আমরা একদিন দেশের সব মানুষকে বিনা পয়সায় ঘরবাড়ি বানিয়ে দেবো বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমরা দেশে বিনা পয়সায় বই বিতরণ করছি। আমরা দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য কাজ করি। আমরাই বর্গা চাষীদের বিনা সুদে ঋণ দেওয়া শুরু করি।
মঙ্গলবার লক্ষ্মীপুরের জেলা স্টেডিয়ামে আয়োজিত এক জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুপুরে লক্ষ্মীপুর জেলা স্টেডিয়ামে এসে পৌঁছান। এরপর তিনি স্টেডিয়াম থেকে ১০টি প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ১৭টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
জনসভার শুরুতে প্রধানমন্ত্রী দেশকে স্বাধীন করতে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সব উন্নয়ন থেমে যায়। ২১ বছর এ দেশের উন্নয়ন হয়নি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে দেশের উন্নয়ন শুরু করে। ২০ লাখ মাকে মোবাইল ফোন দিয়েছি। উপবৃত্তির টাকা যাবে এসব মোবাইল ফোনে। প্রতিটি উপজেলায় ডিজিটাল সেন্টার করে দিয়েছি।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের সময় আওয়ামী লীগের কোনও নেতা-কর্মী ঘরে থাকতে পারেনি। এসময় নুরুল ইসলাম, সামসুদ্দোহা পাটোয়ারী, মিজানসহ ১৭ জন নেতা-কর্মীকে বিএনপির সন্ত্রাসীরা হত্যা করেছিল।
প্রধানমন্ত্রী এলাকার পেশাজীবী, সাংবাদিক, ধর্মীয় নেতাদের আহ্বান
করে বলেন, ‘আপনারা নিজ নিজ এলাকার সব ছেলে মেয়ের খোঁজ রাখবেন। তারা যেন জঙ্গিবাদের পথে না যায়। কারণ ইসলাম শান্তির ধর্ম। ইসলাম কোনও মানুষকে হত্যা করতে বলেনি। ইসলামের উন্নয়নে আমরা প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি মসজিদ ও ইসলামি কালচারাল সেন্টার প্রতিষ্ঠা করবো।’
এ সময় প্রধানমন্ত্রী ইতোপূর্বে লক্ষ্মীপুর সফরকালে তার দেওয়া উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের প্রতিশ্রুতি ও তার বাস্তবায়ন চিত্র তুলে ধরেন এবং নতুন নতুন প্রকল্পের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। উন্নয়নের অঙ্গীকার করে লক্ষ্মীপুরবাসীর কাছে দোয়া, ভালোবাসা ও নৌকায় ভোট চাইলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘ভোট দেবেন তো?’ এ সময় সবাই হাত উঁচু করে ভোট দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম, যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়, আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক হারুন-অর রশিদ, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক পংকজ দেবনাথ এমপিসহ দলের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাগণ।
প্রধানমন্ত্রী অন্যান্য যে সব প্রকল্প উদ্বোধন করেন সেগুলো হচ্ছে, চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন, যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, উপজেলা পরিষদ ভবন (লক্ষীপুর সদর) উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়াম (লক্ষ্মীপুর সদর), উপজেলা পরিষদ ভবন (কমলনগর), উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়াম (কমলনগর), লক্ষ্মীপুর পৌর আইডিয়াল কলেজ ভবন, মোহাম্মদিয়া বাজার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র নির্মাণ (৩য় ও ৪র্থ) এবং উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও প্রাণী হাসপাতাল (কমলনগর)।
প্রধানমন্ত্রী যেসব প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন সেগুলো হচ্ছে- ২৫০-শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতাল, প্রশাসনিক ভবন ও নাবিক নিবাস, বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড, মজু চৌধুরীর হাট, পুলিশ অফিসার্স মেস, লক্ষ্মীপুর সদর পুলিশ ফাঁড়ি, আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস ভবন, লক্ষ্মীপুর সদর খাদ্য গুদামে ৫০০ মে. টন ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন নতুন গুদাম নির্মাণ, রামগঞ্জ উপজেলায় ১৩২/৩৩ কেবি গ্রিড উপকেন্দ্র নির্মাণ, পিয়ারপুর সেতু, চেউয়াখালী সেতু, মজু চৌধুরীর হাটে নৌ-বন্দর, লক্ষ্মীপুর পৌর আধুনিক বিপণি বিতান, আনসার ও ভিডিপি ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তর কমপ্লেক্স (রামগঞ্জ), পৌর আজিম শাহ (রা) হকার্স মার্কেট, লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজ একাডেমিক ভবন-কাম-পরীক্ষা কেন্দ্র, লক্ষ্মীপুর পুলিশ লাইন মহিলা ব্যারাক নির্মাণ, লক্ষ্মীপুর শহর সংযোগ সড়কে পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন (রায়পুর) এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন (কমলনগর)।