিরুদ্ধে বিশ্ববাসীকে সোচ্চার ও ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসীদের কোনো ধর্ম নেই, স্থান-কাল-পাত্র নেই। তাদের পরিচয়, তারা সন্ত্রাসী।’
শনিবার বঙ্গভবনে একাত্তরের শহীদদের স্মরণে ৩০ লাখ বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন করে রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন।
গত কয়েক দিন ধরে ‘আত্মঘাতী’ হামলা আর সন্দেহভাজন জঙ্গি আস্তানায় অভিযান এক আলোচিত ঘটনা। গত ১৬, ১৭, ১৮ মার্চ সন্দেহভাজন জঙ্গি আস্তানা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ডেরায় আত্মঘাতী বিস্ফোরণ অথবা আত্মঘাতী হামলার ঘটনা ঘটেছে। ২৪ মার্চ বোমা বহনের সময় বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছে একজন।
রাষ্ট্রপতির এই বক্তব্য চলার সময়ও সিলেটে একটি জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালছিল। এই অভিযানে পুলিশের পাশাপাশি যোগ দেয় সেনাবাহিনীও।
এসব জঙ্গি তৎপরতায় ধর্মীয় উগ্রবাদীদের সম্পৃক্ততার তথ্য পুরনো। তরুণদের উগ্রবাদ থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে সরকারের নানা চেষ্টার মধ্যেও নানা ঘটনায় ছড়াচ্ছে উদ্বেগ। আর এক সপ্তাহের মধ্যে দুটি হামলার দায় স্বীকার করেছে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আইএস।
ধর্মের নামে উগ্রবাদী তৎপরতা থেকে দূরে থাকতে সবার প্রতি আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি। তিনি বলেন, ‘শুধু ইসলামে নয়, কোনও ধর্মেই নরহত্যা, সন্ত্রাস, ধ্বংসযজ্ঞ ও দেশান্তর সমর্থন করে না।’ তিনি বলেন, ‘সকল ধর্মের মর্মবাণী হচ্ছে স্রষ্টা ও সৃষ্টির প্রতি অগাধ ভালোবাসা এবং সমাজ ও মানুষের কল্যাণসাধন।’
অনুষ্ঠানে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গণহত্যা শুরুর দিনটিকে স্বাধীনতার ইতিহাসে কলঙ্কজনক দিন হিসেবে বর্ণনা করেন রাষ্ট্রপতি। তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালের ২৫ মারর্চ কালরাতে এ দেশের নিরস্ত্র বাঙালির ওপর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যে নৃশংস গণহত্যা চালিয়েছিল তা বিশ্বে বিরল।’
২০৪১ সালের আগেই বাংলাদেশ উন্নত দেশের তালিকায় নাম তুলবে বলে আশা করেন রাষ্ট্রপতি। তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকারের আমলে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতে উন্নয়নের যে বিস্ময়কর সাফল্য অর্জিত হয়েছে তা বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশসমূহের জন্য উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। আমরা উন্নয়নশীল দেশের তালিকা থেকে উন্নত দেশের দিকে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছি।’