আগে সাধারণত গ্রামের পুরুষরা মাঠে কাজ করত। আর নারীরা ঘরকন্যার পাশাপাশি কৃষিকাজে পুরুষকে সহযোগিতা করত। ইদানিং দেশের অনেক জায়গায় প্রত্যক্ষভাবে কৃষিকাজে নারীরা জড়িয়ে পড়েছেন। বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলায় সেই দৃশ্যই চোখে পড়ল। এখানে নারী শ্রমিকরা কৃষিকাজে পুরুষের সঙ্গে সমান তালে কাজ করে যাচ্ছেন। কৃষিকাজে নারীর এ অংশগ্রহণ তাদেরকে স্বাবলম্বী করে তুললেও তারা পুরুষের সমান মজুরি পাচ্ছেন না।
নন্দীগ্রাম উপজেলার নারীরা এখন আর ঘরে বসে নেই। পুরুষের পাশাপাশি মাঠে কাজ করে যাচ্ছেন দল বেধে। স্বামী সন্তানের পাশাপাশি তারাও মাঠে কাজ করছেন।বিশেষ করে দরিদ্র, অভাবী নারীরা পুরুষের পাশাপাশি মাঠে শ্রম বিক্রি করছেন।
বর্তমানে নন্দীগ্রাম উপজেলায় ২০ হাজার ২২০ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো চাষাবাদ হচ্ছে এবং ছয় হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হচ্ছে। আর এসব ফসলি জমিতে পুরুষ শ্রমিকের চেয়ে নারী শ্রমিকরা বেশি কাজ করছেন। ভূমিহীন পরিবারের পুরুষ শ্রমিকরা রিকশা-ভ্যান ও বিভিন্ন কাজের জন্য বিভিন্ন জেলায় চলে যায়। সংসারের খরচ চালানোর জন্য নারী শ্রমিকরা শ্রম বিক্রি করছেন।
উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে প্রায় এক হাজার নারী শ্রমিক কৃষি কাজ করে এখন স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন। দৈনিক ১০০ টাকা থেকে ১৫০ পাচ্ছেন। পাশাপাশি এই উপজেলার নারী শ্রমিকরা বিভিন্ন এনজিও সংস্থার কাছ থেকে ঋণ নিয়ে গরু পালন করছে। কৃষি কাজ করে গরুর খাবার এবং কিস্তির টাকা পরিশোধ করছেন তারা।
তবে কৃষিকাজে নারীর এ অংশগ্রহণ তাদেরকে স্বাবলম্বী করে তুললেও তারা পুরুষের সমান মজুরি পাচ্ছেন না। উপজেলার সদর ইনিয়নের ইউসুবপুর গ্রামের নারী শ্রমিক লিলি রানী ওরাঁও ও কাজলী রানী ওরাঁও অভিযোগ করেন, আমরা পুরুষ শ্রমিকের ন্যায় কাজ করলেও তাদের সমান মজুরি পাই না।
উপজেলা কৃষি অফিসার মোহা. মুশিদুল হক বলেন, উপজেলা কৃষি অফিস নারীদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন সহযোগিতা করছে। প্রশিক্ষণ নিয়ে অনেক নারী শ্রমিক কৃষি কাজ করে স্বাবলম্বী হয়েছে।