অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, সরকার হাওরাঞ্চলের উন্নয়নে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তবে এসব উন্নয়ন পরিকল্পনার মধ্যে সমন্বয়ের অভাব আছে বলে স্বীকার করেন মন্ত্রী। আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে হাওরে এখন বেশি উন্নয়ন হচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি।
শনিবার ১৯ নভেম্বর সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে ‘হাওর তথ্য সংগ্রহশালা’ আয়োজিত ‘বৈচিত্র্যময় হাওর’ প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। ‘বৈচিত্র্যময় হাওর’ বইটি সম্পাদনা করেছেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সচিব কারার মাহমুদুল হাসান।
দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কয়েকটি জেলাজুড়ে রয়েছে হাওর। হাওরাঞ্চল বছরের প্রায় ছয় মাস পানিতে তলিয়ে থাকে। সেখানকার জীবনযাত্রার মান এখনও অনেক নিচে। প্রচুর সম্ভাবনা থাকলেও পরিকল্পনা ও তা সমন্বয়ের অভাবে হাওরাঞ্চলবাসী অনেকটাই উন্নয়ন বঞ্চিত।
হাওরের মানুষের দুঃখ-দুর্দশার কথা উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ইতোমধ্যে দেশে হাওরের আয়তন ও আকার অনেক কমেছে। তবে এটিকে সংরক্ষণের দায়িত্ব আমাদের। তাছাড়া হাওর নিয়ে সরকারের অনেক পরিকল্পনা ও বিভিন্ন উদ্যোগ রয়েছে, যা বাস্তবায়নে সরকারের দৃঢ় মনোভাব রয়েছে।’ তবে মন্ত্রী স্বীকার করেন, হাওর নিয়ে সরকারের অনেক পরিকল্পনা থাকলেও সেগুলো বাস্তবায়নে রয়েছে সমন্বয়ের অভাব। হাওরের সমস্যার সমাধানে সবাইকে নজর দেয়ার আহ্বান জানান মন্ত্রী।
মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে হাওর অধিবাসী, ভাটির শার্দূল বাংলাদেশের বর্তমান রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ, বর্তমান সরকার ও অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের প্রতি আহ্বান জানিয়ে নিকলী-বাজিতপুর আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ আফজাল হোসেন বলেন, “ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার জন্য প্রায় দুই কোটি হাওরবাসীকেও সাথে নিয়ে কাজ করে হাওরাঞ্চলের উন্নয়নেও এগিয়ে আসুন।” এছাড়াও হাওর উন্নয়ন বোর্ডের কার্যকারিতা বৃদ্ধি, এর পরিধি বৃদ্ধি এবং হাওরের উন্নয়নে বরাদ্দ বৃদ্ধির জন্য তিনি প্রধান অতিথিকে অনুরোধ জানান।
আলোচনা সভার সমাপনী বক্তৃতায় ‘নিরাপদ সড়ক চাই’-এর সভাপতি ইলিয়াছ কাঞ্চন বলেন, আমরা যেমন নিরাপদ সড়ক চাই, তেমনিভাবে আমরা হাওরকেও রক্ষা করতে চাই। হাওর না থাকলে আমাদের জীব বৈচিত্র্যের অনেক ক্ষতি সাধন হবে। এজন্য হাওর রক্ষা করতে হবে। দেশের হাওর রক্ষায় সরকারকে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে হবে। কোনোভাবেই সরকারকে হাওর নিয়ে অবহেলা করলে হবে না।
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট রিসার্চের সভাপতি ড. মীজানুর রহমান শেলী, নেত্রকোনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য রেবেকা মোমিন ও নেত্রকোনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ছবি বিশ্বাস প্রমুখ।