সার্চ কমিটির সুপারিশ ১০ কার্যদিবসে

নির্বাচন কমিশনে নিয়োগ দিতে আপিল বিভাগের বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনকে আহ্বায়ক করে গঠন করা সার্চ কমিটিকে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদকে সুপারিশ দিতে বলা হয়েছে। তাদের সুপারিশ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন।

বুধবার সন্ধ্যায় সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবদুল ওয়াদুদ সাংবাদিকদের এই তথ্য নিশ্চিত করেন। সার্চ কমিটিতে কারা আসছেন-দিনভর এই গুঞ্জনের মধ্যে বুধবার সন্ধ্যায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবদুল ওয়াদুদ সার্চ কমিটির সদস্যদের নাম জানান। তার তথ্য আর দিনভর ছড়ানো গুঞ্জনের মধ্যে কোনো পার্থক্য ছিল না।

সার্চ কমিটির প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ২০১২ সালে বর্তমান নির্বাচন কমিশনে নিয়োগ দিতে গঠিত সার্চ কমিটিরও আহ্বায়ক ছিলেন। কমিটিতে আছেন হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর সাবেক চেয়ারম্যান ওবায়দুল হাসানও।

এই কমিটিতে থাকছেন আরও চার সদস্য। এরা হলেন মহা হিসাব নিরীক্ষক মাসুদ আহমেদ, সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাদিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য শিরীণ আখতার।

মো. আবদুল ওয়াদুদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘সংবিধানের ১১৮ (১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির নির্দেশক্রমে এই অনুসন্ধানী কমিটির প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এই কমিটি আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে রাষ্ট্রপতিকে ইসি গঠনের সুপারিশ দেবে। রাষ্ট্রপতি সুপারিশের আলোকে ইসি গঠন করবেন।’

সুপ্রিমকোর্টে আমাদের সহকর্মী মোসাদ্দেক বশির জানান, মাহমুদ হোসেন ২০০১ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। তার নিয়োগ স্থায়ী হন ২০০৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি। আপিল বিভাগে তিনি নিয়োগ পান ২০১১ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি।

অন্যদিকে বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ২০০৯ সালের ৩০ জুন হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। একই বিভাগে তার নিয়োগ স্থায়ী হয় ২০১১ সালের ৬ জুন। তিনি ২০১২ সালের ১৩ ডিসেম্বর থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান হিসেবে কাজ করছেন।

আগামী মাসের শুরুতেই শেষ হচ্ছে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ। তার আগেই কমিশনে নিয়োগ চূড়ান্ত করবেন রাষ্ট্রপতি। গত ১৮ ডিসেম্বর থেকে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত তিনি মোট ৩১টি দলের সঙ্গে কথা বলেছেন, তাদের পরামর্শ নিয়েছেন।

সকালে ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন বিষয়ে বঙ্গভবন থেকে চিঠি যায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে। এই চিঠি পাওয়ার পর সার সংক্ষেপ তৈরি করে তা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। দুপুরে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে দেখা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম। পরে তারা দুজনে সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

সার্চ কমিটিতে যারা স্থান পেয়েছেন এদের মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য শিরীণ আখতার এরই মধ্যে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি কক্সবাজার আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আফসান কামাল চৌধুরীর মেয়ে। শিরীণ আখতার নিজেও আওয়ামী লীগপন্থি শিক্ষক সংগঠন হলুদ দলের সঙ্গে জড়িত।

শিরীণ আখতার বলেছেন, ‘এই দায়িত্বকে সুন্দর এবং পবিত্র দায়িত্ব বলে মনে করছি। আশা করি, সুষ্ঠুভাবে এ দায়িত্ব পালন করতে পারব।’

২০১২ সালের ২৩ জানুয়ারি সে সময়ের রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানও আপিল বিভাগের বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনকে প্রধান করে চার সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করেছিলেন। পরে ওই কমিটির পরামর্শ অনুযায়ী কাজী রকিবউদ্দীন আহমেদকে প্রধান করে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর