রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ চলচ্চিত্রকে জ্ঞানভিত্তিক প্রগতিশীল সমাজ গঠনের প্রধান হাতিয়ার হিসেবে উল্লেখ করে সমাজ ও জনগণের কাছে জবাবদিহিতা অব্যাহত রাখতে চলচ্চিত্র নির্মাণে দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্য তুলে ধরার জন্য এর নির্মাতা, প্রযোজক ও কলাকুশলীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, চলচ্চিত্র শুধুমাত্র বিনোদনের মাধ্যম নয়, এটি একটি শক্তিশালী গণমাধ্যম এবং অনানুষ্ঠানিক শিক্ষারও একটি ধারা। এটি এর একটি ভাল দিক। তবে এর খারাপ দিকও রয়েছে, এটি দশর্কদের মনে সরাসরি এবং দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে আয়োজিত ১৫তম ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব-২০১৭-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন তিনি।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধ বাঙালীর ইতিহাসে একটি গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। চলচ্চিত্র মুক্তিযুদ্ধ এবং বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শক্তিশালী ও সাহসী ভূমিকা রেখেছে। নতুন প্রজন্মের তরুণেরা যাতে প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারে, এ জন্য মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরতে তিনি চলচ্চিত্র নির্মাতাদের প্রতি আহবান জানান। তিনি চলচ্চিত্রে আমাদের দীর্ঘদিনের সম্প্রদায়িক সম্প্রীতিও তুলে ধরার আহবান জানান। চলচিত্র নির্মাতারা জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।
রাষ্ট্রপতি বিশ্বের এই অংশে চলচ্চিত্রের ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, ১৯৫৬ সালে নির্মিত দেশের প্রথম চলচ্চিত্র মুখ ও মুখোশ এবং ১৯৫৭ সালে এফডিসি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার মধ্যদিয়ে চলচ্চিত্রের যাত্রা শুরু হয়েছিল । ১৯৪৭ সালের পর পূর্ব পাকিস্তানে রাজনৈতিক আন্দোলনের মতো চলচ্চিত্রেও আন্দোলন গড়ে ওঠে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, সে সময়ের শিল্পমন্ত্রী এবং তরুণ নেতা বঙ্গবন্ধু ১৯৫৭ সালে পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদে পূর্ব পাকিস্তান চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন বিল উত্থাপন করেন এবং সেই বছর থেকে চলচ্চিত্র কর্পোরেশন যাত্রা শুরু করে।
অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আবুল-মাল আবদুল মুহিত, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, আর্ন্তজাতিক চলচ্চিত্র ফেডারেশনের সভাপতি অ্যালিন তাসসিয়ান ও উৎসব পরিচালক আহমেদ মুজতবা জামাল বক্তব্য রাখেন।
উৎসবে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৬৭টি দেশের চলচিত্র প্রদর্শন করা হবে। চলচ্চিত্র সমালোচক এবং এবং চলচ্চিত্র শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্টরা এই উৎসবে যোগ দেবেন।