সিলেটের জাফলংয়ে শ্রমিকদের বাধার মুখে পড়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এবং জলবায়ু বন পরিবেশ ও পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান। জাফলং পাথর কেয়ারি পরিদর্শন শেষে ফেরার পথে আজ শনিবার দুপুরে শ্রমিকরা উপদেষ্টাদের গাড়ি প্রায় ১০ মিনিট ধরে অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন স্থানীয় পাথর শ্রমিকরা।এ সময় তারা ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দিতে থাকে। পরে পুলিশ এসে তাদের সরিয়ে দেয়।
জানা গেছে, এর আগে শনিবার সকালে বেপরোয়া পাথর-বালু উত্তোলন ও লুটপাটে বিপর্যস্ত প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং পাথর কোয়ারি পরিদর্শনে যান দুই উপদেষ্টা। তারা সেখানে পিয়াইন নদী ঘুরে দেখেন। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
বিক্ষোভকারীরা জানান, সিলেটের সীমান্ত এলাকায় কৃষি ও অন্যান্য কর্মসংস্থান না থাকায় পাথর উত্তোলন তাদের একমাত্র পেশা। পাথর উত্তোলন বন্ধ থাকায় তারা পরিবার নিয়ে অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন।
প্রায় একই রকম দাবি স্থানীয় ব্যবসায়িদেরও। তারা বলছেন, উত্তোলন না করলেও অবৈধভাবে রাতে পাথর লুট হয়ে যাচ্ছে। পাথর ব্যবসার সঙ্গে জড়িত সকল ব্যবসায়ী ও পরিবহন সংশ্লিষ্টরা পড়েছেন ক্ষতির মুখে।
গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরকার মোহাম্মদ তোফায়েল আহমেদ জানান, শনিবার স্থানীয়রা উপদেষ্টাদের গাড়ি আটকে দেয়। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
জাফলংসহ সিলেটের সকল পাথর কোয়ারির ইজারা প্রক্রিয়া স্থায়ীভাবে বন্ধ রাখার সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে স্থানীয়রা এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তবে জাফলং পরিদর্শন শেষে নিজেদের সিদ্ধান্তে অনড় থাকার কথাও জানান দুই উপদেষ্টা।
পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘নান্দনিক ও নৈসর্গিক আবেদন আছে এই রকম জায়গায় আমরা আর পাথর উত্তোলনে অনুমতি দিবো না। জাফলং পর্যটনকেন্দ্রকে ঢেলে সাজাতে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এটি করা গেলে এ অঞ্চলের পাথর শ্রমিকদের বিকল্প কর্মসংস্থান তৈরি হবে।’
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করে জাফলং ও আশপাশের এলাকার পরিবেশ ধ্বংস করা হচ্ছে। এই এলাকায় স্টোন ক্রাশারের জন্য পুরো এলাকা নষ্ট হচ্ছে। অবিলম্বে অবৈধ পাথর ভাঙার কলের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে।’
অবৈধভাবে বালু ও পাথর উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে ভবিষ্যতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রশাসনকে এসব উচ্ছেদ করতে বলা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- পরিবেশ অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং স্থানীয় প্রশাসনের প্রতিনিধিরা।