শীতকালীন সবজি চাষে লাভবান কৃষকরা

জেলার বাজারে উঠতে শুরু করেছে শীতকালীন শাকসবজি।আর এই শীতকালীন শাকসবজি চাষ করে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। ক্ষেতের পাশাপাশি অনেকেই বাড়ির আঙ্গিণায় শীতকালীন শাকবজি চাষ করেও লাভবান হচ্ছে।

শীতকালীন শাকসবজি চাষে লাভবান হওয়ায় কৃষকদের পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণির লোকজন এই পেশার দিকে ঝুঁকছে।

সরেজমিনে, টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা যায় অনেকেই শীতকালীন শাকবজির ক্ষেত পরিচর্যা করছেন। পুরুষের পাশাপাশি মহিলারাও অংশ নিচ্ছেন এ কাজে। বাবা-মাকে তাদের ছেলে-মেয়েরাও বিভিন্নভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করছে।

অনেককেই ক্ষেত থেকে শীতকালীন সবজি তুলে বাজারজাতকরণের প্রস্তুতি নিতেও দেখা যায়।

সবজিটাঙ্গাইল সদর উপজেলার সদুল্লাপুরে শীতকালীন শাকসবজির ক্ষেতে পরিচর্যা করছিলেন মমতাজ বেগম নামে এক কৃষানী। তার সঙ্গে কথা হলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, আমি এ বছর প্রায় ৪ বিঘা জমিতে শীতকালীন শাক সবজি চাষ করেছি। বিঘা প্রতি আমার খরচ হয়েছে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। এখন পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার টাকার মত শাক-সবজি বিক্রি করেছি। যেভাবে বিক্রি হচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে আমি বেশ লাভবান হবো।

ক্ষেত্রে লাল শাক, লাউশাকসহ বিভিন্ন ধরনের শীতকালীন শাকসবজি চাষ করার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, মাঠ পর্যায়ে এখন পর্যন্ত কোনো কৃষি অফিসারের সাহায্য-সহযোগিতা পাইনি। তাই বলে আমরাও থেমে নেই। নিজস্ব উদ্যেগেই শীতকালিন শাক-সবজি চাষ করছি।

কথা হয় একই গ্রামের আরেক কৃষানি পান্না বেগমের সঙ্গে। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, আমি এ বছর লাউ, শশা, কপি, ফুলকপি, বাধাকপি চাষ করেছি। এখন পর্যন্ত আমি কোন শাকসবজি বিক্রি করেনি। তবে গত বছর শীতকালীন শাকসবজি চাষ করে লাভবান হয়েছিলাম।

সবজি তিনি আরও বলেন, এতে ১০ হাজার টাকা খরচ করলে ২০ হাজার টাকা লাভবান হই। সংসারের যাবতীয় খরচ এবং ছেলেময়ের লেখা পড়ার খরচ এর উপর নির্ভর করে।

কথা হয় শাহানুরের সঙ্গে। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, আমি চাকরি করি। চাকরির পাশাপাশি শীতকালীন শাক সবজি চাষ করে লাভবান হওয়ায়, আমি বাড়ির আঙ্গিণায় শীতকালীন শাকসবজি চাষ করেছি।

আর এদিকে টাঙ্গাইল শহরের পার্কবাজার ও বটতলা বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে উঠেছে শীতকালীন শাকসবজি, আর এই শীতকালীন শাকসবজি কিনছেন ক্রেতারা। তবে দাম তুলনামূলক বেশি। ব্যবসায়ীরা বলছেন সরবরাহ কম, তাই দামও বেশি।

ফুলিকপি ৬০ টাকা কেজি, বাধাকপি ৪০ টাকা কেজি, দেশি লাউ ৩০ টাকা পিস, লাল শাক/ লাউ শাক ১০ টাকা থেকে ২০ আটি, শিম ১২০ টাকা কেজি, ধনেপাতা ১৫০ টাকা কেজি, মূলা ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

এ বিষয়ে কথা হয় পার্কবাজারের মানিক চোহান নামে এক দোকনদারের সঙ্গে। তিনি বলেন, বাজারে শীতকালীন শাকসবজি উঠতে শুরু করেছ। তবে দাম বেশি।

তিনি আরও বলেন, বাজারে এখন শীতকালীন শাকসবজির সরবরাহ কম, চাহিদা বেশি। তাই দামও বেশি। তবে কয়েকদিনের মধ্যে দাম কমব।

শাকসবজিবাজারে শীতকালীন শাকসজির কিনতে আসা সেলিম বলেন, আমি শীতকালীন শাকসবজি কিনেছি, তবে দাম বেশি।

টাঙ্গাইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আবুল হাশেম বলেন, কৃষকরা শীতকালীন শাকসবজি চাষ করে লাভবান হচ্ছেন।শীতকালীন শাকসবজিতে খরচ কম লাভ বেশি।

তিনি আরও বলেন, টাঙ্গাইলে কিভাবে আরো শীতকালীন শাকসবজির উৎপাদন বাড়ানো যায়, সে লক্ষে আমরা কাজ করছি। এ ব্যাপারে আমাদের একটি পরিকল্পনা রয়েছে। কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ে অফিসাররাও কাজ করছেন বলে দাবি করেন তিনি।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর