ঢাকা ০৮:৫১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চারুকলায় ফের তৈরি হচ্ছে ‘স্বৈরাচারের প্রতিকৃতি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:১২:০১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫
  • ১২ বার

চারুকলায় নববর্ষ আনন্দ শোভাযাত্রার মূল মোটিফ ‘স্বৈরাচারের প্রতিকৃতি’ ফের তৈরি করা হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান জানিয়েছেন, নতুন করে এ দায়িত্ব শিল্পীদের ওপর ন্যস্ত করা হয়েছে।

এবার নববর্ষ উপলক্ষে আনন্দ শোভাযাত্রায় ‘স্বৈরাচারের প্রতিকৃতি’ রাখার কথা ছিল। তবে শেষ মুহূর্তে এসে দুষ্কৃতকারীরা তা পুড়িয়ে দেয়।

গতকাল শনিবার ঢাবি উপাচার্য চারুকলা অনুষদে গিয়ে সেখানে আনন্দ শোভাযাত্রার প্রস্তুতির অগ্রগতি পরিদর্শন করেন। তখনই তিনি এ কথা বলেন।

ঢাবি উপাচার্য বলেন, ‘আমরা একটি উদ্যোগ নিয়েছিলাম, সেখানে বাঁধা এসেছে। এ ধরনের কাজে কিছু বাঁধা আসেই, ষড়যন্ত্র থাকবেই। মানুষের পরিশ্রম, আল্লাহর উপর ভরসা করে এসব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে আমরা এগিয়ে যাবো। এতে সবার সহযোগিতা কামনা করছি। আমরা এই মুহূর্তে একটি জাতীয় দায়িত্ব পালন করে আসছি। আমরা সবাইকে পাশে থাকার আহ্বান জানাই।’

মোটিফ তৈরির যাবতীয় সরঞ্জাম ইতোমধ্যেই চারুকলা প্রাঙ্গনে নিয়ে আসা হয়েছে। শিল্পীরা দ্রুততম সময়ে মোটিফ বানানোর কাজে লেগে পড়েছেন।

আগের মোটিফটি প্রায় এক মাস সময় নিয়ে গড়া হয়েছিল। সেটা ১ দিনে কীভাবে গড়া সম্ভব? এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাবি প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমদ সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘গত ১ মাস ধরে বানানো একটা প্রতিকৃতি তো ১ দিনে বানানো সম্ভব না। দেখা যাক, শিল্পীরা কি করেন। তারা অনেক ভেবে, চিন্তা করে কি করেন সেটা পরে দেখা যাবে।’

পুরো বিষয়টির দেখভাল এখন শিল্পীদের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তারা পরিকল্পনা করছেন। কীভাবে কাজটা সারা যায়, সেটি দেখছেন তারা।

তবে এ বিষয়ে শিল্পী ও শিক্ষকদের দাবি তারা যদি ২৪ ঘন্টাও কাজ করেন তাহলে ন্যূনতম ৫ দিন সময় লাগবে এমন প্রতিকৃতি তৈরি করতে। এখন যেটা সম্ভব তা হচ্ছে- আলোচনার মাধ্যমে ভিন্নভাবে কিছু তৈরি করা।

এর আগে আনন্দ শোভাযাত্রার প্রস্তুতি দেখতে চারুকলায় গিয়েছিলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। সেখানে তিনি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘এই আয়োজনের সঙ্গে সম্পৃক্ত সবাইকে আমি স্যালুট জানাই। তারা গত ১ মাস ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে। “ফ্যাসিস্টের প্রতিকৃতি” নাশকতার মাধ্যমে পুড়িয়ে ফেলে শিল্পীদের স্পিরিট দমানোর চেষ্টা করলেও আমি এসে দেখছি শিল্পীদের স্পিরিট দ্বিগুণ হয়ে গেছে। আশা করবো দেশবাসী দারুণ একটি শোভাযাত্রা করবে। দেশবাসীকে আহ্বান জানাই শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়ার জন্য।’

প্রসঙ্গত, দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে পুড়ে গেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদ থেকে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে আনন্দ শোভাযাত্রার জন্য তৈরি করা ‘ফ্যাসিস্টের প্রতিকৃতি’। এ ঘটনায় অজ্ঞাতদের আসামি করে শাহবাগ থানায় মামলা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খানকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

