অভিবাসীদের নিয়ে গড়ে ওঠা একটা দেশ। তাঁর নিজের পূর্বজরাও কেউ জন্মসূত্রে আমেরিকান নন। তবুও, ভোট কুড়োতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিশ্রুতি ছিল, ক্ষমতায় এলে তিনি অভিবাসী-মুক্ত আমেরিকা তৈরি করবেন। ভোটের ফল বলছে তাঁর দেখান পথেই হাঁটতে চায় তাঁর দেশ। প্রচারে কড়া অভিবাসী আইনের দোহাই দিয়ে মেক্সিকো সীমান্তে পাঁচিল তোলার কথা বলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বলেন, ক্ষমতায় এলে মুসলিমদের আমেরিকায় ঢুকতে দেবেন না তিনি।
এসব কথা বলে ট্রাম্প হাততালিও পান দেদার। কারণ, মার্কিন জনগণের একটা বড় অংশ মনে করেন অভিবাসীদের জন্যই তাঁদের চাকরি যাচ্ছে। বিষাক্ত হচ্ছে দেশের পরিবেশ। গণভোটের রায় ব্রেক্সিটের
পক্ষে। ঘরে দোর দিচ্ছে ব্রিটেন। ইউরোপের বহু দেশে অতি-দক্ষিণপন্থীদের উত্থান হচ্ছে। মাথা চাড়া দিচ্ছে সত্তার রাজনীতি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইউরোপের ঘরে ঘরে সত্তার রাজনীতির যে জয়জয়কার শুরু হয়েছে, ট্রাম্পের জয়ে সেটাই অতলান্তিক পেরিয়ে আমেরিকার কূলে এসে ভিড়ল।
মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি থেকে সরে আসা। মধ্যপ্রাচ্য ও পশ্চিম এশিয়া নীতি আরও শক্ত করা নিয়ে ট্রাম্পের প্রতিশ্রুতি। ওবামা প্রশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতা। রিপাবলিকান প্রার্থীর জয়ের পিছনে নানা কারণ থাকলেও সত্তার রাজনীতির ওপর দাঁড়িয়ে ট্রাম্পের অভিবাসন-বিরোধী নীতিই তাঁকে জিতিয়ে দিল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। পূর্ব উপকূলে নিউইয়র্ক। পশ্চিম উপকূলে ক্যালিফোর্নিয়ার মতো কসমোপলিটন শহর। মাঝে বাইবেল ব্লক। রক্ষণশীল আমেরিকা। এই আমেরিকাই ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ক্ষমতার মসনদে পৌছে দিল বলে মনে করছেন তাঁরা।
হিলারি ক্লিন্টনের ই-মেল কেলেঙ্কারি-সহ তাঁর বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতির অভিযোগ, হিলারির ব্যক্তিগত ভাবমূর্তির সমস্যাও ট্রাম্পের জয়ের রাস্তা সোজা করে দেয়। মার্কিন জনগণ ডোনাল্ড ট্রাম্পকে বিপুল ভোটে জেতালেও প্রচারে যে সব কথা তিনি বলেছিলেন, তাতে তাঁকে নিয়ে আন্তর্জাতিক দুনিয়ার নানারকম আশঙ্কা রয়েছে। একবার হোয়াইট হাউসে ঢুকে পড়ার পর ট্রাম্প কোন পথে হাঁটেন এখন সেদিকেই নজর সকলের।-জিনিউজ