ইকোনমিক জোনে বিনিয়োগে আগ্রহী যুক্তরাজ্য : বাণিজ্যমন্ত্রী

বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, ‘যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের স্পেশাল ইকোনমিক জোনে সরাসরি বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি করবে। বর্তমানে যুক্তরাজ্যের ২০০-এর বেশি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে বিনিয়োগ করেছে এবং সফলভাবে বাণিজ্য পরিচালনা করছে।’

বাংলাদেশে সফররত যুক্তরাজ্যের ডিএফআইডি’র মহাপরিচালক ডেভিড কেনেডির নেতৃত্বে ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত আলিসন ব্লাকসহ একটি উচ্চ পর্যায়ের পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী।

তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, ‘বিশেষ করে বাংলাদেশের তৈরী পোশাক শিল্প, কৃষি ভিত্তিক শিল্পতে যুক্তরাজ্য সরাসরি বিনিয়োগ করতে চায়। সরকার ঘোষিত ১০০টি স্পেশাল ইকোনমিক জোনে যুক্তরাজ্য বিনিয়োগ করবে।’

মন্ত্রী আরো বলেছেন, ‘যুক্তরাজ্যকে স্পেশাল ইকোনমিক জোনে বিনিয়োগের বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করা হবে। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উদারনীতি গ্রহণ করেছে। যে কোনো বিদেশি প্রতিষ্ঠান ১০০ ভাগ মূলধন বিনিয়োগ করতে পারবে এবং প্রয়োজনে মূলধন ও লাভ নিয়ে জেতে পারবেন। সরকারের এ ধরনের উদার নীতির কারণে বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে আসছেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্য বেরিয়ে গেলেও বাংলাদেশের সাথে চলমান বাণিজ্যে কোনো ধরনের প্রভাব পরবে না।’

তোফায়েল আহমেদ আরো বলেছেন, ‘যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের ভালো বন্ধু, ব্যবসায়িক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। যুক্তরাজ্যের সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্য দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। যুক্তরাজ্য বাংলাদেশকে অস্ত্র ছাড়া সকল পণ্যের শুল্প ও কোটা মুক্ত প্রবেশাধিকার দিচ্ছে। বাণিজ্য ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বরাবরই পজেটিভ অবস্থায় রয়েছে। গত বছর বাংলাদেশ যুক্তরাজ্যে রফতানি করেছে ৩ হাজার ৮০৯ দশমিক ৬৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য, একই সময়ে আমদানি করেছে ২৭৬ দশমিক ৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য। বাংলাদেশের পক্ষে উদ্বৃত্ত বাণিজ্য হলো ৩ হাজার ৫৩৩ দশমিক ০৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা গত বছর থেকে ৬৫৭ দশমিক ৮৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বেশি।’

বাণিজ্যমন্ত্রী আরো বলেছেন, ‘বাংলাদেশের বর্তমান রফতানি ৩৪ দশমিক ২৪১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার । ২০২১ সালে দেশের ৫০ বছর পূর্তিতে এ রফতানির পরিমাণ দাঁড়াবে ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, এর মধ্যে শুধু তৈরী পোশাক থেকে আসবে ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ৭ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা মোতাবেক সরকার নতুন নতুন পণ্য বিদেশে রফতানিতে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করে নগদ আর্থিক সহায়তা প্রদান করে যাচ্ছে। রফতানি বাজার সম্প্রসারণেরও উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।’ এ ক্ষেত্রে বাণিজ্যমন্ত্রী যুক্তরাজ্যের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন।

সফররত যুক্তরাজ্যের ডিএফআইডি এর মহাপরিচালক বলেছেন, ‘বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব উন্নতি করেছে। আগামী দিনগুলোতে বাংলাদেশ আরো ভালো করবে। যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ আরো বৃদ্ধি করবে। বাংলাদেশ সরকার ঘোষিত ১০০ স্পেশাল ইকোনমিক জোনে যুক্তরাজ্য বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

এ সময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন ও অতিরিক্ত সচিব মনোজ কুমার রায় উপস্থিত ছিলেন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর