ঢাকা ০৯:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মার্কিন নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপ প্রতিশোধ নেয়ার ঘোষণা প্রেসিডেন্ট ওবামার

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৩৭:৩৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৬
  • ৪৪৩ বার

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপের অভিযোগে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। মার্কিন রেডিও স্টেশন এনপিআরকে তিনি বলেছেন, ‘আমাদের ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন এবং আমরা তা নেব।’ নির্বাচন চলাকালে ডেমোক্রেটিক পার্টি ও দলটির প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনের ইমেইল হ্যাকের পেছনে যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়াকে দায়ী করে আসছে। কিন্তু রুশ প্রেসিডেন্টের দফতর ক্রেমলিন এ অভিযোগ জোরালোভাবে অস্বীকার করে আসছে। খবর এএফপি ও বিবিসির।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) এক মূল্যায়ন প্রতিবেদনে বলা হয়, ডোনাল্ড ট্রাম্পকে জয়ী করতে যুক্তরাষ্ট্রের ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়া হস্তক্ষেপ করেছে। নির্বাচনে হিলারির জয়ের সম্ভাবনা হ্রাস করা এবং ট্রাম্পের জয়ের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলার জন্য এক অভিযানে নেমেছিল রুশ হ্যাকাররা। আর এই হ্যাকের ঘটনার নেপথ্যে ছিল ক্রেমলিন। এ ব্যাপারে তথ্য-প্রমাণ রয়েছে বলেও মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো দাবি করেছে। নির্বাচনে জয়ী রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পও এ ধরনের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে একে ‘উদ্ভট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মন্তব্য করেছেন। বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসের জোশ আর্নেস্ট মুখপাত্র বলেন, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই সাইবার-হামলার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি বলেন, তিনি আরও বলেন, রাশিয়া যে সাইবার হামলায় জড়িত সে কথা ডোনাল্ড ট্রাম্পও জানতেন। যে সাইবার হামলার কারণে হিলারিকে পরাজয়ের মুখে ঠেলে দিয়ে এগিয়ে গিয়েছিলেন ট্রাম্প। এর কয়েক ঘণ্টা পর প্রেসিডেন্ট ওবামা রেডিও স্টেশন এনপিআরকে বলেন, ‘আমাদের নির্বাচনের শুদ্ধতার ওপর যখন কোনো বিদেশী সরকার প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করবে, তখন আমাদের পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন এবং আমরা তা নেব। এ ব্যাপারে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই বলেই আমি মনে করি। যথাসময়ে যথাস্থানে আমাদের বিবেচনাতেই তা নেব।’ তিনি বলেন, ‘এর কিছু স্পষ্ট এবং প্রকাশ্য হতে পারে, কিছু হয়তো স্পষ্ট হবে না।’ ওবামা আরও বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট পুতিন এ ব্যাপারে আমার অনুভূতি সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতন, কারণ এ ব্যাপারে আমি সরাসরিই তাকে বলছি।’ অবশ্য ওবামা ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র কী ধরনের পদক্ষেপ নেবে তা স্পষ্ট নয়। তবে হ্যাকিংয়ের বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করতে মার্কিন গোয়েন্দাদের নির্দেশ দিয়েছেন ওবামা। আগামী ২০ জানুয়ারি দায়িত্ব ছাড়ার আগেই ওই তদন্ত প্রতিবেদন চেয়েছেন তিনি।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সেবা তদারককারী শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থা ‘অফিস অব দ্য ডিরেক্টর অব ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স’ (ওডিএনআই) মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার হ্যাকারদের হস্তক্ষেপ নিয়ে সিআইএর মূল্যায়ন প্রতিবেদন অনুমোদন করেনি। ওডিএনআই প্রতিবেদনটির বিরোধিতা না করলেও সুনির্দিষ্ট কোনো প্রমাণের অভাবের কারণে এটি গ্রহণ করেনি।

রাশিয়া শুরু থেকেই ওই সাইবার হামলার বিষয়ে দেশটির কোনোরকম সম্পৃক্ততার সম্ভাবনা নাকচ করে আসছে। নতুন করে হোয়াইট হাউস এই বিতর্কে যোগ দেয়ার পর বৃহস্পতিবারও ক্রেমলিন থেকে বিষয়টিকে ‘অভদ্র আচরণ’ বলে উল্লেখ করা হয়। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের একজন মুখপাত্র বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র হয়তো এসব কথা বন্ধ করুক, নয়তো পারলে প্রমাণ হাজির করুক।’

অন্যদিকে ট্রাম্প ডেমোক্রেটিক পার্টির বিরুদ্ধে রাশিয়ান হস্তক্ষেপের বিষয়টি ব্যবহার করে নির্বাচনে হারের লজ্জা ঢাকার অভিযোগ তুলেছেন। বৃহস্পতিবার এক টুইট বার্তায় তিনি বলেন, ‘যদি রাশিয়া বা অন্য কোনো দেশ হ্যাকিং করছিল, তাহলে হোয়াইট হাউস প্রতিক্রিয়া দেখাতে এত সময় নিল কেন? কেন হিলারি হারের পর তারা অভিযোগ জানাচ্ছে?’ ট্রাম্পের মতে, নির্বাচনে হিলারি ক্লিনটন জিতলে এ নিয়ে কোনো তদন্তই চালাত না সরকার।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

