প্রতিবছর মে মাসের দ্বিতীয় রবিবারটি এভাবেই আসে। বিশ্বজুড়ে মায়ের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয় দিনটি। জন্ম থেকে বেড়ে ওঠা, ছন্দোময় শৈশব-কৈশোর—এসবের পেছনে মায়ের অবদান অপরিসীম।
সন্তানের কাছে প্রতিটি মা-ই জগতের সবচেয়ে সেরা মানুষ। মা মানেই পরম শান্তির আধার ও ছায়ামাধুর্য। আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম লিখেছেন, ‘যেখানেতে দেখি যাহা/মা-এর মতন আহা/একটি কথায় এত সুধা মেশা নাই,/মায়ের মতন এত/আদর সোহাগ সে তো/আর কোনখানে কেহ পাইবে ভাই!’
অনেকে এদিন মায়ের জন্য নানা রকম উপহার কেনেন। কেউ দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে কেক কাটেন।
হৃদয়ের আকুল অনুভূতি দিয়ে মাকে অনুভব করেন তাঁরা। মনে পড়ে মায়ের গন্ধ। মায়ের আঁচলের ছায়ার স্নিগ্ধতা। সন্তানের জন্য মায়ের কত যে আত্মত্যাগ, কত যে বিসর্জন, তা-ও মনের কোণে উঁকি দিয়ে যায়। বিদগ্ধ করে। মায়ের জন্য কিছু করতে না পারার অক্ষমতার কথা মনে পড়ে, কান্না আসে। বিশ্ব মা দিবসের এই দিনটি তাই ব্যস্ত জীবনে অন্য রকম গুরুত্ব বহন করে।
বিবিসি বলছে, আধুনিককালের এই মা দিবসের ধারণাটা আসে যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়ার বাসিন্দা আনা জারভিসের মাথা থেকে। তাঁর মা অ্যান মারিয়া রিভস জার্ভিস ছিলেন একজন শান্তিবাদী সমাজকর্মী। ১৯০৫ সালে তিনি মারা যান। তাঁর মৃতু্যুর পর মেয়ে আনা মায়ের স্বপ্নপূরণে কাজ শুরু করেন।
পৃথিবীর সব মাকে শ্রদ্ধা জানাতে একটি দিবস প্রচলনের চেষ্টা করেন। ১৯০৮ সালে পশ্চিম ভার্জিনিয়ার একটি গির্জায় মায়ের স্মরণে একটি অনুষ্ঠান করেন আনা। সে বছর মার্কিন কংগ্রেস মা দিবসকে স্বীকৃতি দিয়ে সরকারি ছুটি ঘোষণার প্রস্তাব নাকচ করে। অদম্য আনা তাঁর চেষ্টা অব্যাহত রাখেন। তাঁর প্রচেষ্টায় যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে মা দিবস পালিত হতে থাকে।
অবশেষে ১৯১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন মে মাসের দ্বিতীয় রবিবারকে মা দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন। দিনটি সরকারি ছুটি ঘোষিত হয়। এরপর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার মা দিবস হিসেবে পালিত হতে থাকে।