ঢাকা ০৭:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মহিউদ্দিনের ত্যাগের মূল্যায়ন পেলেন ছেলে নওফেল

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৩৮:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ অক্টোবর ২০১৬
  • ১৩০৩ বার

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটিতে সাংগঠনিক সম্পাদক মনোনীত হয়েছেন ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর বড় ছেলে। ঐতিহ্যবাহী আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রাপ্তিকে মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল তার বাবার ত্যাগ ও কর্মের স্বীকৃতি বলে মনে করেন। এই অর্জনকে চট্টগ্রামবাসীর প্রতি উৎসর্গ করেছেন তিনি।

ধানমণ্ডির আওয়ামী লীগের সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) সকালে আংশিক কমিটি ঘোষণা করেন নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এতে সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে নওফেলের নাম ঘোষণা করা হয়।

বাবার পথ ধরে দলীয় রাজনীতিতে মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল যুক্ত হন ২০১৪ সালে। চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের ৭১ সদস্যের নগর কমিটির নির্বাহী সদস্য তিনি। দলের বড় কোন পদে দায়িত্ব পালন না করলেও সাংগঠনিক দক্ষতার বিচারে দলকে সংগঠিত করতে তাকেই বেঁছে নেওয়া হয়েছে।

নওফেলের নাম ঘোষণার পর থেকে চট্টগ্রামে মহিউদ্দিনের অনুসারীদের মধ্যে উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে। এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী নিজেও মনে করছেন, রাজনীতিতে দীর্ঘসময় ধরে তার যে ত্যাগ তিতিক্ষা, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে এর উপযুক্ত মূল্যায়ন পেয়েছেন।

দলের সাংগঠনিক সম্পাদকে দায়িত্ব পাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, আমার বাবার রাজনৈতিক জীবনের ত্যাগ ও বিসর্জনের মূল্যায়ন এই পদ। আমার বাবা একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তিনি অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছিলেন। বারবার কারাবরণ করেছেন। দু‍ঃসময়ে চট্টগ্রামে দলের হাল ধরেছেন। চট্টগ্রামে দলকে সংগঠিত করেছেন। তিনবার মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। ওয়ান ইলেভেনের সময় যখন আমার বাবাকে জেলে নেয়া হয়, তখন আমার বোনের মৃত্যু হয়।

তিনি বলেন, আমার বাবার ত্যাগের স্বীকৃতি আমি পেয়েছি। জীবনে অনেক সুযোগ এসেছে, কিন্তু আমার বাবা কখনও চট্টগ্রামকে ছেড়ে যাননি। নানা সংকটের মধ্যেও চট্টগ্রামবাসীকে আগলে এই চট্টগ্রামেই থেকে গেছেন। ওয়ান ইলেভেনের সময় আমার বাবাকে রাজনীতি ছাড়ার জন্য চাপ দেয়া হয়েছিল। তিনি সেই চাপ উপেক্ষা করেছেন। দলের জন্য তার দীর্ঘ অবদানের পুরস্কার হচ্ছে আমার এই পদ। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে ‍কৃতজ্ঞ। ’

আগামী দিনের পরিকল্পনা সম্পর্কে নওফেল বলেন, দলীয় সভানেত্রীর নির্দেশনা অনুসারে এবং দলের লক্ষ্য বাস্তবায়নে কাজ করে যাব। সাংগঠনিক কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে অবিলম্বে সবগুলো সাংগঠনিক জেলায় যাব। দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করেই কাজ এগিয়ে নেব।

মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ১৯৮৩ সালের ২৬ জুন চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন নওফেল। ২০১০ সালে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আগে বাবা মহিউদ্দিনের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেন তিনি। এর মধ্য দিয়েই রাজনীতিতে সক্রিয় হন তিনি। চট্টগ্রাম সিটির মেয়র প্রার্থী চূড়ান্ত করতে ২০১৫ সালের ২০ মার্চ গণভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের সাথে উপস্থিত ছিলেন নওফেলও। ওই সভাতেই চট্টগ্রাম নগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছিরের পক্ষে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন চট্টগ্রামের তিন বারের নির্বাচিত মেয়র মহিউদ্দিন।

ঢাকা বারের এই আইনজীবী চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিরও সদস্য। তিনি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল বিজয় টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

গণভবনের ওই বৈঠকের আগে একান্ত আলাপে মহিউদ্দিন চৌধুরীর স্বাস্থ্য বিষয়ে ছেলে নওফেলের কাছে জানতে চান দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা। ওই দিনই ‘পরবর্তীতে’ নওফেলকে মূল্যায়নের আশ্বাস দিয়েছিলেন তিনি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

