ঢাকা ০৫:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫, ২৭ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দিনে কোটি টাকার জলপাই বিক্রি, যাচ্ছে বিদেশেও

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:১৩:০৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৫
  • ২৮ বার

জলপাইয়ের নাম শুনলে জিহ্বায় জল আসে না-এমন মানুষ বোধ হয় খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। তাছাড়া জলপাইয়ের কথা উঠলেই কবি সুকুমার রায়ের সেই বিখ্যাত নাটক অবাক জলপান এর কথাও স্মৃতিতে ভেসে উঠে। ছোটবেলায় জলপাই নিয়ে এমন হাসির নাটক পড়ে আমরা প্রায় সবাই কমবেশি হেসেছিও সমানতালে। আর এই জলপাই এখন পঞ্চগড় তথা দেশের অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে। প্রতিদিন জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলা শহরের দেবদারু তলায় বসছে জলপাইয়ের হাট। এটি দেশে জলপাইয়ের সর্ববৃহৎ হাট। এই হাটে প্রতিদিন গড়ে অন্তত ১০০ টন জলপাই বিক্রি হচ্ছে। যার বাজার মূল্য প্রায় দেড় কোটি টাকা।

ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গেই দেবীগঞ্জের দেবদারু তলায় শুরু হয় জলপাই কেনাবেচা। বিভিন্ন স্থান থেকে ভ্যান, রিকশা, মোটরসাইকেল ও পিকআপ ভর্তি করে বস্তা বোঝাই জলপাই আসে বাজারে। রাজশাহী, নওগাঁ, বগুড়া, রংপুর ও দিনাজপুরসহ বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকাররা এসে জলপাই কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। মানভেদে প্রতি কেজি জলপাইয়ের দাম পড়ছে ৩০ থেকে ৫০ টাকা। প্রতি বছর অক্টোবর মাস থেকে শুরু হয় জলপাই আহরণ। মৌসুমের ৩ মাস ধরে বেচাকেনা চলে জলপাই।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাঈম মোর্শেদ জানান, জলপাইয়ের এই হাটটি প্রতিদিনই সম্প্রসারিত হচ্ছে। একই সঙ্গে পঞ্চগড়ে জলপাইয়ের আবাদও বাড়ছে। আমরা চাষিদের ব্যাপারে খোঁজখবর নিচ্ছি। জলপাই চাষ করে চাষিরা লাভবান হচ্ছেন। পঞ্চগড়ে উৎপাদিত জলাপাই শুধু দেশের বাজারেই নয়। রপ্তানি হচ্ছে বিদেশেও। অনলাইনের মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় জলপাই পাঠাচ্ছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। ফলে জেলার অর্থনীতিতে যোগ হয়েছে নতুন মাত্রা। জলপাই ব্যবসাকে ঘিরে পঞ্চগড় জেলার কৃষিভিত্তিক অর্থনৈতিক ধারায় নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, পঞ্চগড়ে বড় পরিসরে বাগান না থাকলেও জেলায় ছোট ছোট খামার, বাড়ির উঠান, রাস্তার ধার ও জমির আইলে সব মিলিয়ে জলপাই চাষ হচ্ছে ১৩ দশমিক ৮ হেক্টর জমিতে। গত মৌসুমে পঞ্চগড়ে জলপাই উৎপাদন হয়েছে ৩ হাজার টন। এবার তা আরও বাড়বে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

দিনে কোটি টাকার জলপাই বিক্রি, যাচ্ছে বিদেশেও

আপডেট টাইম : ০৯:১৩:০৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৫

জলপাইয়ের নাম শুনলে জিহ্বায় জল আসে না-এমন মানুষ বোধ হয় খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। তাছাড়া জলপাইয়ের কথা উঠলেই কবি সুকুমার রায়ের সেই বিখ্যাত নাটক অবাক জলপান এর কথাও স্মৃতিতে ভেসে উঠে। ছোটবেলায় জলপাই নিয়ে এমন হাসির নাটক পড়ে আমরা প্রায় সবাই কমবেশি হেসেছিও সমানতালে। আর এই জলপাই এখন পঞ্চগড় তথা দেশের অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে। প্রতিদিন জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলা শহরের দেবদারু তলায় বসছে জলপাইয়ের হাট। এটি দেশে জলপাইয়ের সর্ববৃহৎ হাট। এই হাটে প্রতিদিন গড়ে অন্তত ১০০ টন জলপাই বিক্রি হচ্ছে। যার বাজার মূল্য প্রায় দেড় কোটি টাকা।

ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গেই দেবীগঞ্জের দেবদারু তলায় শুরু হয় জলপাই কেনাবেচা। বিভিন্ন স্থান থেকে ভ্যান, রিকশা, মোটরসাইকেল ও পিকআপ ভর্তি করে বস্তা বোঝাই জলপাই আসে বাজারে। রাজশাহী, নওগাঁ, বগুড়া, রংপুর ও দিনাজপুরসহ বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকাররা এসে জলপাই কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। মানভেদে প্রতি কেজি জলপাইয়ের দাম পড়ছে ৩০ থেকে ৫০ টাকা। প্রতি বছর অক্টোবর মাস থেকে শুরু হয় জলপাই আহরণ। মৌসুমের ৩ মাস ধরে বেচাকেনা চলে জলপাই।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাঈম মোর্শেদ জানান, জলপাইয়ের এই হাটটি প্রতিদিনই সম্প্রসারিত হচ্ছে। একই সঙ্গে পঞ্চগড়ে জলপাইয়ের আবাদও বাড়ছে। আমরা চাষিদের ব্যাপারে খোঁজখবর নিচ্ছি। জলপাই চাষ করে চাষিরা লাভবান হচ্ছেন। পঞ্চগড়ে উৎপাদিত জলাপাই শুধু দেশের বাজারেই নয়। রপ্তানি হচ্ছে বিদেশেও। অনলাইনের মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় জলপাই পাঠাচ্ছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। ফলে জেলার অর্থনীতিতে যোগ হয়েছে নতুন মাত্রা। জলপাই ব্যবসাকে ঘিরে পঞ্চগড় জেলার কৃষিভিত্তিক অর্থনৈতিক ধারায় নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, পঞ্চগড়ে বড় পরিসরে বাগান না থাকলেও জেলায় ছোট ছোট খামার, বাড়ির উঠান, রাস্তার ধার ও জমির আইলে সব মিলিয়ে জলপাই চাষ হচ্ছে ১৩ দশমিক ৮ হেক্টর জমিতে। গত মৌসুমে পঞ্চগড়ে জলপাই উৎপাদন হয়েছে ৩ হাজার টন। এবার তা আরও বাড়বে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ।