ঢাকা ০৩:৪৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশে এই প্রথম জন্ম নিল উটপাখির ছানা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:২০:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০১৭
  • ৫০৪ বার

বাংলাদেশে এই প্রথম উটপাখির ডিম থেকে বাচ্চা ফুটেছে। গত ১৬ জানুয়ারি গাজীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে ডিম থেকে বাচ্চাটি হয়। সাফারি পার্কের বন্যপ্রাণী পরিদর্শক আনিসুর রহমান জানান, বাংলাদেশে এই প্রথম কোনো উটপাখি ডিমে তা দিয়ে বাচ্চা জন্ম দিতে পেরেছে।

তিনি জানান, উটপাখির বাচ্চাটির আকার মুরগির বাচ্চার চেয়ে একটু বড়। বাচ্চাটি জন্ম নেয়ার প্রথম কয়েক দিন বাবার পালকে মুখ গুঁজে বসেছিল ছানাটি। কয়েক দিনের মধ্যেই বাচ্চাটি মা-বাবার সঙ্গে বেড়াতে থাকে। উটপাখি লালনপালনে বাবাই বেশি ভূমিকার রাখে। কারণ একটি ছেলে উটপাখি দুই থেকে তিনটি মেয়ে উটপাখিকে নিয়ে সংসার গড়ে তোলে। মা উটপাখি ডিম দেয়। একটি মেয়ে উটপাখি প্রতিবছর ১০টির বেশি ডিম দিয়ে থাকে। ডিম থেকে বাচ্চা ফোটার আগ পর্যন্ত দিনের বেলায় মা ও রাতের বেলায় বাবা ডিমে তা দিতে থাকে। ১২টি ডিম নিয়ে উটপাখি তা দিলেও ১৬ জানুয়ারি ১টি বাচ্চা ফুটে। ১১টি ডিম এখনও তা দেয়া হচ্ছে।

উটপাখির

বাচ্চাকে দর্শনার্থীদের খুব কাছে আসতে দেয়া হচ্ছে না। দূর থেকেই দেখতে হয়। বাচ্চাটির একটু পূর্ণতা এলেই তাকে বেষ্টনীর কাছাকাছি আসতে দেয়া হবে। খুব সতর্কতার সঙ্গে বাচ্চাটিকে পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে। বাচ্চাটি খুব ছোট বিধায় তার কাছে যাওয়া হচ্ছে না। কাছে গেলে উটপাখিরা ছোটাছুটি করবে। এতে তাদের পায়ে চাপা পড়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তবে ডিম থেকে ফোটা এ ছানাটি ছেলে নাকি মেয়ে তা এখনও জানা যায়নি।

বন্যপ্রাণী পরিদর্শক আনিসুর রহমান জানান, বাংলাদেশে এবারই প্রথম ডিমে তা দিয়ে কোনো উটপাখি নিজেই বাচ্চা জন্ম দিয়েছে। ঢাকা চিড়িয়াখানায় একবার উটপাখি ডিম পেরেছিল। সেগুলো ইনকিউবেটরে রাখা হয়। তবে সে ডিম ফুটে বাচ্চা হয়নি। এর আগে ২০১৫ সালের শেষের দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে উটপাখি ১২টি ডিম পেরেছিল। কিন্তু একটি বাচ্চাও হয়নি। এবার সফল হয়েছে।

২০১৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আড়াই বছর বয়সী পাঁচটি উটপাখি আনা হয়। এর মধ্যে দুটি ছেলে ও তিনটি মেয়ে। দুই থেকে চার বছর বয়স হলে উটপাখি প্রজননক্ষম হয়। গত বছরের নভেম্বরের মাঝামাঝি আবারও মেয়ে উটপাখিগুলো ডিম দিতে শুরু করে। বেষ্টনীতে বালু মিশ্রিত মাটি দিয়ে ওরা নিজেরাই গর্ত করে ডিম পাড়ার জায়গা তৈরি করে। এভাবে ২০টি ডিম জমা করে তারা।

বুধবার সাফারি পার্কে গিয়ে দেখা গেছে, উটপাখির ছানাটি তার বাবার আশপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে। বাবাও ছানাটির দিকে তীক্ষ্ম নজর রাখছে। বাচ্চাটিও সুযোগ পেলেই ছুটে চলার চেষ্টা করছে। বেষ্টনীর আরেক পাশে একটি ছেলে উটপাখি বেশ কয়েকটি ডিমে তা দিচ্ছে। পার্ক কর্তৃপক্ষ আশা করছে আর কিছু দিনের মধ্যে আরও কয়েকটি উটপাখির ছানা জন্ম নিতে পারে। উটপাখির ওই বেষ্টনীতে তাদের খাবার হিসেবে রয়েছে ঘাস, শাক-সবজি, পাকা কলা, ভাঙা ভুট্টা। সাফারি পার্কে উটপাখির ছানা দেয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন এলাকা থেকে নতুন অতিথিকে দেখার জন্য দর্শনার্থীরা ভিড় করছে। পার্কে নতুন অতিথি আসায় পার্ক কর্তৃপক্ষও খুশি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

বাংলাদেশে এই প্রথম জন্ম নিল উটপাখির ছানা

আপডেট টাইম : ১১:২০:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০১৭

বাংলাদেশে এই প্রথম উটপাখির ডিম থেকে বাচ্চা ফুটেছে। গত ১৬ জানুয়ারি গাজীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে ডিম থেকে বাচ্চাটি হয়। সাফারি পার্কের বন্যপ্রাণী পরিদর্শক আনিসুর রহমান জানান, বাংলাদেশে এই প্রথম কোনো উটপাখি ডিমে তা দিয়ে বাচ্চা জন্ম দিতে পেরেছে।

তিনি জানান, উটপাখির বাচ্চাটির আকার মুরগির বাচ্চার চেয়ে একটু বড়। বাচ্চাটি জন্ম নেয়ার প্রথম কয়েক দিন বাবার পালকে মুখ গুঁজে বসেছিল ছানাটি। কয়েক দিনের মধ্যেই বাচ্চাটি মা-বাবার সঙ্গে বেড়াতে থাকে। উটপাখি লালনপালনে বাবাই বেশি ভূমিকার রাখে। কারণ একটি ছেলে উটপাখি দুই থেকে তিনটি মেয়ে উটপাখিকে নিয়ে সংসার গড়ে তোলে। মা উটপাখি ডিম দেয়। একটি মেয়ে উটপাখি প্রতিবছর ১০টির বেশি ডিম দিয়ে থাকে। ডিম থেকে বাচ্চা ফোটার আগ পর্যন্ত দিনের বেলায় মা ও রাতের বেলায় বাবা ডিমে তা দিতে থাকে। ১২টি ডিম নিয়ে উটপাখি তা দিলেও ১৬ জানুয়ারি ১টি বাচ্চা ফুটে। ১১টি ডিম এখনও তা দেয়া হচ্ছে।

উটপাখির

বাচ্চাকে দর্শনার্থীদের খুব কাছে আসতে দেয়া হচ্ছে না। দূর থেকেই দেখতে হয়। বাচ্চাটির একটু পূর্ণতা এলেই তাকে বেষ্টনীর কাছাকাছি আসতে দেয়া হবে। খুব সতর্কতার সঙ্গে বাচ্চাটিকে পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে। বাচ্চাটি খুব ছোট বিধায় তার কাছে যাওয়া হচ্ছে না। কাছে গেলে উটপাখিরা ছোটাছুটি করবে। এতে তাদের পায়ে চাপা পড়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তবে ডিম থেকে ফোটা এ ছানাটি ছেলে নাকি মেয়ে তা এখনও জানা যায়নি।

বন্যপ্রাণী পরিদর্শক আনিসুর রহমান জানান, বাংলাদেশে এবারই প্রথম ডিমে তা দিয়ে কোনো উটপাখি নিজেই বাচ্চা জন্ম দিয়েছে। ঢাকা চিড়িয়াখানায় একবার উটপাখি ডিম পেরেছিল। সেগুলো ইনকিউবেটরে রাখা হয়। তবে সে ডিম ফুটে বাচ্চা হয়নি। এর আগে ২০১৫ সালের শেষের দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে উটপাখি ১২টি ডিম পেরেছিল। কিন্তু একটি বাচ্চাও হয়নি। এবার সফল হয়েছে।

২০১৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আড়াই বছর বয়সী পাঁচটি উটপাখি আনা হয়। এর মধ্যে দুটি ছেলে ও তিনটি মেয়ে। দুই থেকে চার বছর বয়স হলে উটপাখি প্রজননক্ষম হয়। গত বছরের নভেম্বরের মাঝামাঝি আবারও মেয়ে উটপাখিগুলো ডিম দিতে শুরু করে। বেষ্টনীতে বালু মিশ্রিত মাটি দিয়ে ওরা নিজেরাই গর্ত করে ডিম পাড়ার জায়গা তৈরি করে। এভাবে ২০টি ডিম জমা করে তারা।

বুধবার সাফারি পার্কে গিয়ে দেখা গেছে, উটপাখির ছানাটি তার বাবার আশপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে। বাবাও ছানাটির দিকে তীক্ষ্ম নজর রাখছে। বাচ্চাটিও সুযোগ পেলেই ছুটে চলার চেষ্টা করছে। বেষ্টনীর আরেক পাশে একটি ছেলে উটপাখি বেশ কয়েকটি ডিমে তা দিচ্ছে। পার্ক কর্তৃপক্ষ আশা করছে আর কিছু দিনের মধ্যে আরও কয়েকটি উটপাখির ছানা জন্ম নিতে পারে। উটপাখির ওই বেষ্টনীতে তাদের খাবার হিসেবে রয়েছে ঘাস, শাক-সবজি, পাকা কলা, ভাঙা ভুট্টা। সাফারি পার্কে উটপাখির ছানা দেয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন এলাকা থেকে নতুন অতিথিকে দেখার জন্য দর্শনার্থীরা ভিড় করছে। পার্কে নতুন অতিথি আসায় পার্ক কর্তৃপক্ষও খুশি।