চারুকলায় ফের তৈরি হচ্ছে ‘স্বৈরাচারের প্রতিকৃতি

আপডেট টাইম : ১০:১২:০১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫

চারুকলায় নববর্ষ আনন্দ শোভাযাত্রার মূল মোটিফ ‘স্বৈরাচারের প্রতিকৃতি’ ফের তৈরি করা হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান জানিয়েছেন, নতুন করে এ দায়িত্ব শিল্পীদের ওপর ন্যস্ত করা হয়েছে।

এবার নববর্ষ উপলক্ষে আনন্দ শোভাযাত্রায় ‘স্বৈরাচারের প্রতিকৃতি’ রাখার কথা ছিল। তবে শেষ মুহূর্তে এসে দুষ্কৃতকারীরা তা পুড়িয়ে দেয়।

গতকাল শনিবার ঢাবি উপাচার্য চারুকলা অনুষদে গিয়ে সেখানে আনন্দ শোভাযাত্রার প্রস্তুতির অগ্রগতি পরিদর্শন করেন। তখনই তিনি এ কথা বলেন।

ঢাবি উপাচার্য বলেন, ‘আমরা একটি উদ্যোগ নিয়েছিলাম, সেখানে বাঁধা এসেছে। এ ধরনের কাজে কিছু বাঁধা আসেই, ষড়যন্ত্র থাকবেই। মানুষের পরিশ্রম, আল্লাহর উপর ভরসা করে এসব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে আমরা এগিয়ে যাবো। এতে সবার সহযোগিতা কামনা করছি। আমরা এই মুহূর্তে একটি জাতীয় দায়িত্ব পালন করে আসছি। আমরা সবাইকে পাশে থাকার আহ্বান জানাই।’

মোটিফ তৈরির যাবতীয় সরঞ্জাম ইতোমধ্যেই চারুকলা প্রাঙ্গনে নিয়ে আসা হয়েছে। শিল্পীরা দ্রুততম সময়ে মোটিফ বানানোর কাজে লেগে পড়েছেন।

আগের মোটিফটি প্রায় এক মাস সময় নিয়ে গড়া হয়েছিল। সেটা ১ দিনে কীভাবে গড়া সম্ভব? এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাবি প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমদ সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘গত ১ মাস ধরে বানানো একটা প্রতিকৃতি তো ১ দিনে বানানো সম্ভব না। দেখা যাক, শিল্পীরা কি করেন। তারা অনেক ভেবে, চিন্তা করে কি করেন সেটা পরে দেখা যাবে।’

পুরো বিষয়টির দেখভাল এখন শিল্পীদের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তারা পরিকল্পনা করছেন। কীভাবে কাজটা সারা যায়, সেটি দেখছেন তারা।

তবে এ বিষয়ে শিল্পী ও শিক্ষকদের দাবি তারা যদি ২৪ ঘন্টাও কাজ করেন তাহলে ন্যূনতম ৫ দিন সময় লাগবে এমন প্রতিকৃতি তৈরি করতে। এখন যেটা সম্ভব তা হচ্ছে- আলোচনার মাধ্যমে ভিন্নভাবে কিছু তৈরি করা।

এর আগে আনন্দ শোভাযাত্রার প্রস্তুতি দেখতে চারুকলায় গিয়েছিলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। সেখানে তিনি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘এই আয়োজনের সঙ্গে সম্পৃক্ত সবাইকে আমি স্যালুট জানাই। তারা গত ১ মাস ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে। “ফ্যাসিস্টের প্রতিকৃতি” নাশকতার মাধ্যমে পুড়িয়ে ফেলে শিল্পীদের স্পিরিট দমানোর চেষ্টা করলেও আমি এসে দেখছি শিল্পীদের স্পিরিট দ্বিগুণ হয়ে গেছে। আশা করবো দেশবাসী দারুণ একটি শোভাযাত্রা করবে। দেশবাসীকে আহ্বান জানাই শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়ার জন্য।’

প্রসঙ্গত, দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে পুড়ে গেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদ থেকে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে আনন্দ শোভাযাত্রার জন্য তৈরি করা ‘ফ্যাসিস্টের প্রতিকৃতি’। এ ঘটনায় অজ্ঞাতদের আসামি করে শাহবাগ থানায় মামলা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খানকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।