গোয়েন্দা নজরদারিতে পোশাক শিল্পের ১২ নেতা

দেশের রপ্তানি আয়ের সবচে বড় খাত তৈরী পোশাক শিল্পে নতুন করে অস্থিতিশীলতা তৈরি হয়েছে। যেকোনো ধরণের নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি ঠেকাতে ১২ জন পোশাক শ্রমিক নেতা-নেত্রীর ওপর গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। পূর্বপশ্চিমকে এমনটাই নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল পদমর্যাদার এক কর্মকর্তা।

আশুলিয়ায় নতুন বেতন কাঠামোর দাবিতে চলমান অচালাবস্থা নিরসনে কয়েক ধাপে বৈঠক করেও সমাধান করতে না পারায় এর মধ্যে কোনো ষড়যন্ত্র রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে গোয়েন্দাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এদিকে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে গোয়েন্দাদের সার্বক্ষণিক নজরদারিতে আসা পোশাক শিল্প সংশ্লিষ্ট এ নেতা-নেত্রীরা হলেন- এ্যাডভোকেট মন্টু ঘোষ, বাবুল আকতার, শামীমা নাসরিন, নাজমা আক্তার, রুহুল আমিন, জলি তালুকদার, মোশরেফা মিশু, এডভোকেট ইসমাইল, আমিরুল হক আমির, বাহারাইনে সুলতান বাহার, জয়নাল আহমেদ, জাহানারা বেগম।

এর আগেও কয়েকবার তাদের গোয়েন্দা নজরদারিতে আনা হয়েছিল বলে সূত্রটি জানিয়েছে। এমনকি তাদের প্রায় সবাই বিভিন্ন সময় পোশাক খাতকে অস্থিতিশীল করার নেপথ্যে কাজ করার অপরাধে গ্রেপ্তারও হয়েছেন।

নজরদারির মধ্যে থাকা শ্রমিক নেতা আমিরুল হক আমির পূর্বপশ্চিমকে বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে বিরোধী দলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকায় নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে গত সাড়ে ৩ বছর ধরেই। নতুন করে আর কি? সর্বোচ্চ গ্রেপ্তার করা হবে। তবে রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা তার স্বাভাবিক কার্যক্রমে বাধা না দিলেও শ্রমিকদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করতে দিচ্ছে না।

এদিকে, নূন্যতম বেতন ১৫ হাজার টাকা দাবি করে নতুন মজুরি বোর্ড গঠনের দাবিকে অযৌক্তিক বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান। আশুলিয়ায় সংকট ঘনীভূত যেন না হয় সেদিক বিবেচনায় সংবাদ সম্মেলন করে ৫৫ টি পোাশাক কারখানা বন্ধও ঘোষণা করেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো অবশ্যই সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই তাদের ওপর নজরদারি বাড়িয়েছে। পোশাক শিল্প নিয়ে নতুন করে ষড়যন্ত্র যেন দানা বাঁধতে না পারে সে ব্যাপারে সরকারের যা কিছু করা প্রয়োজন, তা অবশ্যই করা উচিত। শ্রমিক নেতাদের উস্কানির কারণে নিরীহ ও সাধারণ শ্রমিকরা ভাঙচুর ও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে মামলার আসামি হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বিজিএমইএ সরকারকে আগেও অনুরোধ করেছে, এখনও করছে।

উল্লেখ্য, সমপ্রতি আশুলিয়ায় পোশাক কারখানার শ্রমিকরা নতুন মজুরি বোর্ড গঠনের দাবিতে ডিসেম্বর মাস ধরেই আন্দোলন করে আসছে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণিজ্য, স্বরাষ্ট্র, নৌপরিবহন এবং শ্রম প্রতিমন্ত্রীকে বিষয়টি সমাধানের দায়িত্ব দিলেও তা পুরোপুরি করতে পারেননি তারা। ফলে বাধ্য হয়েই ৫৫টি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে মালিকপক্ষ।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর