ঢাকা ০৯:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৯ এপ্রিল ২০২৫, ২৬ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিতর্কিত ওয়াকফ বিল পাস, সংসদে বিলের কপি ছিঁড়ে যা বললেন ওয়াইসি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০২:৫৪:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ এপ্রিল ২০২৫
  • ১৪ বার

ভারতের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে একটি বিতর্কিত বিল পাস হয়েছে, যা মুসলিমদের দান করা সম্পত্তি ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনতে চায়। ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল, ২০২৪ নামে বিলটি বুধবার রাতে তীব্র বিতর্কের পরও পাস হয়। সেই বিলের আলোচনায় অংশ নিয়ে বিলের কপি ছিঁড়ে ফেললেন অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তিহাদুল মুসলিমীনের (এআইএমআইএম) সংসদ সদস্য আসাদউদ্দিন ওয়াইসি।

বিলের আওতায় দুজন অমুসলিম সদস্যকে ওয়াকফ বোর্ডে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে, যা বিরোধীরা কঠোরভাবে প্রতিবাদ করেছে। ভারতে মুসলমানদের দান করা ওয়াকফ সম্পত্তি— ৩৮ লাখ একর জমির ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ নিচ্ছে।

বিলটি পাস হওয়ার পর আসাদউদ্দিন ওয়াইসি গর্জে উঠেন। যেটি সামাজিকমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

আসাদউদ্দিন ওয়াইসি এই বিল অসাংবিধানিক বলে দাবি করেছেন। ওয়াকফ বিলের তীব্র বিরোধিতা করে একাধিক প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।

ওয়াইসি বলেন, সরকার যে আইন তৈরি করছে তা সংবিধানের ২৬ নম্বর অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন করা হয়েছে। বিজেপি দেশে সংঘাত তৈরি করতে চাইছে। আগামীকাল কালেক্টর এবং ডিএম বলবেন যে এটি সরকারি সম্পত্তি এবং সেখানে পোস্টার সাঁটাবেন। মসজিদগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে। তার দাবি, এই বিল পাস হলে, দেশের প্রাচীন মন্দিরগুলো সুরক্ষিত হবে, কিন্তু মসজিদগুলো নয়।

দেশের বৃহত্তম সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ করা হচ্ছে বলেও দাবি করেন ওয়াইসি। তার বক্তব্য, এই বিল মুসলিমদের দারিদ্র্য দূর করবে না।

হায়দরাবাদের এই সংসদ সদস্য আরও বলেন, এই বিল সব ধর্মের সমতার যে সাংবিধানিক বিধান রয়েছে, তার পরিপন্থি। এটি সংবিধানের ২৫ অনুচ্ছেদেরও লঙ্ঘন করে বলে দাবি করেছেন তিনি।

সরকার দাবি করছে, বিলটি ওয়াকফ সম্পত্তির ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা আনবে। তবে বিরোধী দল এবং মুসলিম গোষ্ঠীগুলি এটি ভারতের বৃহত্তম সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সাংবিধানিক অধিকার দুর্বল করার চেষ্টা বলে অভিযোগ করছে।

বিলটি লোকসভায় ২৮৮ ভোটে পাস হয়, ২৩২ জন এর বিপক্ষে ভোট দেন। এরপর এটি রাজ্যসভায় পাঠানো হয়েছে এবং সেখানে পাস হলে রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে।

বিলটি মুসলিমদের দান করা মসজিদ, মাদ্রাসা, আশ্রয় কেন্দ্র এবং ভূমির মতো সম্পত্তিগুলো নিয়ন্ত্রণ করবে। বিরোধীরা দাবি করছে, বিলটি সরকারকে এই সম্পত্তিগুলোর ওপর অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণ দেয় এবং মুসলিম ধর্মীয় কর্মকাণ্ডে হস্তক্ষেপের পথ খুলে দেয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

বিতর্কিত ওয়াকফ বিল পাস, সংসদে বিলের কপি ছিঁড়ে যা বললেন ওয়াইসি

আপডেট টাইম : ০২:৫৪:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ এপ্রিল ২০২৫

ভারতের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে একটি বিতর্কিত বিল পাস হয়েছে, যা মুসলিমদের দান করা সম্পত্তি ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনতে চায়। ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল, ২০২৪ নামে বিলটি বুধবার রাতে তীব্র বিতর্কের পরও পাস হয়। সেই বিলের আলোচনায় অংশ নিয়ে বিলের কপি ছিঁড়ে ফেললেন অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তিহাদুল মুসলিমীনের (এআইএমআইএম) সংসদ সদস্য আসাদউদ্দিন ওয়াইসি।

বিলের আওতায় দুজন অমুসলিম সদস্যকে ওয়াকফ বোর্ডে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে, যা বিরোধীরা কঠোরভাবে প্রতিবাদ করেছে। ভারতে মুসলমানদের দান করা ওয়াকফ সম্পত্তি— ৩৮ লাখ একর জমির ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ নিচ্ছে।

বিলটি পাস হওয়ার পর আসাদউদ্দিন ওয়াইসি গর্জে উঠেন। যেটি সামাজিকমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

আসাদউদ্দিন ওয়াইসি এই বিল অসাংবিধানিক বলে দাবি করেছেন। ওয়াকফ বিলের তীব্র বিরোধিতা করে একাধিক প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।

ওয়াইসি বলেন, সরকার যে আইন তৈরি করছে তা সংবিধানের ২৬ নম্বর অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন করা হয়েছে। বিজেপি দেশে সংঘাত তৈরি করতে চাইছে। আগামীকাল কালেক্টর এবং ডিএম বলবেন যে এটি সরকারি সম্পত্তি এবং সেখানে পোস্টার সাঁটাবেন। মসজিদগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে। তার দাবি, এই বিল পাস হলে, দেশের প্রাচীন মন্দিরগুলো সুরক্ষিত হবে, কিন্তু মসজিদগুলো নয়।

দেশের বৃহত্তম সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ করা হচ্ছে বলেও দাবি করেন ওয়াইসি। তার বক্তব্য, এই বিল মুসলিমদের দারিদ্র্য দূর করবে না।

হায়দরাবাদের এই সংসদ সদস্য আরও বলেন, এই বিল সব ধর্মের সমতার যে সাংবিধানিক বিধান রয়েছে, তার পরিপন্থি। এটি সংবিধানের ২৫ অনুচ্ছেদেরও লঙ্ঘন করে বলে দাবি করেছেন তিনি।

সরকার দাবি করছে, বিলটি ওয়াকফ সম্পত্তির ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা আনবে। তবে বিরোধী দল এবং মুসলিম গোষ্ঠীগুলি এটি ভারতের বৃহত্তম সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সাংবিধানিক অধিকার দুর্বল করার চেষ্টা বলে অভিযোগ করছে।

বিলটি লোকসভায় ২৮৮ ভোটে পাস হয়, ২৩২ জন এর বিপক্ষে ভোট দেন। এরপর এটি রাজ্যসভায় পাঠানো হয়েছে এবং সেখানে পাস হলে রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে।

বিলটি মুসলিমদের দান করা মসজিদ, মাদ্রাসা, আশ্রয় কেন্দ্র এবং ভূমির মতো সম্পত্তিগুলো নিয়ন্ত্রণ করবে। বিরোধীরা দাবি করছে, বিলটি সরকারকে এই সম্পত্তিগুলোর ওপর অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণ দেয় এবং মুসলিম ধর্মীয় কর্মকাণ্ডে হস্তক্ষেপের পথ খুলে দেয়।