মহিউদ্দিনের ত্যাগের মূল্যায়ন পেলেন ছেলে নওফেল

আপডেট টাইম : ১১:৩৮:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ অক্টোবর ২০১৬

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটিতে সাংগঠনিক সম্পাদক মনোনীত হয়েছেন ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর বড় ছেলে। ঐতিহ্যবাহী আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রাপ্তিকে মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল তার বাবার ত্যাগ ও কর্মের স্বীকৃতি বলে মনে করেন। এই অর্জনকে চট্টগ্রামবাসীর প্রতি উৎসর্গ করেছেন তিনি।

ধানমণ্ডির আওয়ামী লীগের সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) সকালে আংশিক কমিটি ঘোষণা করেন নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এতে সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে নওফেলের নাম ঘোষণা করা হয়।

বাবার পথ ধরে দলীয় রাজনীতিতে মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল যুক্ত হন ২০১৪ সালে। চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের ৭১ সদস্যের নগর কমিটির নির্বাহী সদস্য তিনি। দলের বড় কোন পদে দায়িত্ব পালন না করলেও সাংগঠনিক দক্ষতার বিচারে দলকে সংগঠিত করতে তাকেই বেঁছে নেওয়া হয়েছে।

নওফেলের নাম ঘোষণার পর থেকে চট্টগ্রামে মহিউদ্দিনের অনুসারীদের মধ্যে উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে। এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী নিজেও মনে করছেন, রাজনীতিতে দীর্ঘসময় ধরে তার যে ত্যাগ তিতিক্ষা, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে এর উপযুক্ত মূল্যায়ন পেয়েছেন।

দলের সাংগঠনিক সম্পাদকে দায়িত্ব পাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, আমার বাবার রাজনৈতিক জীবনের ত্যাগ ও বিসর্জনের মূল্যায়ন এই পদ। আমার বাবা একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তিনি অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছিলেন। বারবার কারাবরণ করেছেন। দু‍ঃসময়ে চট্টগ্রামে দলের হাল ধরেছেন। চট্টগ্রামে দলকে সংগঠিত করেছেন। তিনবার মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। ওয়ান ইলেভেনের সময় যখন আমার বাবাকে জেলে নেয়া হয়, তখন আমার বোনের মৃত্যু হয়।

তিনি বলেন, আমার বাবার ত্যাগের স্বীকৃতি আমি পেয়েছি। জীবনে অনেক সুযোগ এসেছে, কিন্তু আমার বাবা কখনও চট্টগ্রামকে ছেড়ে যাননি। নানা সংকটের মধ্যেও চট্টগ্রামবাসীকে আগলে এই চট্টগ্রামেই থেকে গেছেন। ওয়ান ইলেভেনের সময় আমার বাবাকে রাজনীতি ছাড়ার জন্য চাপ দেয়া হয়েছিল। তিনি সেই চাপ উপেক্ষা করেছেন। দলের জন্য তার দীর্ঘ অবদানের পুরস্কার হচ্ছে আমার এই পদ। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে ‍কৃতজ্ঞ। ’

আগামী দিনের পরিকল্পনা সম্পর্কে নওফেল বলেন, দলীয় সভানেত্রীর নির্দেশনা অনুসারে এবং দলের লক্ষ্য বাস্তবায়নে কাজ করে যাব। সাংগঠনিক কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে অবিলম্বে সবগুলো সাংগঠনিক জেলায় যাব। দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করেই কাজ এগিয়ে নেব।

মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ১৯৮৩ সালের ২৬ জুন চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন নওফেল। ২০১০ সালে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আগে বাবা মহিউদ্দিনের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেন তিনি। এর মধ্য দিয়েই রাজনীতিতে সক্রিয় হন তিনি। চট্টগ্রাম সিটির মেয়র প্রার্থী চূড়ান্ত করতে ২০১৫ সালের ২০ মার্চ গণভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের সাথে উপস্থিত ছিলেন নওফেলও। ওই সভাতেই চট্টগ্রাম নগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছিরের পক্ষে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন চট্টগ্রামের তিন বারের নির্বাচিত মেয়র মহিউদ্দিন।

ঢাকা বারের এই আইনজীবী চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিরও সদস্য। তিনি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল বিজয় টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

গণভবনের ওই বৈঠকের আগে একান্ত আলাপে মহিউদ্দিন চৌধুরীর স্বাস্থ্য বিষয়ে ছেলে নওফেলের কাছে জানতে চান দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা। ওই দিনই ‘পরবর্তীতে’ নওফেলকে মূল্যায়নের আশ্বাস দিয়েছিলেন তিনি।