মার্কিন নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপ প্রতিশোধ নেয়ার ঘোষণা প্রেসিডেন্ট ওবামার

আপডেট টাইম : ১১:৩৭:৩৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৬

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপের অভিযোগে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। মার্কিন রেডিও স্টেশন এনপিআরকে তিনি বলেছেন, ‘আমাদের ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন এবং আমরা তা নেব।’ নির্বাচন চলাকালে ডেমোক্রেটিক পার্টি ও দলটির প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনের ইমেইল হ্যাকের পেছনে যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়াকে দায়ী করে আসছে। কিন্তু রুশ প্রেসিডেন্টের দফতর ক্রেমলিন এ অভিযোগ জোরালোভাবে অস্বীকার করে আসছে। খবর এএফপি ও বিবিসির।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) এক মূল্যায়ন প্রতিবেদনে বলা হয়, ডোনাল্ড ট্রাম্পকে জয়ী করতে যুক্তরাষ্ট্রের ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়া হস্তক্ষেপ করেছে। নির্বাচনে হিলারির জয়ের সম্ভাবনা হ্রাস করা এবং ট্রাম্পের জয়ের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলার জন্য এক অভিযানে নেমেছিল রুশ হ্যাকাররা। আর এই হ্যাকের ঘটনার নেপথ্যে ছিল ক্রেমলিন। এ ব্যাপারে তথ্য-প্রমাণ রয়েছে বলেও মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো দাবি করেছে। নির্বাচনে জয়ী রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পও এ ধরনের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে একে ‘উদ্ভট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মন্তব্য করেছেন। বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসের জোশ আর্নেস্ট মুখপাত্র বলেন, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই সাইবার-হামলার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি বলেন, তিনি আরও বলেন, রাশিয়া যে সাইবার হামলায় জড়িত সে কথা ডোনাল্ড ট্রাম্পও জানতেন। যে সাইবার হামলার কারণে হিলারিকে পরাজয়ের মুখে ঠেলে দিয়ে এগিয়ে গিয়েছিলেন ট্রাম্প। এর কয়েক ঘণ্টা পর প্রেসিডেন্ট ওবামা রেডিও স্টেশন এনপিআরকে বলেন, ‘আমাদের নির্বাচনের শুদ্ধতার ওপর যখন কোনো বিদেশী সরকার প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করবে, তখন আমাদের পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন এবং আমরা তা নেব। এ ব্যাপারে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই বলেই আমি মনে করি। যথাসময়ে যথাস্থানে আমাদের বিবেচনাতেই তা নেব।’ তিনি বলেন, ‘এর কিছু স্পষ্ট এবং প্রকাশ্য হতে পারে, কিছু হয়তো স্পষ্ট হবে না।’ ওবামা আরও বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট পুতিন এ ব্যাপারে আমার অনুভূতি সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতন, কারণ এ ব্যাপারে আমি সরাসরিই তাকে বলছি।’ অবশ্য ওবামা ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র কী ধরনের পদক্ষেপ নেবে তা স্পষ্ট নয়। তবে হ্যাকিংয়ের বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করতে মার্কিন গোয়েন্দাদের নির্দেশ দিয়েছেন ওবামা। আগামী ২০ জানুয়ারি দায়িত্ব ছাড়ার আগেই ওই তদন্ত প্রতিবেদন চেয়েছেন তিনি।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সেবা তদারককারী শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থা ‘অফিস অব দ্য ডিরেক্টর অব ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স’ (ওডিএনআই) মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার হ্যাকারদের হস্তক্ষেপ নিয়ে সিআইএর মূল্যায়ন প্রতিবেদন অনুমোদন করেনি। ওডিএনআই প্রতিবেদনটির বিরোধিতা না করলেও সুনির্দিষ্ট কোনো প্রমাণের অভাবের কারণে এটি গ্রহণ করেনি।

রাশিয়া শুরু থেকেই ওই সাইবার হামলার বিষয়ে দেশটির কোনোরকম সম্পৃক্ততার সম্ভাবনা নাকচ করে আসছে। নতুন করে হোয়াইট হাউস এই বিতর্কে যোগ দেয়ার পর বৃহস্পতিবারও ক্রেমলিন থেকে বিষয়টিকে ‘অভদ্র আচরণ’ বলে উল্লেখ করা হয়। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের একজন মুখপাত্র বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র হয়তো এসব কথা বন্ধ করুক, নয়তো পারলে প্রমাণ হাজির করুক।’

অন্যদিকে ট্রাম্প ডেমোক্রেটিক পার্টির বিরুদ্ধে রাশিয়ান হস্তক্ষেপের বিষয়টি ব্যবহার করে নির্বাচনে হারের লজ্জা ঢাকার অভিযোগ তুলেছেন। বৃহস্পতিবার এক টুইট বার্তায় তিনি বলেন, ‘যদি রাশিয়া বা অন্য কোনো দেশ হ্যাকিং করছিল, তাহলে হোয়াইট হাউস প্রতিক্রিয়া দেখাতে এত সময় নিল কেন? কেন হিলারি হারের পর তারা অভিযোগ জানাচ্ছে?’ ট্রাম্পের মতে, নির্বাচনে হিলারি ক্লিনটন জিতলে এ নিয়ে কোনো তদন্তই চালাত না সরকার।