‘নোংরাতম’ মানুষ দক্ষিণ ইরানের ফারস জেলার আমু হাজিকে নিয়ে কয়েক বছর আগেই ঝড় উঠেছিল বিশ্ব গণমাধ্যমে। তার জীবনের চার ভাগের তিনভাগই কাটিয়েছেন গোসল না করে। এত বছর ধরে শরীরে মাটির যে আস্তরণ জমে গেছে তা দেখলে পাথরের কোন ভাস্কর্য বলেই মনে হয়। শজারুর পচা মাংস খেয়েই পেট ভরান অপরিষ্কার ‘পাশবিক’ মানুষটি।
সম্প্রতি ‘দ্য তেহরান টাইমস’ আমু হাজিকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। জীবনের ৬০ বছর ধরে কেন গোসল করেননি তার কারণ উঠে এসেছে প্রতিবেদনে।
আমু হাজির সাফ কথা, সাবান বা পানি গায়ে দেয়ার বিষয়ে তার ঘোরতর আপত্তি আছে। শুধু যে তাই নয়, গোসল শব্দটি শুনলেই তার কেমন পাগল পাগল মনে হতে থাকে। তাই গেল ৬০ বছরে এক ফোঁটা পানিও পড়েনি তার শরীরে।
অবাক করা ঘটনাই বটে। দক্ষিণ ইরানের ফারস জেলার পরিত্যক্ত একটি গ্রাম দেজগা। সেখানেই মাঠে-ঘাটে ঘুরে বেড়ান বৃদ্ধ হাজি। এত বছরের অপরিষ্কার শরীরে যে মাটির আস্তরণ জমেছে, তাতে মাঝেমাঝে তাকে প্রকৃতির উপরে পড়ে থাকা পাথরের মুর্তি বলে মনে হয়। এমন ভাবেই হাজিকে বর্ণনা করেছেন আশপাশের গ্রামবাসী।
নিজের বলতে আর কেউই নেই আমু হাজির। কানাঘুষো সোনা যায়, যুবক বয়সে প্রেমে আঘাত পেয়েই নাকি এই জীবন বেছে নিয়েছিলেন। যা আজ তিনি টেনে নিয়ে যাচ্ছেন খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে।
আমু হাজির থাকা-খাওয়া বড় অদ্ভুত। শজারুর পচা মাংস খেয়েই পেট ভরান। প্রকৃতির কোলই তার বিছানা। গ্রামের মানুষ ইট দিয়ে একটি ঘরের মত বানিয়ে দিয়েছে। ইচ্ছে হলে বুড়ো হাজি সেখানেও থাকেন মাঝে মধ্যে। বেড়ে যাওয়া চুল-দাড়ি কাটার কোনো ইচ্ছেই নেই আমু হাজির। যখন মনে হয় চুল-দাড়ি বড্ড বেড়ে গেছে, তখন আগুনে পুড়িয়ে দেন।
বিশ্বের সব থেকে ‘অপরিষ্কার’ ‘নোংরাতম’ মানুষের খেতাব এখন আমু হাজির ঝুলিতে। এর আগে একই খেতাব লাভ করেছিলেন ৬৬ বছরের এক ভারতীয় কৈলাস সিংহ। তিনি অবশ্য মাত্র ৩৮ বছর ধরে বিরত ছিলেন গায়ে তেল সাবান পানি দিতে।