ঢাকা ০৯:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৬ এপ্রিল ২০২৫, ২৩ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইসরায়েলি কারাগারে ৫৯ ফিলিস্তিনির মৃত্যু

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৭:১১:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ১২ বার

ইসরায়েলি কারাগারে বন্দী অবস্থায় কমপক্ষে ৫৯ ফিলিস্তিনি মারা গেছেন। তাদের বেশিরভাগই অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের বাসিন্দা। গতকাল মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে বিপুল সংখ্যক এই ফিলিস্তিনি ইসরায়েলি কারাগারে প্রাণ হারিয়েছেন। এদের বেশিরভাগই অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের বাসিন্দা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি কারাগারে কমপক্ষে ৫৯ ফিলিস্তিনি বন্দী মারা গেছেন। বন্দীদের অধিকারবিষয়ক একটি গ্রুপ প্যালেস্টানিয়ান প্রিজন সোসাইটি এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে গাজা উপত্যকার ৩৮ জন বন্দী রয়েছেন। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাজার বন্দীদের মৃত্যুর তথ্য গোপন করার অভিযোগও করেছে সংস্থাটি।

এর আগে, সোমবার বন্দীবিষয়ক কমিশন জানিয়েছে, গাজার বন্দী মুসাব হানি হানিয়াহ ইসরায়েলি হেফাজতে মারা গেছেন। ৩৫ বছর বয়সী হানিয়াহকে দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিস থেকে ২০২৪ সালের ৩ মার্চ আটক করেছিল ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। তার পরিবারের মতে, আটক হওয়ার আগে হানিয়াহ সুস্থ ছিলেন।

ফিলিস্তিনি পরিসংখ্যান অনুসারে, ১৯৬৭ সালে পশ্চিম তীর এবং গাজা দখলের পর থেকে ইসরায়েলি কারাগারে কমপক্ষে ২৯৬ ফিলিস্তিনি বন্দী মারা গেছেন। অন্তত ১০ হাজার ফিলিস্তিনি ইসরায়েলের কারাগারে বন্দী রয়েছে। এই পরিসংখ্যানে গাজা উপত্যকা থেকে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি যাদের সংখ্যা আনুমানিক হাজার হাজার।

গাজায় গত ১৯ জানুয়ারি থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। তিন-পর্যায়ের এই যুদ্ধবিরতি চুক্তির মধ্যে বন্দী বিনিময় এবং স্থায়ী শান্তি, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহারের লক্ষ্যমাত্রাও রয়েছে। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব থাকা সত্ত্বেও ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরে অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছিল।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের গণহত্যামূলক যুদ্ধে নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা প্রায় ৪৮ হাজার ৩৫০ জনে পৌঁছেছে। এ ছাড়া আহত হয়েছেন আরও লক্ষাধিক মানুষ।

জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন। এ ছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ইসরায়েলি কারাগারে ৫৯ ফিলিস্তিনির মৃত্যু

আপডেট টাইম : ০৭:১১:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ইসরায়েলি কারাগারে বন্দী অবস্থায় কমপক্ষে ৫৯ ফিলিস্তিনি মারা গেছেন। তাদের বেশিরভাগই অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের বাসিন্দা। গতকাল মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে বিপুল সংখ্যক এই ফিলিস্তিনি ইসরায়েলি কারাগারে প্রাণ হারিয়েছেন। এদের বেশিরভাগই অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের বাসিন্দা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি কারাগারে কমপক্ষে ৫৯ ফিলিস্তিনি বন্দী মারা গেছেন। বন্দীদের অধিকারবিষয়ক একটি গ্রুপ প্যালেস্টানিয়ান প্রিজন সোসাইটি এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে গাজা উপত্যকার ৩৮ জন বন্দী রয়েছেন। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাজার বন্দীদের মৃত্যুর তথ্য গোপন করার অভিযোগও করেছে সংস্থাটি।

এর আগে, সোমবার বন্দীবিষয়ক কমিশন জানিয়েছে, গাজার বন্দী মুসাব হানি হানিয়াহ ইসরায়েলি হেফাজতে মারা গেছেন। ৩৫ বছর বয়সী হানিয়াহকে দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিস থেকে ২০২৪ সালের ৩ মার্চ আটক করেছিল ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। তার পরিবারের মতে, আটক হওয়ার আগে হানিয়াহ সুস্থ ছিলেন।

ফিলিস্তিনি পরিসংখ্যান অনুসারে, ১৯৬৭ সালে পশ্চিম তীর এবং গাজা দখলের পর থেকে ইসরায়েলি কারাগারে কমপক্ষে ২৯৬ ফিলিস্তিনি বন্দী মারা গেছেন। অন্তত ১০ হাজার ফিলিস্তিনি ইসরায়েলের কারাগারে বন্দী রয়েছে। এই পরিসংখ্যানে গাজা উপত্যকা থেকে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি যাদের সংখ্যা আনুমানিক হাজার হাজার।

গাজায় গত ১৯ জানুয়ারি থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। তিন-পর্যায়ের এই যুদ্ধবিরতি চুক্তির মধ্যে বন্দী বিনিময় এবং স্থায়ী শান্তি, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহারের লক্ষ্যমাত্রাও রয়েছে। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব থাকা সত্ত্বেও ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরে অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছিল।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের গণহত্যামূলক যুদ্ধে নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা প্রায় ৪৮ হাজার ৩৫০ জনে পৌঁছেছে। এ ছাড়া আহত হয়েছেন আরও লক্ষাধিক মানুষ।

জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন। এ ছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত হয়েছে।