যেকোনো মূল্যে নির্বাচনেই আগাচ্ছে বিএনপি

সার্বিক দিক ধেকে যেকোনো মূল্যে নির্বাচনেই আগাচ্ছে বিএনপি। এজন্য আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সার্বিক কর্মপরিকল্পনা তৈরি করছে বিএনপির হাইকমান্ড। পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে স্বাধীন নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের লক্ষ্যে জনমত তৈরিতে তারা প্রস্তুতি নিচ্ছে মাঠে নামার। এ লক্ষে প্রতিদিন আলোচনা সভা, সেমিনার ও প্রতিবাদ সভায় নেতারা নির্বাচন কমিশিনের ব্যর্থতা উল্লেখ্য করে বক্তব্য দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে দলের মধ্যে। একইসঙ্গে সব দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে সরকারের ওপর দেশি-বিদেশি চাপ বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনালে (অব.) মাহবুবুর রহমান পূর্বপশ্চিমকে বলেন, একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য দেশের জনগণ মুখিয়ে আছে। আর বিএনপি এ লক্ষ্যে প্রস্তুত আছেই। বিএনপির মতো একটি দলে যেকোনো মুহূর্তেই নির্বাচনের জন্য সার্বিক প্রস্তুতিতেই থাকে। তৃণমূলে নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষেরও নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। উৎসবমুখর পরিবেশে যোগ্যপ্রার্থীকে তারা ভোট দিতে মুখিয়ে আছে। জনগণের সেই ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, একাদশতম নির্বাচনের জন্য পর্যায়ক্রমে সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা, নির্বাচনি ইশতেহারসহ সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ কাজ করবে। এ লক্ষ্যে কেন্দ্রীয়ভাবে জেলা ও উপজেলা বিএনপি কমিটির ‘সুপার ফাইভ/সেভেন’নেতাদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করার কাজ চলছে। যোগ্য ও জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য প্রার্থী নির্বাচনে দুটি তালিকা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। এরপর এ দুই তালিকা থেকে সমন্বয় করে মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হবে। এলাকায় গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে, বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে মাঠে ছিলেন এবং দলের প্রতি আনুগত্য রয়েছে এমন যোগ্যতা বিবেচনায় নিয়েই করা হবে এসব তালিকা।

তবে সব প্রস্তুতি শুরু করলেও নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা কাটছে না দলের সিনিয়র নেতাদের। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ দলের সিনিয়র নেতাদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করে আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দিতে পারে সরকার- এ শঙ্কায় রয়েছে বিএনপি। এজন্য তিন স্তরের প্রার্থী তালিকা করছে শীর্ষ নেতারা। দলটির নেতারা মনে করেন, যেকোনোভাবে একটি অবাধ নির্বাচন হলে তারা বিপুল ভোটে জয়লাভ করবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান পূর্বপশ্চিমকে বলেন, নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার ও স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের অধীনে আমরা নির্বাচন চাই। যাতে সব দল অংশগ্রহণ করতে পারে এবং ভোটাররা নির্ভয়ে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন। এমন একটি নির্বাচনে যারাই জয়লাভ করবে বিএনপি তাদের স্বাগত জানাবে। সবার অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকার দ্রুত সেই উদ্যোগ নেবে বলে আশা করেন বিএনপির এই নীতিনির্ধারক।

নেতারা বলছেন, অযোগ্য ঘোষণার আশঙ্কা সত্যি না হলেও সরকার পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষে ২০১৯ সালে নির্বাচন করলে আর মাত্র আড়াই বছর সময় হাতে আছে। সেক্ষেত্রেও বিএনপির বর্তমান নাজুক সাংগঠনিক অবস্থা থেকে দলকে নির্বাচনি ভোটযুদ্ধে লড়ার মতো উপযোগী করে গড়ে তুলতে এখনই প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর